এক ফোন কলেই সাইড বেঞ্চে সাব্বির!

ছবি: সাব্বির রহমান

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদেরকে আদর্শ হিসেবে মানেন। তাদের দেখে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নও নিজেদের মধ্যে লালন করেন তরুণরা।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলো জাতীয় দলে খেলা সেই ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেকেই আজ পথভ্রষ্ট। তেমনই একজন ক্রিকেটারের নাম সাব্বির রহমান রুম্মান। মাঠে তো বটেই, মাঠের বাইরেও নানা বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিয়ে মিডিয়ার শিরোনামে উঠে আসতে যেন তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভক্তকে গালি দিয়ে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন তিনি। বর্তমানে মাঠের পারফর্মেন্সও কথা বলছে না তাঁর পক্ষে। এখন পর্যন্ত ৫৪টি ওয়ানডেতে একটিও সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেননি সাব্বির।
এই ফরম্যাটে তাঁর সর্বশেষ হাফসেঞ্চুরিটি ছিলো গত বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর থেকে চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের তিনটি ওয়ানডে সহ মোট ১৪ টি ম্যাচ খেলেছেন সাব্বির। কিন্তু একটিতেও দেখা পাননি ফিফটির।

ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে মাত্র ২৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। এমনকি টি টুয়েন্টিতেও একই তাথৈবচ অবস্থা তাঁর। চলতি বছরের মার্চে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ব্যাটে হাতে ৫০ বলে ৭৭ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন সাব্বির। এরপর আফগানিস্তান সিরিজে এসে আবারও ফ্লপ তিনি।
আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি টুয়েন্টি সিরিজে মোটে ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন সাব্বির। তবে একটি সুত্র থেকে জানা গেছে টি টুয়েন্টি ফরম্যাটে সাব্বিরের স্ট্রাইক রেট (১২২.৫৯) এবং কার্যকারিতার কথা চিন্তা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি টুয়েন্টিতে তাকে একাদশে দেখতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং কোচ স্টিভ রোডস।
কিন্তু তাদের সেই ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। সূত্র মতে এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিলো স্বয়ং বিসিবিই। সাব্বিরকে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্তটি নাকি দেয়া হয়েছিলো ঢাকা থেকেই।
মূলত টেলিফোনে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন বোর্ডেরই কোন এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। অবশ্য এই বিষয়টি বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুব একটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও স্কোয়াড নির্বাচন থেকে শুরু করে একাদশ গঠনে হস্তক্ষেপ করার নজীর আছে বোর্ড কর্মকর্তাদের।
আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বলতে হবে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথা। দল নির্বাচনের মূল দায়িত্ব নান্নু, বাশারদের থাকলেও সময়ে সময়ে পাপনের হস্তক্ষেপ দেখা গেছে বারংবার।
বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোনও ক্রিকেট খেলুড়ে দেশেই বোধকরি এমন উদারহণ দেখা যায় না। এখন প্রশ্ন হলো এই বিষয়টি আদতে ক্রিকেটের জন্য কতটা যুক্তিসঙ্গত? নির্বাচকদের দায়িত্ব দেয়ার পর বোর্ড প্রধানের এভাবে হস্তক্ষেপ আদতেই কি ন্যায়সঙ্গত? দেশটি বাংলাদেশ বলেই হয়তো এসকল প্রশ্নের জবাব কখনো পাওয়া সম্ভব হবে না।
সূত্র- কালের কণ্ঠ