নখ কামড়ানো ম্যাচে রাজশাহীকে জেতালেন মুস্তাফিজ

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ম্যাচ হাতের নাগালে ছিল রংপুর রাইডার্সের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৯ রান। ক্রিজে ছিলেন রাইলি রুশো, নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে নামা ফরহাদ রেজা। রাজশাহীর অধিনায়ক মিরাজ বল তুলে দিলেন তাঁর সবচেয়ে ভরসাবান বোলার মুস্তাফিজুর রহমানকে। রংপুরের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে আনলেন তিনি, শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে মাত্র দিলেন মাত্র ৩ রান। ৫ রানের উত্তেজনাপূর্ণ জয় পেয়ে আসরে দ্বিতীয় বার জয়ের মুখ দেখল রাজশাহী কিংস।
শেষ ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফরহাদ রেজাকে স্ট্রাইক দেন রুশো। পর পর তিন বলে মুস্তাফিজের কাটারে পরাস্ত হন তিনি। শেষ ২ বলে তখন রংপুরের জিততে প্রয়োজন ৮ রান। পঞ্চম বল আবারও মিস করলেও রান নিতে সক্ষম হন রংপুরের দুই ব্যাটসম্যান। শেষ বলে ছক্কা হাঁকালে ম্যাচে টাই করা সম্ভব, এই সমীকরণ নিয়েই ব্যাট চালালেন রুশো, কিন্তু মুস্তাফিজের স্লো ইয়র্কারে মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হলেন তিনি। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় মিরাজের দল হাসল শেষ হাসি।
এদিন অবশ্য জয়ের জন্য লক্ষ্যটা বড় ছিলনা রংপুরের সামনে। মাত্র ১৩৬ রানের লক্ষ্যে গেইলের সঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মত ওপেনিং করতে নেমেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অধিনায়কের ওপেনিং করার পরিকল্পনা অবশ্য কাজে আসেনি।কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে ০ রানে উইকেটের পেছনে সাজঘরে ফেরেন মাশরাফি।
এরপর কামরুল ইসলাম রাব্বির দ্বিতীয় ওভারের প্রথম তিন বলে এক ছক্কা এবং দুই চার হাঁকিয়ে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গেইল। চতুর্থ বলে কোন রান না নিলেও পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ওভারে ২০ রান তুলে নিয়েছিলেন গেইল। কিন্তু ওভারের শেষ বলে রাব্বির ছোড়া স্লো বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। ১৪ বলে ২৩ রান করে বিদায় নেন এই ক্যারিবিয়ান।
দুই উইকেট হারিয়ে বসলেও দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন মিথুন এবং রুশো। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৪০ রান যোগ করলেও মোহাম্মদ হাফিজের বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে বসেন মিথুন।

৩১ বলে ৩০ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। খানিক পর রোপারাকেও বোল্ড করেন তিনি। ৪ উইকেট হারানো রংপুরকে আরও বড় বিপদে ফেলেন হাওয়েল। ইনিংসের ১৫তম ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে বেচে গেলেও রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি।
৫ উইকেট হারালেও অভিজ্ঞ রাইলি রুশো উইকেটে থিতু হয়ে খেলতে থাকেন। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেন নাহিদুল ইসলাম। মোহাম্মদ হাফিজের শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে রুশোকে চাপমুক্ত করেন নাহিদুল। শেষ ১২ বলে ১৮ রান প্রয়োজন ছিল মাশরাফিদের।
তখনই বোলিংয়ে এসে ম্যাচের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেন ইসুরু উদানা। তাঁর ওভারে রুশো একটি বাউন্ডারি হাঁকালেও শেষ বলে নাহিদুলকে বিদায় করেন তিনি। শেষ ওভারে মুস্তাফিজের বিপক্ষে ৯ রান প্রয়োজন হলে মাত্র ৩ রান নিতে সক্ষম হন রুশো এবং রেজা। রাজশাহীর পক্ষে ৪ ওভার বোলিং করে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ম্যাচ সেরা জাকির হাসানের ৪২ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান তুলতে সক্ষম হয় রাজশাহী। জাকির ছাড়া মোহাম্মদ হাফিজ দলের পক্ষে করেন ২৬ রান। রংপুরের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মাশরাফি এবং ফরহাদ রেজা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
রাজশাহী কিংসঃ
১৩৫/৮ (২০ ওভার)
(জাকির ৪২*), (রেজা ২/১৭)
রংপুর রাইডার্সঃ
১২৯/৬ (২০ ওভার)
(রুশো ৪৪*) (হাফিজ ২/২২)