সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতে ফাইনালে চিটাগং
![চিটাগং কিংসকে ফাইনালে তুলে উল্লাসে মাতোয়ারা আরাফাত সানি ও আলিস আল ইসলাম, ক্রিকফ্রেঞ্জি](https://cricfrenzy.com/public/storage/images/2-2025/k9h2dGc52B9edd7Ubf477M16.jpeg)
ছবি: চিটাগং কিংসকে ফাইনালে তুলে উল্লাসে মাতোয়ারা আরাফাত সানি ও আলিস আল ইসলাম, ক্রিকফ্রেঞ্জি
![promotional_ad](https://cricfrenzy.com/public/storage//advertisements/c8243538-ac32-4fc4-871e-77acc1257b54.jpg)
দুই প্রান্তে স্পিনারদের দিয়ে চেপে ধরার চেষ্টা করলেও হুট করেই পেসার মুশফিক হাসানের হাতে বল তুলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে সেই ওভারে ৫৭ রানের ইনিংস খেলা খাওয়াজা নাফে ও খালেদ আহমেদের উইকেট তুলে নেন তরুণ এই পেসার। শেষ বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে মিঠুন যখন হাসান মাহমুদকে উইকেট দিয়ে ফিরলেন তখন চিটাগংয়ের জয়ের আশা একেবারেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা চিটাগংয়ের।
হোল্ডারের কাছ থেকে এমন বোলিং আশা করিনি: মিরাজ
১০ মিনিট আগে![চিটাগংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের সময় মিরাজ, ক্রিকফ্রেঞ্জি](https://cricfrenzy.com/public/storage/images/2-2025/b98c49a24Xc06lQ9230Q2e8c.jpg)
যদিও সেটা হতে দেননি দুই টেইলএন্ডার ব্যাটার আরাফাত সানি ও আলিস আল ইসলাম। তরুণ পেসার মুশফিকের করা শেষ ওভারে ১৫ রান করতে পারলেই ফাইনালে উঠতে পারতো তারা। আলিস ও সানি মিলে সেই সমীকরণ মিলিয়েছেন অবিশ্বাস্যভাবে। সেই ওভারের তৃতীয় বলে রান নিতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন আলিস। ফলে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। সেই সময় ব্যাটিংয়ে এসে ২ বলে ৪ রান করে আউট হয়ে ফেরেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি ব্যাটার যখন আউট হয়ে ফেরেন ফাইনালে যেতে তখনও চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ৪ রান।
ইনিংসের শেষ বলটি খেলার জন্য আবারও আলিসকে পাঠায় চিটাগং। টাইমড আউটের কথা মাথায় রেখে টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা নিজেরাই তাকে প্যাড পড়িয়ে দিচ্ছিলেন। ব্যাটিংয়ে এসে চিটাগংকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছেন আলিস। মুশফিকের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে চার মেরে চিটাগংয়ের জয় নিশ্চিত করেছেন। খুলনাকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ১১ বছর পর বিপিএলে ফেরা চিটাগং। ৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে তাদের প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি চিটাগংয়ের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদকে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন নাফে। একই ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিতে চার মেরেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। ভালো শুরুর আভাস দিলেও তাদের দুজনের জুটি স্থায়ী হয়নি। পরের বলে হাসানের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়েছেন ইমন।
মোহাম্মদ নাওয়াজ সহজ ক্যাচ নিলে বাঁহাতি ওপেনারকে ফিরতে হয় ৪ রানে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে গ্রাহাম ক্লার্কের উইকেটও নিয়েছেন হাসান। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ইংলিশ এই ব্যাটার। ক্লার্কের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৪ রান। দ্রুতই দুই উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন নাফে এবং তালাত।
![promotional_ad](https://cricfrenzy.com/public/storage//advertisements/89bdd065-6293-4dbe-9886-1306f11ad343.jpg)
তারা দুজনে মিলে চিটাগংকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শুরু থেকেই দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা নাফে ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মিরাজের বলে ছক্কা মেরে। পাকিস্তানের তরুণ ব্যাটারের হাফ সেঞ্চুরির পরই ছন্দপতন হয় চিটাগংয়ের। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উইকেট নেন নাসুম। বাঁহাতি স্পিনারের বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে অ্যালেক্স রসের হাতে ক্যাচ দেন ৪০ রান করা তালাত।
চিটাগংয়ের টাকার গরম নেই, তাই দেখাচ্ছে না: মিঠুন
৪ ফেব্রুয়ারি ২৫![গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মিঠুন, ক্রিকফ্রেঞ্জি](https://cricfrenzy.com/public/storage/images/2-2025/6b8cb37ffd8060s60379dd79.jpg)
নিজের পরের ওভারে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর উইকেটও নেন নাসুম। বাঁহাতি স্পিনারের শর্ট ডেলিভারিতে ফাইন লেগ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে টপ এজ হয়ে শর্ট ফাইন লেগে থাকা হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের ওভারে ২ উইকেট নিয়ে চিটাগংয়ের লাগাম টেনে ধরেন মুশফিক। ডানহাতি পেসারের ব্যাক অব লেংথের স্লোয়ার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ৫৭ রান করা নাফে। একই ওভারে ফিরেছেন খালেদ আহমেদও।
তখন চিটাগংয়ের একমাত্র বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে ছিলেন অধিনায়ক মিঠুন। রান তোলার চাপে তিনিও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। হাসানের লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার কাছে আফিফ হোসেনকে ক্যাচ দিয়েছেন মিঠুন। তাতেই ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যাওয়ার কথা চিটাগংয়ের। তবে অবিশ্বাস্য এক সমীকরণ মিলিয়ে চিটাগংকে জয় এনে দেন আলিস ও সানি। খুলনার হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মুশফিক ও হাসান। দুটি উইকেট পেয়েছেন নাসুম।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ৪২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর খুলনার হয়ে হাল ধরেন শিমরন হেটমায়ার ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তারা দুজনে মিলে ৭৩ রান যোগ করেন। অঙ্কন ৪০ রান করে ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হেটমায়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটার আউট হয়েছেন ৬৩ রানে। তাদের দুজনের ব্যাটেই শেষ পর্যন্ত ১৬৩ রানের পুঁজি পায় খুলনা। চিটাগংয়ের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন বিনুরা ফার্নান্দো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
খুলনা টাইগার্স- ১৬৩/৬ (২০ ওভার) (নাইম ১৯, মিরাজ ২, আফিফ ৫, হেটমায়ার ৬৩, অঙ্কন ৪১; বিনুরা ২/২৭)
চিটাগং কিংস- ১৬৮/৮ (২০ ওভার) (নাফে ৫৭, তালাত ৪০, সানি ১৮*, আলিস ১৭*; মুশফিক ৩/৩২, হাসান ৩/৩৪, নাসুম ২/২১)