শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জিতলো সিলেট

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে জয় পেতে শেষ ওভারে মুশফিকুর রহিমের চিটাগাং ভাইকিংসের প্রয়োজন ছিলো ২৪ রান। আল-আমিন হোসেনের করা সেই ওভারের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন ভাইকিংসদের প্রোটিয়া রিক্রুট রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক।
ফলে শেষ দুই বলে প্রয়োজন ছিলো ৯ রান। কিন্তু আল-আমিনের পঞ্চম বল থেকে ২ এবং শেষ বল থেকে ১ রান নিতে সক্ষম হন দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার। ফলে ম্যাচটি ৫ রানে জিতে নিয়ে মাঠ ছাড়ে ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্স।
মোহাম্মদ ইরফানের করা ১৯তম ওভারের প্রথম এবং চতুর্থ বলে দুটি ছয় হাঁকিয়ে আগেই অবশ্য খেলা জমিয়ে তুলেছিলেন রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক। সুতরাং ম্যাচটি শেষ ওভারের সমীকরণে নিয়ে যাওয়ার পেছনে সকল কৃতিত্ব তাঁকেই দিতে হবে নিঃসন্দেহে। ২৪ বলে ৪টি ছয় এবং ১টি চারের মাধ্যমে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ভাইকিংসদের জয়ের পেছনে মূল বাঁধা ছিলেন পেস তারকা তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে নিজের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বলে টানা দুটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তখনই পরাজয়ের ক্ষণ গুনতে থাকে ভাইকিংসরা। পরবর্তীতে খেলা জমিয়ে তোলেন ফ্রাইলিঙ্ক।
সবমিলিয়ে ৪ ওভার বোলিং করে ২৮ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন। এছাড়াও ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন অলোক কাপালি। এদিন ভাইকিংসদের হয়ে ফ্রাইলিঙ্ক ছাড়াও আলো ছড়িয়েছেন আরেক প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ৩টি ছয় এবং ৪টি চারের সাহায্যে ২২ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।
জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজাও ছিলেন দারুণ ফর্মে। তাসকিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৮ বলে ২টি ছয় এবং ২টি চারের মাধ্যমে ৩৭ রান করেন তিনি। এছাড়াও মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাট থেকে এসেছে ২২ রান।
এর আগে শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে চিটাগাং ভাইকিংসের সামনে ১৬৯ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিলো ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্স। এদিন ব্যাট হাতে ৩২ বলে ৫২ রানের বিধ্বংসী একটি ইনিংস খেলেন উইন্ডিজ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান।

দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক ওয়ার্নারও। ৪৭ বলে ৫৯ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। মাত্র ৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর আফিফ হোসেনের সাথে ৭১ রানের জুটি গড়ে বিপদমুক্ত করার মূল কারিগর ছিলেন এই ওয়ার্নার।
খালেদ আহমেদের প্রথম শিকার হওয়া আফিফ ২৮ বলে ৩টি ছয় এবং ৫টি চারের সাহায্যে ৪৫ রান করলেও ইনিংসের ১৯তম ওভার পর্যন্ত পুরানের সাথে ক্রিজে ছিলেন অজি তারকা ব্যাটসম্যান। জুটি গড়েছিলেন ৭০ রানের।
রবার্ট ফ্রাইলিঙ্কের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে ২টি চার এবং ১টি ছয় হাঁকিয়ে ৫৯ রান করেন তিনি। তবে অজি হার্ডহিটার ফিরলেও রানের চাকা সচল রেখেছিলেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান পুরান।
ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে অর্ধশতক তুলে নেয়ার পাশাপাশি দলকে বড় পুঁজিও এনে দিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান। তাঁর সাথে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন অলোক কাপালি।
চিটাগাং ভাইকিংসদের বোলারদের মধ্যে সবথেকে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন প্রোটিয়া পেসার রবার্ট ফাইলিঙ্ক। ৪ ওভার বোলিং করে ২৬ রান খরচায় ৩টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়াও ১টি করে উইকেট নিয়েছেন নাঈম হাসান এবং খালেদ আহমেদ।
সিলেট সিক্সার্স একাদশঃ
লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), নাসির হোসেন, আফিফ হোসেন, সাব্বির রহমান, নিকোলাস পুরান, অলোক কাপালি, তাসকিন আহমেদ, সন্দীপ লামিচানে, আল-আমিন হোসেন, মোহাম্মদ ইরফান।
চিটাগাং ভাইকিংস একাদশঃ
মোহাম্মদ শেহজাদ, ক্যামেরন ডেলপোর্ট, মোহাম্মদ আশরাফুল, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), আবু জায়েদ রাহি, রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাইম হাসান, সিকান্দার রাজা, সানজামুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
সিলেট সিক্সার্সঃ ১৬৮/৫ (২০ ওভার) (ওয়ার্নার-৫২, পুরান- ৫২*) (ফ্রাইলিঙ্ক- ৩/২৬ নাঈম- ১/২০)
চিটাগাং ভাইকিংসঃ ১৬৩/৭ (২০ ওভার) (ফ্রাইলিঙ্ক-৪৪*, ডেলপোর্ট- ৩৮) (তাসকিন- ৪/২৮, কাপালি-২/৬)
টসঃ সিলেট (ব্যাটিং)