সময় এখন পাশে থাকার

ছবি:

হঠাৎ করেই সময়টা যেনো বদলে গেছে। দেশের মাটিতে, উপমহাদেশের মাটিতে আমরা কী দারুন একটা ছন্দে চলে এসেছিলাম। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালে দেশে, উপমহাদেশে না করেছি, এমন কীর্তি নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারতকে সিরিজ হারিয়েছি আমরা। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট জিতেছি, তিনটে সিরিজ ড্র করে ফিরেছি। এরপর দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দুটো দলকে হারিয়েছি।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় যেটা হলো, সেটাকে বলা যায়, ছন্দপতনের শুরু।
এটা ঠিক মাঝে নিউজিল্যান্ডে গিয়েও সব ফরম্যাটে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে ফিরেছি। কিন্তু সেখানে লড়াই ছিলো, বলার মতো কিছু পারফরম্যান্স ছিলো। দুটো ওয়ানডে অন্তত লড়ে হেরেছি। টেস্টে সাকিব আল হাসানের ডাবল সেঞ্চুরি ছিলো। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় সে তুলনায় বিপর্যয় হলো।
তারপরও দেশের বাইরের ঘটনা বলে সেটাকে এড়িয়ে থাকার সুযোগ ছিলো। আসল খারাপ সময়টা এলো দেশের মাটিতেই। ত্রিদেশীয় সিরিজে দুরন্ত সূচনা করলো বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে শুরু করেছিলো।

সবার আগে ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশ দল। আর ওখান থেকেই পতন হলো। এক ম্যাচে ৮২ রানে অলআউট এবং ফাইনালে মাঝারি স্কোর টপকাতে না পারা। তারপর টেস্টে হার, টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইট ওয়াশ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা হলো সাকিব আল হাসানকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য হারানো।
এর মধ্যে আবার বাংলাদেশ দলে নেই এখন কোনো প্রধাণ কোচ। এই অবস্থায় বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। দলে নেই সাকিব। আফসোসের সাথে বলতে হয়, নেই দলে মাশরাফিও। নেই নিয়মিত প্রধাণ কোচ। দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ভারপ্রাপ্ত কোচ কোর্টনি ওয়ালশ।
এমন একটা সময়ে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশকে নিয়ে খুব স্বপ্ন দেখা কঠিন। যদিও ভারত একটা দ্বিতীয় সারির দল পাঠাচ্ছে, তাই এখানে বাংলাদেশের ভালো একটা সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু সেই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর মতো কৌশল নির্ধারণ ও দলকে উজ্জীবিত করার লোকের এখন বড়ই অভাব। আমাদের দলটা এখন আহত, অনভিজ্ঞ ও খর্ব শক্তির।
এই সময়ে দলের ওপর প্রত্যাশার চাপ বাড়ানোর চেয়ে অনেক বেশী জরুরী, তাদের সমর্থন দেওয়া। এই সময়ে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে রিয়াদদের ওপর। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আহত এই দলটাকে রিয়াদ তার পরীক্ষিত শক্তি দিয়ে উজ্জীবিত করতে পারবেন।
এই হারের বৃত্তে পড়ে যাওয়া দলটা এখান থেকেই ঘুরে দাড়াবে, এই বিশ্বাস রাখতে হবে আমাদের। আজকের দিনে সমর্থকদের কাছ থেকে এই বিশ্বাস আসাটা জরুরী। ক্রিকেটাররা ফেসবুক, টুইটারে আছেন।
তারা আমাদের বিশ্বাস-অবিশ্বাসটা টের পান। এই সময়ে সমালোচনা বা প্রত্যাশার চাপ, কোনোটা দিয়েই তাদের চেপে ধরা ঠিক হবে না। একমাত্র উচিত কাজ হলো তাদের পাশে থাকা।
দুঃসময়ে যে পাশে থাকে, সেই প্রকৃত বন্ধু।
আসুন, আমরা বাংলাদেশের ক্রিকেটের বন্ধু হই।