সমস্যা ছিলো মানসিকতায়- ফাহিম

ছবি: রুমানা বাহিনী

গত বেশ কিছুদিন থেকেই দারুণ ক্রিকেট খেলে আসছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এশিয়া কাপে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পর যেন আরো বেশি ক্ষুরধার হয়েছে তাদের পারফর্মেন্স। সম্প্রতি টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দুর্দান্ত খেলে মূল পর্বেও পা রেখেছে রুমানা বাহিনী।
টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব উৎরানোর পর এখন রুমানাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা। আর এই টুর্নামেন্টে টাইগ্রেসদের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে গত কয়েক মাসে তাদের প্রাপ্তিগুলো। এমনটাই মনে করছেন রুমানা, সালমাদের ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন ফাহিম। দৈনিক মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফাহিম বলেছেন,
‘প্রাপ্তিগুলো সব সময় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। এখন আমাদের সামনে বিশ্বকাপ। হাতে ৩ মাস সময় আছে। তবে আমরা বসে থাকছ??? না। আগস্টের শুরুতেই লম্বা সময়ের জন্য ক্যাম্প শুরু করবো। এরপর একটি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়াও আমাদের শতভাগ চেষ্টা থাকবে যেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে অন্তত ১০ দিন আগে যেতে পারি। সেখানেও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল উদ্দেশ্য কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয়া।’
হুট করে নারী ক্রিকেট দলের এরূপ সাফল্য আসলেই বেশ অবাক করার মতোই। আর তাদের সাফল্যের পেছনে সবথেকে বেশি অবদান রয়েছে ফাহিমের। মূলত তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর পরই পাল্টে গেছে নারী দলের খোলনচে। দায়িত্ব নেয়ার পর দলের ফিল্ডিং এবং ব্যাটিংয়েই বেশি দুর্বলতা চোখে পড়েছিলো ফাহিমের। তবে পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছিলেন মূল সমস্যাটি ক্রিকেটারদের মানসিকতায়। এই প্রসঙ্গে ফাহিমের ভাষ্য,

‘আসলে আমি যখন দায়িত্ব নিলাম তখন দুটি দুর্বলতা আমার চোখে পড়ে। একটি হল ফিল্ডিংয়ে অন্যটি ব্যাটিং। কিন্তু এ দলটিই কিন্তু এখন সেখানে উন্নতি করেছে, তার মনে সমস্যা ছিল আরেকটি সেটি হলো মানসিকতায়। ওরা নিজেদের একটি ছোট দল বা খর্ব শক্তির দল মনে করতো। ওরা যে চাইলে পারে সেই আত্মবিশ্বাসটিই ছিল না। ওদেরও যে ছয় মারার ক্ষমতা আছে সেটিও ওরা জানতো না। চিন্তা করতো ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে ১০০ বেশি করতে পারবো না। আমরা এখানে পরিবর্তন আনি প্রথম।'
মানসিকতায় পরিবর্তনের পর ব্যাটিং নিয়েও কাজ করেছেন ফাহিম। আর এই কাজে যথেষ্ট সফল হয়েছেন তিনি। তাঁর তত্ত্বাবধানেই রুমানারা ব্যাটিংয়ে অকুতোভয় হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ফাহিমের ভাষায়,
'মানসিকতার পর ব্যাটিং অর্ডারটাও পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল। সেটাও করা হয়েছে। এছাড়াও ওদের সাহসটা বেড়েছে ছেলেদের সঙ্গে খেলে। আমরা ছেলেদের সঙ্গে খেলে হার জিতের দিকে তাকিয়ে থাকিনি চেয়েছি সাহস বাড়াতে। ওরা দারুণ করেছে। সিলেটে তো পেসের বিপক্ষে অনেক ভালো করেছে।'
টাইগ্রেসদের এই পরিবর্তনের পেছনে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টাও অনেক সাহায্য করেছে বলে উল্লেখ করেছেন ম্যানেজার ফাহিম। শুধু তাই নয়, দলটির সকলের মধ্যে বোঝাপড়াও দারুণ বলে জানিয়েছেন তিনি,
‘দেখেন দলটির সবার মাঝে চেষ্টা দারুণ। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো একজন মন্দ করলে কেউ তাকে ছোট করে দেখে না। বরং পরস্পরকে সাহায্য করে দারুণ ভাবে। আশা করি বিশ্বকাপে ওদের উন্নতির ছাপ সবার দেখা মিলবে।’