promotional_ad

হোল্ডারের কাছেই হারলো বাংলাদেশ

promotional_ad

পরাজয়ের ভূত যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশের। প্রতিটি সিরিজের আগে অসীম প্রত্যাশার বাণী শোনালেও শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে পরাজয়ের গ্লানি ছাড়া কিছুই জুটছে না টাইগারদের। সর্বশেষ তারই উদাহরণ দেখা গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে।


অ্যান্টিগায় অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার পর দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন ওপেনার তামিম ইকবাল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাদের কণ্ঠে দৃঢ় প্রত্যয় শুনে অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন আবারো।


ভেবেছিলেন জ্যামাইকা টেস্টে ঠিকই নিজেদের প্রমাণ করবে টাইগাররা। কিন্তু সে আশা গুঁড়ে বালি একেবারেই। স্বাগতিকদের বিপক্ষে এই টেস্টেও মুখ থুবড়ে পড়েছে সাকিব বাহিনী। মাত্র ৩ দিনেই জ্যামাইকা টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ দল। হেরেছে ১৬৬ রানের বিশাল ব্যবধানে।


আর এর ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়ে শেষ করতে হয়েছে তাদের। এই টেস্টের শুরুতে যখন টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব, তখন হয়তো কিছুটা আশার আলো দেখা গিয়েছিলো।


এরপর প্রথম ইনিংসে উইন্ডিজদের ৩৫৪ রানে বেঁধে ফেলার পর সেই আশা আরো একটু উজ্জ্বল হয়। লিড না নিতে পারুক, অন্তত উইন্ডিজদের সংগ্রহ করা রানের কাছাকাছি যেতে পারবে টাইগাররা হয়তো সেসময় এমনটাই স্বপ্ন দেখেছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু সেই স্বপ্ন দেখা পর্যন্তই, বাস্তবে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। বলা যায়, যেটি হওয়ার কথা ছিলো সেটিই হয়েছে।


উইন্ডিজদের সাড়ে তিনশত রানের জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ১৪৯ রানেই গুঁটিয়ে গিয়েছে সাকিব আল হাসানের দলটি। আর টাইগারদের এই দুর্দশার পেছনে সবথেকে বেশি যার হাত ছিলো তিনি হলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার। মাত্র ৪৪ রানে একাই ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি প্রথম ইনিংসে।


একের পর এক রিভার্স সুইংয়ের সামনে রীতিমত অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানেরা। শুধু হোল্ডারই নন, বাকি দুই পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল এবং কিমো পলও কম যাননি। উভয়ই ২ উইকেট শিকার করে অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গই দিয়েছিলেন।



promotional_ad

প্রথম ইনিংসে ওপেনার তামিম ইকবালের ব্যাট থেকেই এসেছে সর্বোচ্চ ৪৭ রান। আর অধিনায়ক সাকিবের ৩২ এবং মুশফিকুর রহিমের ২৪ রানের ইনিংসটি ছাড়া আর কেউই বলার মতো রান করতে পারেননি। মাত্র ১৪৯ রানে অলআউট হওয়ায় বাংলাদেশের থেকে ২০৫ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিলো ক্যারিবিয়ানরা।


অবশ্য এই ইনিংসে উইন্ডিজদের বেশিদূর এগোতে দেননি টাইগার বোলাররা। বিশেষ করে টাইগার অধিনায়ক সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। মাত্র ৩৩ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করেন তিনি। পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে সবথেকে সেরা বোলিং ফিগার উপহার দিয়েছেন সাকিব।


অধিনায়ক ছাড়াও ২টি উইকেট নিয়েছিলেন আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। স্পিনারদের দারুণ বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২৯ রানে অলআউট হয়ে যায় হোল্ডার বাহিনী। তবে এরপরেও বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ৩৩৫ রানের।


এই লক্ষ্য তাড়া করে জয় যে সম্ভব ছিলো না টাইগারদের পক্ষে তা হলফ করেই বলা যায়। কেননা প্রথম ইনিংসেই হোল্ডার, গ্যাব্রিয়েল, কামিন্সদের সামলাতে পারেনি ব্যাটসম্যানেরা। সেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে আর কিই বা করবে তারা! তবে এরপরেও চেষ্টা করতে পারতো সাকিবরা। কারণ হাতে ছিলো আরো দুই দিন। কিন্তু কিসের কি!


ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব খেলাটি শেষ করে ফিরে আসতে পারাটাই যেন তাদের মূল লক্ষ্য। তানাহলে এভাবে একের পর উইকেট ছুঁড়ে দেয়ার মিছিলে নাম লিখিয়ে মাত্র ১৬৮ রানে অলআউট হতো না বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে যদিও কৃতিত্ব দিতে হবে উইন্ডিজ পেসারদের।


বিশেষ করে এবারও পার্থক্য গড়ে দেয়ার নায়ক হিসেবে নাম নিতে হবে অধিনায়ক হোল্ডারের। কারণ দ্বিতীয় ইনিংসে আরো বিধ্বংসী রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। ৫৯ রানে একাই ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ধ্বস নামিয়েছেন টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপে। আর ২ টি উইকেট পেয়েছেন রস্টন চেজ।


কিন্তু এরপরেও খেলা যারা দেখেছেন তারা হয়তো বলবেন হোল্ডারের বল খেলা অসম্ভব ছিলো না মোটেই। অন্তত তামিম, মুশফিকদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানেরা যে হোল্ডারের কাছে এভাবে আত্মসমর্পণ করবেন সেটি ভাবা আসলেই কষ্টকর। তবে স্রোতের বিপরীতে ঠিকই লড়াই করে গেছেন অধিনায়ক সাকিব।



এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন ৫৪ রানের অনবদ্য একটি ইনিংস। এরপরে অবশ্য সেই হোল্ডারের রিভার্স সুইংয়েই বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। আর সাকিবের ফেরার সাথে সাথেই টাইগারদের পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।


দলীয় ১৬৮ রানের মাথায় আবু জায়েদ রাহির উইকেটটি তুলে নিয়ে সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়ার কাজটি করেন সেই হোল্ডারই। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট তুলে নিয়ে তাই ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দুই টেস্ট মিলিয়ে ১৬ উইকেট নেয়ায় সিরিজ সেরাও হয়েছেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।


বাংলাদেশ একাদশঃ


সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, কাজী নুরুল হাসান সোহান, আবু জায়েদ রাহী।


ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশঃ


জ্যাসন হোল্ডার (অধিনায়ক), ক্রেইগ ব্র‍্যাথওয়েট, রস্টন চেজ, মিগুয়েল কামিন্স, শেন ডওরিচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, শিমরন হেটমেয়ার, শাই হোপ, কিমো পল, কাইরন পাওয়েল, ডেভন স্মিথ।



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball