বাংলাদেশের কান্ডারি রুমানা আহমেদ

ছবি:

প্রত্যেক দলেই একজন পরিপক্ব অলরাউন্ডার থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও দলের জন্য অবদান রাখতে সক্ষম তারা। অনেকেই ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে নিজের খ্যাতি পেয়ে থাকেন আবার অনেকেই বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে।
টাইগ্রেস দলেও রয়েছে একজন পরিপক্ব অলরাউন্ডার। তিনি আর কেউ নন রুমানা আহমেদ। পুরুষ দলে লেগ স্পিনারের অভাব হলেও নারী দলে এই অভাব দূর করেছেন তিনি।
লেগ স্পিনার হওয়ার পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও দারুণ দক্ষ। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত ক্রিকেটার তিনি। ব্যাট হাতে দারুণ দক্ষ হওয়ার দলের অন্যতম ভরসাবান ক্রিকেটার হওয়ার খেতাবটা নিজের করে নিয়েছেন তিনি।
তার হাত ধরেই অনেক ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ দল। ২০১১ সালে টাইগ্রেসদের প্রথম জয়ের ম্যাচে অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। ৭ বছর ধরে দেশের হয়ে খেলা এই লেগ স্পিনার তার ঘূর্ণিতে পরাস্ত করেছেন বিশ্বমাতানো অনেক ব্যাটসম্যানকেই।
প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে হ্যাট্রিক শিকারের কীর্তিও রয়েছে তার। পারফর্মেন্সের সুবাদে জাতীয় দলে নিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলের দায়িত্বও কাঁধে পান তিনি। কিন্তু দলের ব্যর্থতার কারণে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয় তাকে।

সালমা-শুকতারাকে দেখেই ক্রিকেটে আসেন খুলনার এই ক্রিকেটার। অধিনায়কত্ব হারানোর পর এবছর আবারও তাকে ওয়ানডে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে দেয়া হয়। তার অধীনে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল।
সেখান থেকে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে ফিরলেও রুমানা ফিরেছেন ভিন্ন রুপে। সেখানে খেলতে যাওয়ার আগে তার ব্যাট চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে ব্যাট উপহার দেন জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবাল। সেই ব্যাট দিয়ে দক্ষিণ আফ্রকায় প্রস্তুতি ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া সেই ফর্ম ধরে রেখেছিলেন সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপেও। প্রথম বারের মত এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। আর এই শিরোপা জয়ের পেছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি।
ব্যাট হাতে রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ৪ ম্যাচে ব্যাট করে দলের পক্ষে রান করেছেন ৮৫ আর উইকেট নিয়েছেন মোট ১০টি। ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ৪২ রানের ইনিংস আর বল হাতে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
পুরো টুর্নামেন্ট জুরে নিজের সেরা দিয়ে খেলে আসা রুমানা ফাইনালেও নিজের জাত মত খেলেছেন। ব্যাট হাতে ২৩ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট। নিঃসন্দেহে এশিয়া কাপের সেরা টাইগ্রেস ক্রিকেটার রুমানা।
ফাইনালে হয়েছেন ম্যাচ সেরা আর দলকে জিতিয়েছেন প্রথম কোন বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা। দলের প্রয়োজনে বোলিংয়ে এসে উইকেট নিয়েছেন সঙ্গে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে হালও ধরেছেন তিনি। বলতে গেলে টাইগ্রেসদের সবচেয়ে ভরসাবান ক্রিকেটার তিনি।
রুমানার মত লেগ স্পিনার দরকার পুরুষদের দলেও, যার হাত ধরে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ দল। এগিয়ে যাও রুমানা, তোমার হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।