টাইগারদের অপেক্ষায় অ্যান্টিগার সবুজ উইকেট

ছবি:

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত টেস্ট সিরিজে গতির ঝড় তুলেছিলেন দুই ক্যারিবিয়ান পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল এবং কেমার রোচ। পুরো সিরিজে একাই ২০ উইকেট শিকার করেছিলেন গ্যাব্রিয়েল।
যার মধ্যে সবথেকে বেশি বিধ্বংসী ছিলেন সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে। সেন্ট লুসিয়তে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদয়ের ৮টি উইকেট তুলে নেন গ্যাব্রিয়েল।
অপরদিকে আরেক পেসার কেমার রোচও কম যাননি। পুরো সিরিজে মোট ১১টি উইকেট শিকার করে গ্যাব্রিয়েলকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন তিনি। নিখুঁত লাইন এবং লেন্থ তো আছেই, পাশাপাশি দুর্দান্ত গতির কারণে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ত্রাসেই পরিণত হয়েছিলেন এই দুই ক্যারিবিয়ান পেসার।
এবার সেই গতির ঝড় হয়তো অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও। বুধবার অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে রোচ এবং গ্যাব্রিয়েলের উইন্ডিজ ক্রিকেট দল।
ভেন্যু ব্যতিক্রম হলেও এই ম্যাচেও যে ক্যারিবিয়ান পেসারদের দাপট দেখা যাবে তা সহজেই অনুমেয় বলা যায়। আর রোচ, গ্যাব্রিয়েলদের জন্য সেখানকার উইকেটও হয়তো বানানো হবে যথেষ্ট পেস সহায়ক।
তার ওপর পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে অ্যান্টিগার এই স্টেডিয়ামে বরাবরই সুবিধা পেয়ে এসেছে পেসাররাই। মূলত এই ভেন্যুটির কথা চিন্তা করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ২০১৬ সালে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচের কথা।

সেবার ভারতের কাছে চার ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে রীতিমত নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিলো ক্যারিবিয়ানদের। ভারতীয় বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে ইনিংস এবং ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছিলো জ্যাসন হোল্ডারের দল।
তবে পুরো ম্যাচেই দারুণ খেলেছিলেন দুই দলের পেসাররা। প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসার কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। অপরদিকে বল হাতে প্রথম ইনিংসে সাফল্য পেয়েছিলেন ভারতের দুই পেসার মোহাম্মদ শামি এবং উমেশ যাদব। উভয়েই নিয়েছিলেন ৪টি করে উইকেট।
অবশ্য পেসাররা সুবিধা পেলেও খারাপ করেননি স্পিনাররাও। বিশেষ করে দারুণ ব্যতিক্রম ছিলেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিন। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ঘূর্ণি বোলিংয়ের সামনেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিলো স্বাগতিকরা।
৮৩ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়ে একাই ধ্বস নামিয়েছিলেন তিনি ক্যারিবিয়ানদের ব্যাটিং লাইন আপে। সুতরাং অশ্বিনের এই বোলিং পরিসংখ্যান দেখে বাংলাদেশি স্পিনাররা আশাবাদী হতেই পারেন প্রথম টেস্টে ভালো খেলার ব্যাপারে।
কিন্তু যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে জানা গেছে যে পুরো পাঁচ দিনই সবুজ উইকেট রাখার পরিকল্পনা করতে যাচ্ছে কিউরেটররা। আর তেমনটি হলে পেসারদের আধিক্যই দেখা যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে।
সেক্ষেত্রে কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল এবং জ্যাসন হোল্ডারের সাথে কিমো পল অথবা মিগুয়েল কামিন্সকে নিয়ে মাঠে নামতে পারে তারা। অপরদিকে টাইগারদেরকেও জোর দিতে হবে পেসারদের প্রতি।
তেমনটি হলে রুবেল হোসেনের সাথে একাদশে থাকতে পারেন কামরুল ইসলাম রাব্বি, শফিউল ইসলাম এবং আবু জায়েদ রাহী। তবে এই পেস অ্যাটাক নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের শিবিরে কতটা ক্ষত সৃষ্টি করতে পারবে বাংলাদেশ সেটি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে যথেষ্টই। যদিও এর উত্তর পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে বুধবার পর্যন্ত।
বাংলাদেশের স্কোয়াডঃ
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, নাজমুল হোসেন শান্ত এবং শফিউল ইসলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড:
জেসন হোল্ডার (অধিনায়ক), দেবেন্দ্র বিশু, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, রস্টন চেজ, মিগুয়েল কামিন্স, শেন ডওরিচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, জামার হ্যামিল্টন (উইকেটরক্ষক), শিমরন হেটমায়ার, শাই হোপ, কাইরন পাওয়েল, কেমার রোচ এবং ডেভন স্মিথ।