রানের এভারেস্টে বাংলাদেশ

ছবি:

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংসঃ
৫১৩ অল আউট (১২৯.৫) মমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২, মাহমুদুল্লাহ ৮৩*।
হেরাথ ৩/ ১৫০, লাকমল ৩/ ৬৮।
মমিনুলের বিদায়ঃ
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন দারুণ ব্যাটিং করে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন মমিনুল হক। বলা যায় সাবেক বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে উপযুক্ত জবাবই দিয়েছিলেন তাঁর অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসটির মধ্য দিয়ে। আর মমিনুলের দুর্দান্ত এই ইনিংসের মধ্য দিয়েই প্রথম দিন ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ দ্বিতীয় দিন ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর লক্ষ্য নিয়েই খেলা শুরু করেছিলেন এই টাইগার ব্যাটসম্যান। কিন্তু সেই লক্ষ্যে পৌঁছুতে ব্যর্থ হয়েছেন মমিনুল। আজ স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪ রান যোগ করার পরেই লঙ্কান স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের বলে শর্ট লেগ অঞ্চলে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেলেন মমিনুল।
অভিজ্ঞ হেরাথের খেলঃ
শুরুতেই মমিনুলের উইকেট হারানোর পরই খেই হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। মাত্র ১৪ রানের ব্যবধানেই নতুন ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকেও ফিরে যেতে হয় সাজঘরে। এবারও অবশ্য সেই হেরাথই ফিরিয়েছেন তাঁকে। মিড অন অঞ্চলে লক্ষ্মণ সান্দাকানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন সৈকত।

আশা জাগিয়ে মিরাজের বিদায়ঃ
দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা ব্যাকফুটে বাংলাদেশ, ক্রিজে আসা মিরাজ অবশ্য চাপ নিলেন না। শুরুতেই ব্যাটের মাঝখানটা খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। লাকমলকে স্টেইট ড্রাইভে চার, হেরাথকে সুইপ শটে ছয় হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। এর মাঝে বাংলাদেশের স্কোর চারশ ছাড়িয়ে যায়।
তবে সকালটা বোধহয় বাংলাদেশের ভাগ্যে ছিল না। হেরাথের বলে তিন রান নিতে গিয়ে অল্পের জন্য রান আউট হতে হয় ভালো খেলতে থাকা মিরাজকে। ১৯ বলে ২০ রান যোগ করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।
জুটিতে রক্ষাঃ
প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারালেও ধ্বসে পড়েনি বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার। সানজামুলের দারুন ব্যাটিংয়ের সাথে 'দেয়াল' মাহমুদুল্লাহর জুটি বাংলাদেশের স্কোর সাড়ে চারশ ছাড়াতে সাহায্য করে। বাকী সময়টায় অষ্টম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়ে কোন সময় ঝুঁকি ছাড়াই লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে তিন উইকেট বিসর্জন দিলেও ৯৩ রান তুলে বাংলাদেশের স্কোর ৪৬৭/৭ রানে নিয়ে যায় রিয়াদ-সানজামুল জুটি।
অধিনায়ক রিয়াদের ফিফটিঃ
লাঞ্চ বিরতির পর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অর্ধশত রান তুলে নেন। ৯২ বল খরচায় দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে বাংলাদেশের স্কোর বাড়িয়ে নিয়ে যান তিনি।
শ্রীলঙ্কার জোড়া আঘাতঃ
নতুন সেশনের শুরুতে পর পর দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ফেলে দেয় হেরাথ ও সান্দাকান। ভালো খেলতে থাকা সানজামুলকে গুগলিতে বোকা বানিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন সান্দাকান। ঠিক পরের ওভারে অভিজ্ঞ হেরাথের বলে সরাসরি বোল্ড হন তাইজুল।
বাংলাদেশের পাঁচশঃ
জোড়া উইকেট পতনের পরও লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদুল্লাহ। মুস্তাফিজের সাথে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তিনি। জুটি গড়ে বাংলাদেশের রান পাঁচশতে নিয়ে যান তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজও জুটি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করেন।
রানের পাহাড়ে বাংলাদেশঃ
শেষ উইকেট জুটিতে গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রান যোগ করে লাকমলের বাউন্সারে আউট হন মুস্তাফিজ, যা বাংলাদেশকে ৫১৩ রানের বিশাল স্কোর গড়তে সাহায্য করে। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সাথে ছোট ছোট জুটি গড়ে বাংলাদেশকে লড়াকু স্কোর এনে দেন, তিনি অপরাজিত থাকেন ১৩৪ বলে ৮৩ রানের স্মরণীয় ইনিংস খেলে। লঙ্কানদের হয়ে প্রথম ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন হেরাথ ও লাকমল। দুইটি উইকেট পেয়েছেন সান্দাকান।
বাংলাদেশ একাদশ-
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক),মমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কা একাদশ-
দিমুথ করুনারত্নে, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্ডিমাল (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেট রক্ষক), রোশান সিলভা, দিলরুয়ান পেরেরা, রঙ্গনা হেরাথ, সুরঙ্গা লাকমাল, লক্ষ্মণ সন্দাকান, লাহিরু কুমারা।