প্রতিদিন নতুন স্বপ্ন দেখি - বিজয়

ছবি:

এবারের জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ রান, দুই দুটি ডাবল সেঞ্চুরি। পুরষ্কার হিসেবে ডাক পেয়েছেন আবার জাতীয় দলে। এই সুন্দর সময়ে নিজের খেলা, প্রস্তুতি আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া নিয়ে ক্রিকফ্রেঞ্জিকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এনামুল হক বিজয়।
কোনটা বেশী আনন্দের-দুটো ডাবল সেঞ্চুরি, নাকি দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়া?
অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া বেশী আনন্দের। দুটো ডাবল সেঞ্চুরি করেছি, এটা আমার ব্যক্তিগত অর্জন। কিন্তু দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে অবদান রাখতে পেরেছি, এটাই বড় অর্জন।
দলের সাফল্যটা তাহলে খুব উপভোগ করেন?
আমার কাছে এটাই ভালো লাগে যে, যখন যে টিমের হয়ে খেলছি, তাদের জন্য কিছু কনট্রিবিউট করতে পারছি। যেমন ঢাকা লিগে গতবার গাজী গ্রুপকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পেরেছি। সেই পথে যেটুকু পারি রান করেছি। ন্যাশনাল লিগে গত তিন বছরই পাচ শর ওপরে রান করেছি। এবার ছয়শ রান করেছি। তিন বারই খুলনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এগুলোই বেশী ভালো লাগার বিষয়।
জাতীয় দলে আবার ডাক পেলেন। এটা তো নিশ্চয়ই আনন্দের ব্যাপার?

ন্যাশনাল টিমে তো আমি আগেও ছিলাম। তখন রান করেছি। আবার এখন ন্যাশনাল টিমে ছিলাম না। ডাক পেয়েছি। এভাবেই তো চলে। এটা আমার জন্য ভালো যে, আমার রান করার কথা, সেটা করতে পারছি। তাই হয়তো ডাক পেয়েছি। রান করলে ভালো লাগে। সুযোগ এলে আরো ভালো লাগে।
এই পারফরম্যান্সের পর কী আশা করছিলেন ডাক পাওয়া?
প্রতিদিনই আশা করি। প্রতিদিনই সকালে আরেকটা নতুন ভালো খবর পাবো, এই আশায় ঘুমাতে যাই। আশা করি যে, দিনটা ভালো শুরু হবে। সেই আশায় ছিলাম। গতকাল সকালে এরকম একটা নিউজ পেয়েছি। এখন দেখা যাক, চূড়ান্ত দলে থাকি কি না। তারপর একাদশে খেলার প্রশ্ন আছে। দেখা যাক। আমি সবসময় বড় স্বপ্নের পেছনে ছুটি।
জাতীয় দলের বাইরে থাকায় কী হতাশ ছিলেন?
আগে ছোট ছোট ব্যাপারে মন খারাপ করতাম। এখন অনেক শিখেছি। জাতীয় দলের বাইরে থাকলে অনেক কিছু শেখা যায়। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়। নিজের ভুলত্রুটি থাকলে সেটা কাটিয়ে ওঠা যায়। নিজেকে আরও পরিণত করে তোলা যায়। সবসময় একটা জিনিস মনে হয় যে, আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্য। কোনো না কোনো ভালোর জন্যই হয়তো জাতীয় দলের বাইরে ছিলাম।
আপনাকে নিয়ে কিছু অভিযোগ ছিলো-স্টাইক রোটেট করতে না পারা, পায়ের কাজে দুর্বলতা। এগুলো নিয়ে কী কাজ করেছেন?
কোনো মানুষই তো শতভাগ নিখুঁত না। কোনো খেলোয়াড়ও না। কিছু দোষ-ত্রুটি হয়তো আমারও ছিলো। কিছু হয়তো এখনও আছে। এসব নিয়ে কাজ করি। তবে এগুলো আসলে আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার। অনেক সময় মানুষের এসব কথা কানে গেলে আত্মবিশ্বাস নড়ে যায়। অনেক সময় অনেক কথায় মন খারাপ হয়, ব্যাকফুটে চলে যায়। তখন আতবিশ্বাস পেতে সমস্যা হয়।
নিজেকে কীভাবে উজ্জীবিত রাখেন?
আমি নিজেকে বলি যে, আমার আর্ন্তজাতিকে তিনটা সেঞ্চুরি আছে। ডমেস্টিকে ১৪টা প্রথম শ্রেনীর সেঞ্চুরি আছে। আন্ডার নাইনটিনে খেলেছি। সেখানে ভালো পারফরম্যান্স ছিলো। এসব দেখেই তো আমাকে জাতীয় দলে নেওয়া হয়েছিলো। ফলে ওটুকু যোগ্যতা নিশ্চয়ই আমার আছে বলে নেওয়া হয়ছে। এভাবে নিজেকে আত্মবিশ্বাস দেই। এখন বড় বড় স্কোর আসছে। আমাকে ডেকেছে। আমাকে প্রাথমিক দলে ডেকেছেন ওনারা। এরপর দলে রাখলে একটা বিশ্বাস থেকেই রাখবেন। আমি চেষ্টা করবো সেই বিশ্বাসটার মূল্য দেওয়ার।
এবার জাতীয় লিগে বড় বড় ইনিংস খেললেন। এটার রহস্যটা কী?
অনেক প্রস্তুতি লাগে। অনেক কাজ করতে হয়। বড় ইনিংস খেলা তো একটা ধৈর্যের পরীক্ষা। আমি সে জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছি। ঘন্টার পর ঘন্টা নেটে ব্যাটিং করেছি, ঘন্টার পর ঘন্টা জিম করেছি। এটা আসলে সিনেমার মতো। দেখার সময় বোঝা যায় না, পেছনে কতো কাজ হয়েছে। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সটাও তাই। একটা পারফরম্যান্সের পেছনে অনেক পরিশ্রম থাকে। আমি খুশী যে, আমার সেই পরিশ্রমটা কাজে লেগেছে।