লিটনের উইকেটে বেশি আনন্দ তাসকিনের, উৎসর্গ করেছেন ছেলেকে

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ
লিটনের উইকেটে বেশি আনন্দ তাসকিনের, উৎসর্গ করেছেন ছেলেকে
১৯ রানে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা তাসকিন আহমেদ, ক্রিকফ্রেঞ্জি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
লেংথে পড়ে তাসকিন আহমেদের লাফিয়ে ওঠা অফ স্টাম্পের একটু বাইরের ডেলিভারিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট এবং কব্জি এগিয়ে খেলার চেষ্টা করলেন লিটন দাস। যা হওয়ার ছিল শেষ পর্যন্ত ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনারের সঙ্গে তাই হয়েছে। লিটনের গ্লাভস ছুঁয়ে বল তালুবন্দী হয়েছে ইয়াসির আলী রাব্বির কাছে। প্রথম ম্যাচে ভালো শুরু করলেও দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে লিটন ফিরেছেন ৫ বলে রানের খাতা খুলতে না পেরেই।

শুধু লিটন নয় পুরো ম্যাচে তাসকিনের পেস আগুনে পুড়েছে ঢাকার ব্যাটাররা। তানজিদ হাসান তামিম, শাহাদাত হোসেন দিপু, শুভম রাঞ্জানে চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, আলাউদ্দিন বাবু এবং মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধও ফিরেছেন একই পথে। ঢাকাকে ১৭৪ রানে আটকে দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা তাসকিন একাই নিয়েছেন ৭ উইকেট। খরচ করেছেন মাত্র ১৯ রান। ৭ উইকেট পাওয়া তাসকিনের কাছে সবার চেয়ে লিটনের উইকেটই বেশি উপভোগ্য ছিল।

ম্যাচ শেষে কোন উইকেট পেয়ে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তাসকিন বলেন, ‘প্রথম বলটা, যেটাই লিটন আউট হলো। আনপ্লেঅ্যাবল ডেলিভারি ছিল মানে যে কোনো ব্যাটারের ওইখানে ব্যাট দিতেই হতো এবং নিয়ে গেছে। এবং এই রকম উইকেটে ক্যারি করলে পেস বোলাররা একটু বাড়তি বুস্টআপ হয় এবং বাংলাদেশে ক্যারি করতেছে মানে ভালো দিক। আর সবগুলো উইকেটই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রথম উইকেটটা বেশি।’

২০১৬ সালে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে প্রথমবার বিপিএলে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন। প্রায় ৮ বছর পর আরও একবার দেশের জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে পাঁচ উইকেটের দেখা পেলেন তিনি। ঢাকাকে গুঁড়িয়ে দেয়ার দিনে বিপিএলের সেরা বোলিং ফিগারের তালিকায় সবার উপরে উঠে গেছেন ডানহাতি এই পেসার। পেছনে ফেলেছেন মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ সামির মতো পেসারদের। 

২০২০ সালে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ১৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন আমির। সেবার খুলনা টাইগার্সের হয়ে ফাইনালও খেলেছিলেন পাকিস্তানের এই পেসার। বিপিএলের সেরা বোলিংয়ের তালিকায় এতদিন দুইয়ে ছিলেন সামি। তাকে নেমে যেতে হয়েছে তিনে। বিপিএলের ইতিহাসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং কার্ডে বাংলাদেশের কারও একজনের নাম থাকবে এটা ভেবে গর্ববোধ করছেন তাসকিন।

ডানহাতি এই পেসার বলেন, ‘ভাইয়া আসলে- ফাইফার তো যে কোনো ফরম্যাটে অনেক বিশেষ। কারণ অনেকবার তিন উইকেট, চার উইকেট পাইছি কিন্তু উইকেটের সঙ্গে ভাগ্যও লাগে পাঁচটা পাইতে। আলহামদুল্লিলাহ এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। যেহেতু আমি বাংলাদেশের ছেলে বিপিএলের ইতিহাসে আমার একটা নাম থাকবে খেলা ছাড়ার পরও , এটা আমার জন্য একটা গর্ব করার মুহূর্ত।’

বিপিএলের পাশাপাশি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবার উপরে যেতে পারতেন তাসকিন। ইনিংসের শেষ বলে মুস্তাফিজুর রহমানকে ফেরাতে হতো তাকে। তবে সেটা করতে পারেননি। যার ফলে মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদরুস ও নেদারল্যান্ডসের কলিন অ্যাকারম্যানের পর তৃতীয় বোলার হিসেবে ৭ উইকেট নিয়ে তাদের সঙ্গেই থাকতে হচ্ছে তাসকিনকে।

৮ উইকেট না পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘না আসলে লোভে যাই নাই। বেশি লোভে গেলে দেখা গেল হাফ ভলি হতে পারত। তখন বলছি একেকটা ওয়ান বোলারের টাইমে আমি ক্লিয়ার ছিলাম। সিচুয়েশন অনুযায়ী কী করা দরকার এবং সেটা করতে পারছি। ভালো লাগছে যে না যখনই ক্যাপ্টেন আমাকে ট্রাস্ট করে নিয়ে আসছি, ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারছি আলহামদুল্লিলাহ।’

সেই সঙ্গে নিজের এমন পারফরম্যান্স ছেলের জন্য উৎসর্গ করেছেন তাসকিন। ডানহাতি পেসার বলেন, ‘না আসলে দিনশেষে আমি যখন ভালো করি বা উইকেট পাই আমার ছেলে আমার বাবা- এরা অনেক খুশি হয়। ডেফিনিটলি ওদের সাপোর্টটাও ইনস্পায়ারেশন। কারণ যেদিন আমি ভালো বোলিং করতে পারি না সেদিন তাসফিন অনেক মন খারাপ করে। আজকে আমি শিওর ও অনেক খুশি। তো এটা তাসফিনের জন্যই।’

আরো পড়ুন: তাসকিন আহমেদ