তামিমের ছয় হাজারি ক্লাবের আদ্যোপান্ত

ছবি:

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা ওপেনার হিসেবে বেশ কয়েকদিন থেকেই নিজের জায়গাটি পাকাপোক্ত করে রেখেছেন তামিম ইকবাল খান।দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে আগেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তামিম।
এবার চলমান ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ হাজার রানের মাইলফলকেও পা রেখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬ হাজার রানও পূর্ণ করেছেন তামিম এই সিরিজেই।
এই মাইলফলকে পা রাখার জন্য অবশ্য দীর্ঘ ১১টি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে এই টাইগার ওপেনারকে। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৭তম ওয়ানডেতে এসে ৬ হাজারি ক্লাবে পা রাখলেন তামিম।
তামিমের এই ৬ হাজার রানের যাত্রাকালের আদ্যোপান্ত চলুন জেনে নেয়া যাক-
*১০০০ রান-
ওয়ানডেতে ১ হাজারি রানের ক্লাবে পা রাখতে তামিম সময় নিয়েছিলেন দেড় বছর। এই মাইলফলক স্পর্শ করার জন্য ৩৭টি ম্যাচ খেলতে হয়েছিলো তামিমকে।
২০০৮ সালে ভারতের বিপক্ষে লাহোরে এক হাজার রান পূর্ণ করেন টাইগার ওপেনার। সেই ম্যাচের আগে পর্যন্ত তিনি হাঁকিয়েছিলেন ৭টি অর্ধশতক এবং একটি শতক।
*২০০০ রান-

১ থেকে ২ হাজার রানে পৌঁছানোর জন্য তামিমকে খেলতে হয়েছিলো মোট ৩৩টি ম্যাচ। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে আবারো সেই ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ২ হাজারি রানের ক্লাবে পা রাখেন তামিম। এর মধ্যে পাঁচটি অর্ধশতক সহ একটি শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি।
*৩০০০ রান-
দুই থেকে তিন হাজার রানে পৌঁছুতে তামিম খেলেছিলেন মোট ৩২টি ম্যাচ। যেখানে ছিলো ৬টি অর্ধশতক এবং ১টি শতক। ২০১১ সালের ১৯শে আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই মাইলফলকে পা রাখেন খান সাহেব।
*৪০০০ রান-
প্রেক্ষাপট নেলসন, ৫ই মার্চ ২০১৫। ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ। বরাবরের মতো এই ম্যাচেও নিজেকে প্রমাণ করলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। খেললেন ৯৫ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস।
আর তাঁর এই ইনিংসের সুবাদেই স্কটিশদের ছুঁড়ে দেয়া ৩১৯ রানের পাহাড়সম টার্গেট সহজেই ৬ উইকেট হাতে রেখে পার করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। আর ৯৫ রান করে তামিম পূর্ণ করেন ৪ হাজার রানের মাইলফলক। এর জন্য তাঁকে বিশ্বকাপের ম্যাচটি সহ মোট ৩৬টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এর মধ্যে একটি শতক ছাড়াও রয়েছে নয়টি অর্ধশতক।
*৫০০০ রান-
২০১৬ সালের ১২ই অক্টোবর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ হাজারি রানের ক্লাবে পা রাখেন তামিম। চিটাগাংয়ের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪৫ রান করেছিলেন তিনি। আর এর মাধ্যমেই পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করেন এই ড্যাশিং ওপেনার।
চার থেকে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করার জন্য তামিম অবশ্য বেশ কম ম্যাচই খেলেছিলেন। মাত্র ২১ ম্যাচে তিনটি শতক এবং পাঁচটি অর্ধশতকের মাধ্যমে এই রানে পৌঁছান তিনি। যেখানে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিলো ৪৮.৫২।
*৬০০০ রান-
চলমান ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই যে ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তামিম সেটি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন দেশের অনেক ক্রিকেট প্রেমীরাই। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না ৫ থেকে ৬ হাজার রান পূর্ণ করতে কি দারুণ একটি রেকর্ড গড়েছেন তামিম! ছয় হাজারি ক্লাবে পা রাখার জন্য মাত্র ১৮টি ম্যাচ খেলেছেন টাইগারদের এই প্রাণ ভোমরা। যেখানে তাঁর ইনিংস সংখ্যা ১৭টি এবং ব্যাটিং গড় ৬৬.৮৬।
এই মাইলফল স্পর্শ করার ক্ষেত্রে তামিম ছাড়িয়ে গেছেন ভারতের রোহিত শর্মা, সৌরভ গাঙ্গুলি, বিরাট কোহলি, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ম্যাথিউ হেইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা, এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তী স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে।
সবথেকে কম ম্যাচ খেলে ৫ থেকে ৬ হাজার রান করার দিক থেকে এখন শীর্ষে অবস্থান তামিমের। তাঁর পূর্বে এই রানে পৌঁছুতে ২০টি ইনিংস খেলেছিলেন ভারতের রোহিত শর্মাকে। আরো পড়ুন- (কোহলি- রিচার্ডসদের ছাড়িয়ে অনন্য উচ্চতায় তামিম)। ছয় হাজারি ক্লাবে পা রাখার পথে তামিম দু’টি শতক সহ আটটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন।
সূত্র- ইএসপিএন