বিজয় ও সাইফের ব্যাটে আবাহনীর চারে চার

ছবি:

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ সকাল ৯ টায় ডিপিএলের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো আবাহনী লিমিটেড এবং লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ। টুর্নামেন্টের ২১তম এই ম্যাচে সাইফ হাসান এবং আনামুল হক বিজয়ের জোড়া অর্ধশতকে রূপগঞ্জকে ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে আবাহনী।
এদিন ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪৭ রান সংগ্রহ করেছিলো নাইম ইসলামের রুপগঞ্জ। জবাবে ২৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার সাইফ হাসান এবং আনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে দারুণ সূচনা পায় আবাহনী।
এই দুই ব্যাটসম্যান ১৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। আর এই জুটি গড়ার পাশাপাশি দুই ওপেনার সাইফ ও বিজয় তুলে নেন জোড়া হাফসেঞ্চুরি। তবে রুপগঞ্জের স্পিনার মোশাররফ হোসেন উইকেটরক্ষক সালাউদ্দিন পাপ্পুর হাতে সাইফকে ক্যাচ বানিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন।
সাইফ ৭৮ রান করে আউট হলে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বিজয়ও। ৭৭ রান করে আশিকুজ্জামানের বলে এলবিডব্লিউইয়ের শিকার হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। বিজয়ের পর ২০৬ রানের মাথায় নাজমুল হাসান শান্তকে (২৫) সাজঘরে ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হোসেন।
পরবর্তীতে দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরতে ক্রিজে নামেন অধিনায়ক নাসির হোসেন। ৩৪ রান করে দলকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দিয়ে মোশাররফ হোসেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন নাসির। তবে অধিনায়ক ফিরলেও বিপদে পরতে হয়নি আবাহনীকে।
কেননা শেষের দিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং মেহেদি হাসান মিরাজের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়েই রুপগঞ্জের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিতে সক্ষম হয় আবাহনী। ১২ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
মিরাজ ২১ এবং সৈকত ১৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জের পক্ষে ৪১ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন স্পিনার মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও ১টি করে উইকেট নিয়েছেন আসিফ হাসান এবং আশিকুজ্জামান।
লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ ইনিংস-

এবারের ডিপিএল আসরে নিজেদের গত দুই ম্যাচেই দারুণ দুটি জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ দলটি। আর এই দুই ম্যাচেই দলের জয়ের ভিত গড়ে দেয়ার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন রুপগঞ্জ ওপেনার আব্দুল মজিদ।
মোহামেডানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের ১১তম ম্যাচে ব্যাট হাতে ৭০ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ১৬তম ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। খেলেন ১১০ রানের অনবদ্য আরেকটি ইনিংস।
এবার ব্যাট হাতে সেই ফর্মের ধারাবাহিকতা মজিদ বজায় রাখলেন আজ শক্তিশালী আবাহনীর বিপক্ষেও। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ম্যাচে শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেছেন রুপগঞ্জ ওপেনার।
যদিও টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে তাঁ???ে। আর মজিদের সেঞ্চুরি মিসের দিনে তাঁর দল রুপগঞ্জ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪৭ রান নিয়ে ইনিংস শেষ করেছে।
আজ দিনের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ওপেনার সালাউদ্দিন পাপ্পুকে উইকেটরক্ষক আনামুল হক বিজয়ের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছিলেন জাতীয় দলের স্পিনার সানজামুল ইসলাম।
এরপর অভিষেক মিত্রকে সাথে নিয়ে ৫৯ রানের একটি জুটি গড়ে দলকে কিছুটা বিপদমুক্ত করেন আব্দুল মজিদ। তবে ১৮ রান করা অভিষেককে আউট করে এই জুটি ভেঙ্গে দেন স্পিন তারকা মেহেদি হাসান মিরাজ।
অভিষেক ফিরে যাওয়ার একই ওভারে অধিনায়ক নাইম ইসলামকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান মিরাজ। নিজের বলেই নাইমকে ফিরতি ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে মজিদের সাথে ব্যাটিংয়ে যোগ দেন পারভেজ রসুল। মজিদ ও রসুলের ব্যাট থেকে আসে পঞ্চাশঊর্ধ্ব একটি জুটি।
আর এই জুটির মাধ্যমেই দেড়শ রানের কোটা পার করতে সক্ষম হয় রুপগঞ্জ। দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় মজিদকে তাসকিন আহমেদের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান সাকলাইন সজীব।
মজিদ ফিরে গেলে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পারভেজ রসুলও। ৩৩ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর শেষের দিকে মোশাররফ হোসেন এবং নাজমুল হাসান মিলনের ২৯ রানে ভর করে ৮ উইকেটে ২৪৭ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় রুপগঞ্জ।
আবাহনীর পক্ষে ১০ ওভার বোলিং করে ৬১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদ। এছাড়াও সানজামুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ-
আব্দুল মজিদ, সালাউদ্দিন পাপ্পু, অভিষেক মিত্র, নাইম ইসলাম (অধিনায়ক), পারভেজ রসুল, তুষার ইমরান, মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ শহীদ, আসিফ হাসান, আশিকুজ্জামান, নাজমুল হোসেন মিলন।
আবাহনী লিমিটেড-
আনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, সাকলাইন সজীব, নাসির হোসেন (অধিনায়ক), শচীন রানা, সানজামুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ।