এ বছরের বিপিএল সেরা ছিল না, স্বীকার করলেন সভাপতি ফারুক

ছবি: একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, ক্রিকফ্রেঞ্জি

দেশ ও ক্রিকেট বোর্ডের পরিবর্তি পরিস্থিতিতে ফারুকের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিপিএল আয়োজন করা। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে না পারায় নিজেদের সব মনোযাগ দিয়েছিলেন বিপিএলে। বিসিবির সঙ্গে পুরো আয়োজনে যুক্ত ছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ‘আবার এলো বিপিএল’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয় থিম সং।
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগকে ‘অসত্য ও মানহানিকর’ জানিয়ে ব্যাখ্যা দিলো বিসিবি
২৬ এপ্রিল ২৫
পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ‘ডানা—৩৬’ নামের মাসকটও উন্মোচন করে বিসিবি। বিপিএল শুরুর আগে ঢাকার পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রামে হয়েছে মিউজিক ফেস্ট। মাঠের ক্রিকেটেও রানের দেখা মিলেছে প্রত্যাশিতভাবেই। ধারণা করা হচ্ছিলো, হয়ত সেরা বিপিএল আয়োজনের সঠিক পথেই আছে বিসিবি। তবে টুর্নামেন্টের সময় যত বেড়েছে বিতর্ক ততো বেশি সঙ্গী হয়ে উঠেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিকের ব্যাংক গ্যারান্টি না দেয়া, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক না পাওয়া একটা একটা করে বিতর্ক উসকে দিতে শুরু করে।
চট্টগ্রাম পর্ব গিয়ে পারিশ্রমিক না পেয়ে অনুশীলন বয়কট করেন দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। ঢাকায় এসে একই কারণে ম্যাচ খেলতে রাজী হয়নি বিদেশি ক্রিকেটাররা। অন্তত দুজন বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম থাকলেও বিশেষ বিবেচনায় ১১ দেশি ক্রিকেটার নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তাসকিন আহমেদের রাজশাহী। পরবর্তীতে কয়েক দফা সময় নিয়ে টাকা পরিশোধ করেনি ফ্র্যাঞ্চাইজি।
চিটাগং কিংসের অনেক ক্রিকেটারারও নিজেদের পারিশ্রমিক বুঝে পাননি। এ ছাড়া মাঠের বাইরের আরও বেশি কয়েকটি বিতর্ক ছিল লাগামহীনভাবে। বিপিএল শেষ হলেও সেটা পিছু ছাড়েনি। মাসখানেক আগে পারিশ্রমিক না পেয়ে বিসিবির কাছে বিচার দিয়েছেন চিটাগংয়ের মেন্টর ও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শহীদ আফ্রিদি। এমনকি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরকারের প্রধানের কাছে বিচার দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন সাবেক তারকা অলরাউন্ডার।

সিদ্ধান্ত বদলাতে শরফুদ্দৌলাকে অনুরোধ করবে বিসিবি
৭ ঘন্টা আগে
এসবের বাইরে অবশ্য টিকিট বিক্রি করে ইতিহাস গড়েছে বিসিবি। সভাপতির তথ্য অনুযায়ী, বিপিএলের প্রখম ১০ আসরে টিকিট বিক্রি করেছে ১৫ কোটি টাকার মতো। অথচ ২০২৫ সালের টুর্নামেন্টে ফারুকের বোর্ড সোয়া ১৩ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি করেছে। যদিও ফারুক জানান, কয়েকটি নেতিবাচক জিনিস পুরো টুর্নামেন্টকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। তবে পরের বছর আরও ভালো বিপিএলে আয়োজনের প্রতিজ্ঞা করেছেন বিসিবি সভাপতি।
রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিপিএল নিয়ে ফারুক বলেন, ‘বিপিএলকে নিয়ে দুই-তিনটা কথা বলতে চাই। হ্যাঁ, এবছরের বিপিএলটা সেরা ছিল না। কিন্তু এখানে অনেক ইতিবাচক ব্যাপার ছিল। কিন্তু দুই-একটা নেতিবাচক জিনিস পুরো টুর্নামেন্টকে নষ্ট করে দিয়েছে। দর্শক, ইতিহাস গড়া টিকিট বিক্রি, উইকেট এবং প্রতি ম্যাচে যেভাবে রান হয়েছে সেটা দারুণ ব্যাপার। তবে এর মাঝেও কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ছিল—যা টুর্নামেন্টকে সফল হতে দেয়নি। নিশ্চিতভাবে পরের বছর এটা ভালো একটা টুর্নামেন্ট হবে। আমি আপনাদের এটা কথা দিতে পারি।’
ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে বিসিবির নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফারুক। তবে সেই সময় কাজের স্বাধীনতা না থাকায় পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। তবে ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর বেশ কিছু ভালো কাজ করলেও তাকে নিয়ে সমালোচনা আছে ব্যাপক। কদিন আগে বিসিবির এফডিআর থেকে ১২০ কোটি টাকা সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
যদিও সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন ফারুক। বিসিবি বিবৃতি দিয়ে নিশ্চিত করেছে, বেশি মুনাফার আশায় দেশের ১৩টি ব্যাংকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক জানান, সভাপতি হিসেবে তিনি এখনো শিখছেন। এমনকি এও স্বীকার করেছেন কখনো কখনো ভুল হতেই পারে। তবে সবাইকে একসঙ্গে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ফারুক মনে করেন, একসঙ্গে কাজ করলে দারুণ ব্যাপার হবে।
ফারুক বলেন, ‘ক্রিকেট সম্পর্কিত অনুষ্ঠানে আসতে আমার সবসময়ই ভালো লাগে। উপস্থাপক ইতোমধ্যে ম্যানশন করেছে খেলোয়াড় হিসেবে আমার লম্বা একটা ক্যারিয়ার ছিল। এ ছাড়া প্রধান নির্বাচক ছিলাম, এখন বোর্ড সভাপতি হয়েছিল। হ্যাঁ, আমি ব্যাপকভাবে চেষ্টা করছি, আমি শিখছি। হ্যাঁ, এখানে কিছু ভুল হতে পারে। কিন্তু আমরা যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করি তাহলে দারুণ ব্যাপার হবে।’