promotional_ad

শেষের দৃষ্টিকটু ব্যাটিংয়ে বিপদের শঙ্কা

ছবিঃ গেটি ইমেজ
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ


বাংলাদেশ প্রথম ইন্নিংসঃ ৩২৪ অল আউট; ওভার-৯২.৪ : মমিনুল ১২০, (গ্যাব্রিয়েল ৭০/৪)


উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ২৪৬ অল আউট, ৬৪ ওভার : ডরউউচ ৬৩*, হেটমিয়ার ৬৩ (নাঈম ৬১/৫) 


বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ৫৫/৫ ১৭ ওভার: মুশফিক ১১*, মিরাজ ৯*, ওয়ারিকেন (২/২২), চেজ (২/১৬) 


টসঃ বাংলাদেশ


চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনটি ছিল স্পিনারদের। দুই দলের কোন ব্যাটসম্যানই স্পিনারদের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেন নি। দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৫ ব্যাটসম্যানকে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫৫ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে টাইগাররা। ১৩৩ রানের লিড নিয়ে দিন শেষ করেছে সাকিব আল হাসানের দল।  


চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে ৩২৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসানের ঘূর্ণিতে ২৪৬ রানে গুটিয়ে যায় উইন্ডিজরা। ৭৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।


বাংলাদেশের পক্ষে নাঈম হাসান ৬১ রান দিয়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। এছাড়া ৪৩ রান দিয়ে সাকিব আল হাসান নেন ৩ উইকেট। উইন্ডিজদের পক্ষে শেন ডরউইচ ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন। পাশাপাশি শিমরন হেটমিয়ারের ব্যাট থেকে আসে ৬৩ রান


নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ১১ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। উইন্ডিজদের পক্ষে ওয়ারিকেন এবং চেজ নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। 


নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।  ব্যাট করতে নেমে এক প্রান্তে সৌম্য সরকার হাত খুলে খেলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোমেল ওয়ারিকেনের বলে বোল্ড আউট হয়ে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস।


তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান। এরপরের ওভারেই সৌম্য সরকারকে স্লিপে ক্যাচ আউট করেন রস্টন চেজ। সৌম্য ফেরেন ১১ রানে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাকালেও দ্বিতীয় ইনিংসে একই ধারা ধরে রাখতে পারেন নি মমিনুল। 


রস্টন চেজের বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে লেগ সাইডে উড়িয়ে মারতে গিয়ে গ্যাব্রিয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন সাকিব। ১ রানে ফেরেন।


promotional_ad

দিনের শেষ বেলায় এসে মোহাম্মাদ মিথুনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু। মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদি মিরাজ দেখে শুনে খেলে এরপর দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন। ১৩৩ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ।  


অন্যদিকে দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশকে অল আউট করার পর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখে শুনেই করেছিলেন দুই উইন্ডিজ ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েট এবং কিরন পাওয়েল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে আউট হলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান পাওয়েল। 


কিন্তু জীবন পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেন নি এই ব্যাটসম্যান। ব্যক্তিগত ১৪ রানে তাইজুল ইসলামকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন তিনি। ইনজুরির কারনে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন সাকিব আল হাসান।


কিন্তু বল হাতে মাঠে ফিরে প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান এই অলরাউন্ডার। ১ রান করা শাই হোপকে দুর্দান্ত এক ডিলেভারিতে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকেও বিদায় করেন তিনি। 


ব্যক্তিগত ১৩ রানে সৌম্য সরকারের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন এই ওপেনার। এরপর আর কোন উইকেট না হারিয়ে লাঞ্চে যায় উইন্ডিজরা। লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমে হাল ধরে খেলছিলেন রস্টন চেজ এবং সুনিল আম্ব্রিস। 


কিন্তু তাদের দুজনের ৪৬ রানের জুটি ভাঙ্গেন অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসান। ইমরুল কায়েসের হাতে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ৩১ রানে ফেরেন চেজ। এর খানিক পর নাঈমকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন আম্ব্রিস।


৫ উইকেট হারিয়ে বসলেও এর প্রভাব নিজের উপর পরতে দেন নি হেটমিয়ার। বাংলাদেশী বোলারদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ৪৪ বলে ফিফটি তুলে নিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। অবশ্য হেটমিয়ার ফিফটি হাঁকানোর আগে ৫ রান জরিমানা দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।


মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওভারে উইকেট রক্ষক মুশফিক বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে বলটি যেয়ে উইকেটের পেছনে রাখা হেলমেটে লাগলে ৫ রান জরিমানা গুনতে হয় বাংলাদেশ দলকে। কিন্তু ফিফটি হাঁকানোর পর ইনিংস বেশীক্ষণ লম্বা করতে পারেন নি হেটমিয়ার। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৬৩ রানে বিদায় নেন তিনি। 


চা বিরতির পর বল করতে নেমেই আঘাত হানেন নাঈম হাসান। দেবেন্দ্র বিশুকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন এই স্পিনার। একই ওভারের শেষ বলে কিমার রোচকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার।


৪ উইকেট নেয়ার পর পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ারিকেনকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। সেই সঙ্গে অষ্টম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট নেয়ার গৌরব অর্জন করেন নাঈম।


শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে সাজঘরে ফেরান সাকিব আল হাসান। সফরকারীদের ইনিংস থেমে যায় ২৪৬ রানে। ৭৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।  


প্রথম দিনঃ


এর আগে প্রথম দিন উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে পার করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম দুই সেশনে ব্যাট হাতে দাপট দেখালেও শেষ সেশনে উইন্ডিজ পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের এক স্পেলে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাংলাদেশের মিডেল অর্ডার। শেষ বেলায় দলের হয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম হাসান। 


দুজনের ৫৬ রানের জুটিতে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩১৫ রান। দলের পক্ষে এদিন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন মমিনুল হক। যদিও ব্যক্তিগত ১২০ রানে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। সফরকারীদের পক্ষে শ্যানন গ্যাব্রিয়েল একাই নিয়েছেন ৪টি উইকেট।


এদিকে দিনের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ব্যক্তিগত ০ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সৌম্য সরকার।


সৌম্য বিদায় নেয়ার পর ইমরুলের সঙ্গে হাল ধরার চেষ্টা করেছেন মমিনুল। যদিও দুইবার জীবন পেয়েছেন ইমরুল। কিন্তু তারপরও সেটাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন এই ওপেনার। দুজনের ১০৪ রানের জুটি ভেঙ্গেছেন জোমেল ওয়ারিকেন। ইমরুল বিদায় নেন ৪৪ রান করে।


লাঞ্চের পর মোহাম্মাদ মিথুন ব্যক্তিগত ২০ রানে অহেতুক শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিলেও সাকিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে মমিনুল তুলে নেন ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট শতক।


ইনিংসের ৫০ তম ওভারে ক্যারিবিয়ান স্পিনার রস্টন চেজের করা তৃতীয় বলটি বাউন্ডারি পার করে শতক হাঁকান ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। আর এরই সাথে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টানা তিন টেস্টে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়লেন তিনি। এরপর সাকিব এবং মমিনুল মিলে হাল ধরে খেলে চা বিরতিতে যান। 


চা বিরতির পর বাত করতে নেমেই শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে উইকেট বিলিয়ে দেন মমিনুল হক। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১২০ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন মুশফিক। 


এর দুই ওভার পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দুর্দান্ত ডিলেভারিতে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান এই পেসার।একই কান্ড ঘটান অধিনায়ক সাকিবও। গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে তাঁকেও ফিরতে হয়ে হয় সাজঘরে।


চা বিরতির পর ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। মিরাজ ২২ রান করে বিদায় নিলে ৩০০'র নীচে অলআউট হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয় বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু ৮ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন দুই টেইলেন্ডার ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম ইসলাম। দুজনের ৫৬ রানের জুটিতে প্রথম দিন পার করেছে বাংলাদেশ। 


বাংলাদেশ একাদশঃ সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুর ইসলাম, নাঈম হাসান।


উইন্ডিজ একাদশঃ ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), সুনীল আমব্রিস, দেবেন্দ্র বিশু, রস্টন চেজ, শেন ডওরিচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল,, শিমরন হেটমায়ার, শাই হোপ, কাইরন পাওয়েল, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকেন।   



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball