জায়সাওয়ালের আউট নিয়ে সৈকতের পক্ষে শাস্ত্রী, বিপক্ষে গাভাস্কার
ছবি: আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে হতাশ ইয়াশভি জায়সাওয়াল (বামে), পাশে দাঁড়িয়ে ওয়াশিংটন সুন্দর, গেটি ইমেজ
প্যাট কামিন্সের লেগ স্টাম্পের বাইরের বাউন্সারে পুল করতে চেয়েছিলেন জায়সাওয়াল। বাঁহাতি ওপেনারকে ফাঁকি দিয়ে বল উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির গ্লাভসে যেতেই আবেদন করেন কামিন্স ও অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা। অনফিল্ড আম্পায়ার জোয়েল উইলসন অবশ্য স্বাগতিকদের আবেদনে একেবারেই সাড়া দেননি। তবে জায়সাওয়ালের ক্যাচ নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে পরোক্ষণেই রিভিউ নেয় অজিরা।
এমন সিদ্ধান্ত নিতে তৃতীয় আম্পায়াররা আলস্ট্রা এজ কিংবা স্নিকো মিটারের সহায়তা নিয়ে থাকেন। রিয়েল টাইম স্নিকো প্রযুক্তিতে অবশ্য কোন রেখা দেখা যায়নি। তবে ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায় বল জায়সাওয়ালের ব্যাটের কানা ও গ্লাভসে লেগে গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৮৪ রানের ইনিংস খেলা ভারতের ওপেনারকে আউট দেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
ম্যাচের কমেন্ট্রি বক্সে উপস্থিত থাকা সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার এবং কোচ শাস্ত্রীও তখন বলেন, 'তৃতীয় আম্পায়ার চাইলে স্নিকো না-ও মানতে পারেন। সেই ক্ষমতা তার আছে। তিনি দেখছেন বল গ্লাভসে লাগার পর দিক পরিবর্তন করেছে। তাই তিনি আউট দিয়েছেন। আমার মনে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত।'
বলের স্পর্শ বোঝার জন্য যেই মাইকের ব্যবহার করা হয় স্নিকোমিটার প্রযুক্তিতে, সেই মাইক থাকে স্ট্যাম্পের পিছনে, মাটির নিচে। তাই ৬ ফুট লম্বা জায়সাওয়ালের গ্লাভসের মতো নরম বস্তুতে বলের স্পর্শ ধরা না-ও পড়তে পারে স্নিকোতে। আর এই ব্যাপারটাই বুঝিয়েছেন হট স্পট প্রযুক্তির নির্মাতা ওয়ারেন ব্রেনান।
কোড স্পোর্টকে তিনি বলেন, 'এটা এক ধরনের গ্লান্স শট। তাই সঠিক ভাবে কোনও শব্দ বোঝা যায়নি। যেটা ছিল সেটা আশেপাশের পরিবেশের আওয়াজ। আমি অডিও ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। উনিও বলেছেন কোনও আওয়াজ পাননি। হয়তো হট স্পট এই সমস্যার সমাধান করতে পারত।'
কিন্তু এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পূর্ন দ্বিমত পোষণ করেছেন গাভাস্কার। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকবার দেখেছি, বল সিমে পড়ে ব্যাটে না লেগে খুব কাছ দিয়ে গিয়ে দেরিতে সুইং করে। দূর থেকে মনে হয়, বল ব্যাটের কানায় লেগেছে। আমি সামনের পায়ে ডিফেন্সের কথা বলছি, (জায়সাওয়ালের) হুক শটের কথা নয়। দেখার ভুলের কারণে মনে হয়, বল ব্যাটে লেগেছে। এখানেও দেখার ভুলই হয়েছে। প্রযুক্তি যদি বলে এটা আউট নয়, তাহলে আউট দেওয়ার সুযোগ নেই।’
সৈকতের সিদ্ধান্ত নিয়ে মজা করে সদ্য অবসর নেয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন লিখেন, 'এখন স্নিকোমিটার ট্রেন্ডিং। তাদের উচিৎ তাকে (সৈকত) ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে এই উন্মাদনাকে কাজে লাগানো।'
জায়সাওয়াল সাজঘরে ফেরার পর দ্রুতই গুটিয়ে যায় ভারত। ম্যাচ ড্র করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে বরণ করে ১৮৪ রানের পরাজয়। এই হারে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে আরও এক ধাপ পিছিয়ে গেল তারা।