টেস্টে ১০০ উইকেট নিতে পারা মুজারাবানির কাছে বিশেষ কিছু হবে

আন্তর্জাতিক
টেস্টে ১০০ উইকেট নিতে পারা মুজারাবানির কাছে বিশেষ কিছু হবে
টেস্টে বল হাতে দারুণ সময় পার করছেন ব্লেসিং মুজারাবানি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
২০১৭ সালে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হলেও প্রায় ৮ বছরের সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারে ব্লেসিং মুজারাবানি খেলেছেন মাত্র ১২টি ম্যাচ। যার চারটি খেলেছেন ২০২৫ সালে। বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা চার টেস্টে ১৮.৬১ গড়ে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। সবমিলিয়ে জিম্বাবুয়ের জার্সিতে মুজারাবানির টেস্ট উইকেটের সংখ্যা ৫১টি। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে একশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করতে আরও ৪৯ উইকেট চাই ডানহাতি পেসারের। সেই স্বপ্নের পেছনে ছুঁটে চলছেন মুজারাবানি। জিম্বাবুয়ের পেসার মনে করেন, টেস্টে একশ উইকেট নিতে পারা তাঁর জন্য বিশেষ কিছু হবে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই কিংবদন্তি পেসার স্যার কার্টলি অ্যামব্রোস ও কোর্টনি ওয়ালশকে আদর্শ মেনে পেস বোলিং শুরু করেছিলেন মুজারাবানি। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে কিংবদন্তি পেসারদের বড় একটা প্রজন্ম থাকলেও জিম্বাবুয়ের সেটা নেই। বিশ্বজুড়ে ঘুরেফিরে পেস বোলিংয়ের হাতেখড়ি শিখতে হয়েছে ডানহাতি এই পেসারকে। হারারের তাকাশিঙ্কা ক্লাব থেকে উঠে এসেছিলেন মুজারাবানি। পরবর্তীতে ইংলিশ কাউন্টির ক্লাব নটিংহ্যাম্পশায়ারেও সুযোগ মেলে তাঁর।

আস্তে আস্তে পেস বোলিংয়ে হাতেখড়ি পাওয়া মুজারাবানি হয়ে উঠেছেন জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা পেসার হিসেবে। নিজেকে প্রমাণ করেছেন বেলফাস্ট, বুলাওয়য়ে, আবুধাবি কিংবা সিলেটে। ২০২৫ সালটা মুজারাবানির জন্য স্বপ্নের মতো। ৪ টেস্টে নিয়ে ২৬ উইকেট, যা তাঁর ক্যারিয়ারের উইকেটের অর্ধেকেরও বেশি। প্রথম তিন ম্যাচে ছয় বা তাঁর অধিনায়ক উইকেট নিয়েছেন মুজারাবানি। বুলাওয়েতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯৫ রানে ৬ উইকেট, একই মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

এ ছাড়া সবশেষ বাংলাদেশ সফরের প্রথম টেস্টে সিলেটে ৭৩ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। ম্যালকম মার্শালের ১৯৮৮ সালের পর প্রথম পেসার হিসেবে টানা তিন টেস্টেই ছয় বা তাঁর অধিক উইকেট নিয়েছেন মুজারাবানি। পেসার হিসেবে এমন কীর্তি আছে কেবল ইমরান খানের। উনিশ শতকে জর্জ লোহমান ও টম রিচার্ডসনও এমন কীর্তি গড়েছিলেন। চট্টগ্রামে নিজের ছন্দ ধরে রাখতে না পারলেও জিম্বাবুয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেট নেয়া বোলারদের তালিকায় ৮ নম্বরে উঠে এসেছেন মুজারাবানি।

চলতি বছরে আরও সাতটি টেস্ট খেলবে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৩০টি উইকেট নিতে পারলেই রে প্রাইসকে পেছনে ফেলে তালিকার দুইয়ে উঠে আসতে পারবেন ডানহাতি এই পেসার। ২১৬ উইকেট নিয়ে সবার উপরে আছেন কিংবদন্তি হিথ স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট নেয়ার মাইলফলক স্পর্শ করা এখন মুজারাবানির মতো স্বপ্নের মতোই। সেই স্বপ্ন পূরণে কঠোর পরিশ্রম করে যেতে চান জিম্বাবুয়ের এই পেসার।

মুজারাবানি বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা দারুণ ব্যাপার। কারণ আমার মনে হয় টেস্টে উইকেট পাওয়া সত্যিই খুব কঠিন। তাই যেকোনো বোলারের জন্য টেস্টে ১০০ উইকেট নেয়া বড় অর্জন। আমার জন্য এটা বিশেষ কিছুই হবে। আমি আমার সব ধরনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছি। অবশ্যই, আমরা কঠোর পরিশ্রম করব এবং নিশ্চিত করব যাতে জিনিসগুলো ঘটে। কিন্তু আমি উইকেট নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না।’

২০২৪ সালের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্টকে। জিম্বাবুয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দেশটির পেসারদের বদলে দিয়েছেন সাউথ আফ্রিকার সাবেক এই পেসার। মুজারাবানিও তাঁর সাম্প্রতিক সাফল্যের জন্য ল্যাঙ্গাভেল্টকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে ডানহাতি পেসার এও জানিয়েছেন, পেস বোলিং কোচের সঙ্গেই লেংথ ও নিজের স্কিল নিয়ে কাজ করে উপকৃত হয়েছেন তিনি।

মুজারাবানি বলেন, ‘সত্যি বলতে টেস্ট ক্রিকেট আমি উপভোগ করছি। টেস্ট ক্রিকেটে লেংথ কেমন হওয়া উচিত এসব নিয়ে আমি আমার বোলিং কোচের সঙ্গে কাজ করছি। আমার মনে হয় আমি যত বেশি খেলি তত বেশি বুঝতে পারি আমি কিভাবে উইকেট পাই। আমার লেংথ এবং আমি যত ধরনের স্কিল ব্যবহারের চেষ্টা করছি এসব নিয়ে সে (ল্যাঙ্গাভেল্ট) আমার সঙ্গে কাজ করছে। সে যা নিয়ে কথা বলছে তা খুবই সহায়তা করছে।’

আরো পড়ুন: ব্লেসিং মুজারাবানি