মুশফিক, তামিম, মুমিনুলদের আক্ষেপের বাণী

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। সেই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা পরবর্তী সিরিজগুলোতেও বজায় রাখার লক্ষ্য ছিল টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তাঁর।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে চলতি বছরের সবকয়টি টেস্ট সিরিজ। ফলে এবছর পারতপক্ষে আর মাঠে নামা হচ্ছে না মুশফিক তথা বাংলাদেশ দলকে। অথচ এবারই সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ (১০টি) খেলার কথা ছিল টাইগারদের।
তাই স্বাভাবিকভাবেই বেশ হতাশ মুশফিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'আমার খারাপ লাগছে কারণ আমি শেষ টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলাম, আমি ভালো ছন্দে ছিলাম, আমার ভালো প্রস্তুতিও ছিল। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে এই বছরে ভালো টেস্ট খেলতে পারবো। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।'

অবশ্য পরিস্থিতি মেনে নিচ্ছেন ৩৩ বছর বয়সী মুশফিক। আল্লাহ্র উপর আস্থা রেখে সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে চান তিনি। মুশফিকের ভাষ্যমতে, 'প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর তো কারোই হাত নেই। নিজেদেরকে ফিট এবং প্রস্তুত রাখাটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। সামনে অবশ্যই আমাদের অনেকগুলো টেস্ট ম্যাচ রয়েছে। আমি সবসময় বিশ্বাস করি আল্লাহ্ যা করেন মানুষের ভালোর জন্যই করেন। যখন সুযোগ তৈরি হবে, আমাকে প্রস্তুত থাকতে হবে সেটা গ্রহণ করার জন্য এবং আমার দলকে পরবর্তী লেভেলে নিয়ে যেতে হবে।'
দীর্ঘ দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকায় হতাশ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবালও। আবার কবে ১০টি টেস্ট খেলার সুযোগ আসবে এক বছরে সেটি ভেবেই মূলত আক্ষেপ করেছেন তিনি। যদিও মুশফিকের মতো বাস্তবতা মেনে নিচ্ছেন পঞ্চপান্ডবের অন্যতম এই সদস্য।
তামিম বলেন, 'এই হতাশা কোনোভাবেই বর্ণনা করা যাবে না। আমরা এক বছরে ১০ টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাই না খুব একটা। কে জানে কবে এই সুযোগ আবার আসবে! অবশ্যই এটা খারাপ একটি অনুভূতি। তবে সময়টা এমনই যে এখন ক্রিকেট নিয়ে খুব বেশি ভাবার অবকাশ নেই। আমার এবং পরিবারের নিরাপত্তাই এখন মুখ্য বিষয়। যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে অনেক ক্রিকেট খেলত পারবো।'
কভিড-১৯ এর কারণে সিরিজগুলো স্থগিত করায় পরবর্তীতে নতুন সূচিতে সেগুলো আয়োজন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তামিম। তিনি বলেন, 'ইতিবাচক দিক হলো কোনো সিরিজ বাতিল হয়নি। বরং সবগুলো স্থগিত করা হয়েছে। এর মানে হলো সেগুলো আবারো আয়োজন করার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি আশা করি খেলাগুলো নতুন সূচিতে মাঠে গড়াবে যখন কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। এরপর দেখা যাবে আমাদের অনেকগুলো ম্যাচ খেলতে হবে।'
বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হকও সিরিজ স্থগিত হওয়ায় মুশফিক এবং তামিমের মতো হতাশা প্রকাশ করেছেন। টেস্ট খেলার সুযোগ কমে যাওয়ায় আক্ষেপ ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে। সাদা পোশাকের নিয়মিত খেলোয়াড় মুমিনুল বলেন, 'আমরা খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পাই না। এবার অনেক বড় একটি সুযোগ এসেছিল। আমরা যারা নিয়মিত টেস্ট খেলি তাঁদের জন্যও এটা বড় সুযোগ ছিল। এই হতাশা সবসময় থাকবে। তবে এই মহামারী এখন অব্যাহত রয়েছে। কারো কিছু করার নেই এক্ষেত্রে। জীবনের চেয়ে বড় কিছু নেই।'
তবে লকডাউনের এই সময়টাকে উপযুক্তভাবে কাজে লাগানোর পক্ষে মত দিয়েছেন মুমিনুল। তাঁর বক্তব্য, 'আমি এমন ব্যক্তি নই যে খেলা মাঠে গড়াচ্ছে না দেখে হতাশ হচ্ছি। বরং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেয়াকে আমি শ্রেয় মনে করি। যখন খেলা শুরু হবে তখন দেখা যাবে অনেক ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের। তখন একের পর এক ম্যাচে মাঠে নামতে হবে। এটা খুবই পরিশ্রমের ব্যাপার হবে। সেই সময়ের জন্য নিজেকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। এই বিরতি যতটা সম্ভব কাজে লাগানো যায় ততটাই ভালো।'