মুস্তাফিজের আঘাতে হারের পথে শ্রীলঙ্কা

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
শ্রীলঙ্কাঃ ৯৬/৮, ২৫.২ ওভার
বাংলাদেশঃ ২৬১/১০ (৪৯.৩ ওভার)
মুশফিকুর রহীম ও তামিম ইকবালের লড়াইয়ে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ৪৯.৩ ওভারে ২৬১ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ দল। জবাবে ব্যাটিংয়ে নামেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও কুশাল মেন্ডিস। এই দুজনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় লঙ্কানরা।
এরপর কুশাল মেন্ডিসকে রান তোলার আগেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন মুস্তাফিজ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ২৭ রান করা উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে আউট করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। রান তোলার আগেই ডি সিলভাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়েছেন মাশরাফি।
চতুর্থ উইকেটে ম্যাথিউস ও কুশাল পেরেরা হাল ধরার চেষ্টা করলেও সেই জুটিতে চিড় ধরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি পেরেরাকে ব্যক্তিগত ১১ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছেন। মিরাজের করা ১৫ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শানাকার ক্যাচ ছেড়েছেন অপু।
এর পরের ওভারেই ৭ রান করা শানাকা রান আউট হয়ে ফিরেছেন। রুবেল নিজের প্রথম ওভারে এসেই ১৬ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন। থিসারা পেরেরাও খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি।

এই অলরাউন্ডার মাত্র ৬ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। অষ্টম উইকেটে দেখে শুনে খেলছিলেন দিলরুয়ান পেরেরা ও সুরাঙ্গা লাকমল। এই জুটি ভেঙেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি ২০ রান করা লাকমলকে বোল্ড করেছেন এই পেসার।
এর আগে মুশফিকুর রহী্মের ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংসে লড়াকু পুজি পায় বাংলাদেশ। ইনজুরি নিয়েও ব্যাটিংয়ে নেমে দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম।
মুশফিক ১১ টি চার ও ৪ টি বিশাল ছক্কায় এই ইনিংস সাজিয়েছেন। বাংলাদেশের হয়ে মূলত একাই লড়াই করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ম্যাচের শুরুতে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে টস ভাগ্যে জয়ী হয়ে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
অধিয়ানকের সিদ্ধান্তে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভাল সূচনা এনে দিতে পারেন নি ওপেনার লিটন দাস। ইনিংসের পঞ্চম বলে কুশল মেন্ডিসের হাতে লাসিথ মালিঙ্গার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
০ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। এরপরের বলেই আবারও আঘাত হানেন মালিঙ্গা। দুর্দান্ত ইনসুইং ইয়র্কারে সাকিব আল হাসানের স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেন এই ডানহাতি পেসার। সাকিবও বিদায় নেন ০ রানে।
দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পরা বাংলাদেশের ধাক্কা সামাল দেয়ার দেয়ার আগেই সুরাঙ্গা লাকমালের বাউন্সারে পুল শট খেলতে গিয়ে হাতে আঘাত পান ওপেনার তামিম ইকবাল। পরবর্তীতে মাঠ ছেড়ে যান এই ওপেনার।
এরপর মুশফিককে সঙ্গ দিতে নামেন মিথুন আলি। দুজন মিলে দলের ইনিংস মেরামতের কাজটা ভালোই করেন। দুই উইকেট রক্ষক মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে গড়েন ১৩১ রানের। দুজনি তুলে নেন ফিফটি।
কিন্তু ২৫ ওভারের পর আবারও বোলিংয়ে আসা লাসিথ মালিঙ্গার বলে উইকেট রক্ষক কুশল পেরেরার হাতে ৬৪ রানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিথুন। মিথুনের বিদায়ের পর আমিলা আপন্সোকে উইকেট বিলিয়ে দেন রিয়াদ।
রিয়াদের পর মোসাদ্দেককে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেন মালিঙ্গা। ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে উদ্ধার করতে পারেননি মাশরাফি এবং মিরাজও।
তবে বাকি ব্যাটসম্যানরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও উইকেটে থিতু হয়ে খেলছেন মুশফিকুর রহিম। লড়াকু ইনিংস খেলে এশিয়া কাপে নিজের দ্বিতীয় এবং ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
এরপর মুস্তাফিজ রান আউট হয়ে ফিরলে আবারো ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম। তামিমকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে থাকেন মুশফিক। এই দুইজনের জুটিতেই লড়াইয়ের পুজি পায় বাংলাদেশ। মুশফিক শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে থিসারা পেরেরার শিকার হয়েছেন।
বাংলাদেশঃ তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিথুন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কাঃ উপুল থারাঙ্গা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, কুশাল পেরেরা, কুশাল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস (অধিনায়ক), থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, দিলরুয়ান পেরেরা, সুরাঙ্গা লাকমল, লাসিথ মালিঙ্গা, আমিলা আপন্সো।