দল নির্বাচন নিয়ে বিসিবিকে ধুয়ে দিলেন ফারুক

ছবি:

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই সমালোচনা হয়ে আসছিলো দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে। বর্তমানে যে তিন স্তরের নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় সেই পদ্ধতিতে শুরুতে নির্বাচকেরা প্রাথমিক একটি দল নির্বাচন করে প্রথমে পাঠান ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের কাছে। আকরাম খান এবং প্রধান নির্বাচকের হাত ঘুরে পরবর্তীতে তা বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের দরবারে চলে যায়।
পাপন সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই সেই দলটিকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। দল গঠনের এই পদ্ধতি শুরু থেকেই অপছন্দ ছিলো ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক পদ থেকে ইস্তফা দেয়া ফারুক আহমেদের।
সম্প্রতি ক্রিকবাজের সাথে আলাপকালে আবারো এই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন ফারুক। তিনি মনে করেন বাংলাদেশ দলের খারাপ পারফর্মেন্সের পেছনে অনেকাংশে দায়ি এই নির্বাচন ব্য???স্থা। দলকে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে এক স্তর বিশিষ্ট নির্বাচন প্রক্রিয়াই সবথেকে বেশি প্রয়োজন। ফারুক বলেন,
'আমার মনে হয় আমরা জানিই না কি করতে চাই এবং কি অর্জন করতে চাই। অনেক বেশি মানুষ যুক্ত হচ্ছে। একেক জন একেক রকম আইডিয়া নিয়ে আসে। আমার মতে যা দল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অনেক কঠিন করে ফেলতে পারে।'

ফারুকের মতে নির্বাচক প্রক্রিয়ায় বেশি মানুষ জড়িয়ে পড়লেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় পড়তে হবে। আর এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের দলের ওপরেও। টাইগারদের সাবেক এই প্রধান নির্বাচক এই প্রসঙ্গে বলেন,
'আমার আশা, দলটা ভালো করবে। কিন্তু এখনকার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তা কঠিন হবে। একবার আমরা খারাপ করলেই নানা ধরনের আইডিয়া ঢুকে পড়তে থাকবে, আরো লোক জড়িয়ে পড়বে। নির্বাচক কমিটি যদি একটাই থাকতো তাহলে তারা ভিন্নভাবে ভাবতে পারতো।'
ফারুক কথা বলেছেন সাব্বির রহমান এবং সৌম্য সরকারের টেস্ট খেলা প্রসঙ্গেও। তাঁর মতে এই দুই ব্যাটসম্যানকে উপযুক্ত সময় না দিয়েই টেস্টের চ্যালেঞ্জে নামিয়ে দিয়েছে বোর্ড। ওয়ানডে এবং টি টোয়েন্টিতে তাদের আরো সময় দেয়া উচিৎ ছিলো উল্লেখ করে ফারুকের ভাষ্য,
'আমার মনে হয় কিছু প্রতিভা নষ্ট হওয়ার জন্য আমরাও দায়ী। এই দুজনকে টেস্টে আনার আগে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে আরো বেশি সময় দিলে ভাল হত। কারণ দীর্ঘ ফরম্যাটে আপনার টেকনিক পরীক্ষা করা হয়। আর আপনি ভাল করতে না পারলে অনেক অনিশ্চয়তা আপনাকে ঘিরে ধরবে।'
গত শ্রীলঙ্কা সিরিজে মোট ৬ জন ক্রিকেটারের অভিষেক করেছিলেন নির্বাচকেরা। ফারুকের মতে যা ছিলো একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার আগে তাদের যে যথেষ্ট সময় দেয়া হয়নি সেটাও মানছেন তিনি। তাঁর ভাষ্যমতে,
'আমি যতদূর বুঝেছি আমরা যখন একটি পরিপক্ক দলের কথা বলছি, তখন এই ধরণের সিদ্ধান্ত আসলেই বেশ কঠিন এবং সেখান থেকে বের হওয়া আরো বেশি কঠিন। নতুন প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের স্কোয়াডে জায়গা দেয়ার আগে আরো কিছু সময় দেয়া প্রয়োজন ছিলো যেন আমরা বুঝতে পারি তারা আসলেই খেলার উপযুক্ত কিনা।'