৮ বলে পুরো দিন খোয়াল ভারত
ছবি: বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে স্কট বোল্যান্ডের উল্লাস, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া
পরোক্ষণেই রান নেয়াতে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন কোহলি। এমন অবস্থায় জমে ওঠা জুটি ভাঙার সুযোগটা নিতে একটু ভুল করলেন না কামিন্স। দৌড়ে এসে বল লুফে নিয়েই স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙতে সরাসরি থ্রো করেছিলেন। যদিও স্টাম্প ভাঙতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। তবে ঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা অ্যালেক্স ক্যারি বাকি কাজটা সেরেছেন। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে জয়সাওয়ালকে ফিরতে হয় আক্ষেপে মোড়ানো ৮২ রানের ইনিংস খেলে। বাঁহাতি ওপেনার ফেরার একটু পর আউট হয়েছেন কোহলিও।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রত্যাশিত ফর্মে না থাকা, বিমানবন্দরে অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়ানো এবং বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে স্যাম কনস্টাসকে ধাক্কা দিয়ে শাস্তি পাওয়া কোহলি এমনিতেই অনেকটা চাপে ছিলেন। তবে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ‘যমদূত’ হয়ে ওঠা অফ স্টাম্পের বাইরের বল যেন খেলার তেমন আগ্রহই ছিল না তাঁর। সে কারণেই কামিন্স, বোল্যান্ড, মিচেল স্টার্কদের বেশিরভাগ ডেলিভারিই ছেড়ে দিয়েছেন কোহলি। তবে জয়সাওয়াল ফেরার পর নিজের সেই পুরনো ‘রোগেই আক্রান্ত’ হতে হয়েছে তাকে।
বোল্যান্ডের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যারির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন কোহলি। অনেকটা সময় উইকেটে পড়ে থাকলেও তাকে ফিরতে হয়েছে ৩৬ রানে। দিনের শেষ বেলায় নিজের উইকেট দিয়ে গেছেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা আকাশ দীপও। শেষ বিকেলে মাত্র ৮ বলের ব্যবধানে পুরো দিন খুইয়েছে ভারত। রবীন্দ্র জাদেজা ফ্লিক করে চার মেরে দিনের খেলা শেষ করেছেন। দ্বিতীয় দিন শেষে ভারতের পুঁজি ৫ উইকেটে ১৬৪ রান। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ৩১০ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন জাদেজা ও ঋষভ পান্ত।
আগের দিনের ৬ উইকেটে ৩১১ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন স্টিভ স্মিথ ও কামিন্স। সকালের শুরু থেকেই ভারতের পেসারদের ওপর চড়াও ছিলেন তারা দুজন। সেই সঙ্গে ভারতের ফিল্ডাররাও এলোমেলো ফিল্ডিংয়ে স্মিথ ও কামিন্সকে রান বের করতে সহায়তা করেছেন। আগের দিন হাফ সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকা স্মিথ সাবলীল ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন সেঞ্চুরিও। নীতিশ কুমার রেড্ডির বলে চার মেরে ১৬৭ বলে একশ ছুঁয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের ৩৪তম সেঞ্চুরি তুলে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা ব্যাটারদের তালিকায় ব্রায়ান লারা, সুনীল গাভাস্কার ও ইউনিস খানকে ছুঁয়েছেন স্মিথ।
মেলবোর্নে পাওয়া সেঞ্চুরিটি ভারতের বিপক্ষে ১১তম। মাত্র ৪৩ ইনিংসে ১১ সেঞ্চুরি করে পেছনে ফেলেছেন জো রুটকে। ভারতের বিপক্ষে ৫৫ ইনিংসে ১০ সেঞ্চুরি করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে কোহলি ও শচীন টেন্ডুলকারকে পেছনে ফেলে সর্বোচ্চ ১০ সেঞ্চুরি করে সবার উপরে উঠে গেছেন স্মিথ। ডানহাতি ব্যাটারের সেঞ্চুরির পর ফিরেছেন ৪৯ রান করা কামিন্স। অজি অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে ১১২ রানের জুটি। একশ ছোঁয়ার পর দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ১৪০ রানে আউট হয়েছেন স্মিথ। শেষ পর্যন্ত ৪৭৪ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে বুমরাহ চারটি, জাদেজা তিনটি এবং আকাশ দুটি উইকেট নিয়েছেন।