ক্রিকেটে আসার গল্প শোনালেন রুমানা

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের পরিচিত মুখ রুমানা আহমেদ। ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় ২৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই রুমানাই একটা সময় জানতেন না দেশের ক্রিকেটে নারীদের একটি দল আছে!
২০০৭ সালে সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। সেবার এসিসি কাপে প্রথমবার খেলতে নেমেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি জেতে তারা। কিন্তু রুমানা নারী দলের খবর জানতে পারেন তারও অনেক দিন পরে। ক্রিকবাজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ক্রিকেটে আসার গল্প শুনিয়েছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। জানিয়েছেন ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা এবং আবেগের কথা।

ক্রিকেট খেলার আজন্ম লালিত এক স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছেন রুমানা। টিভিতে পুরুষদের ক্রিকেট খেলা দেখতে দেখতে নিজেও একটা সময় খেলাটির প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। তার উপর নিজের বড় ভাই ইফতেখার হোসেন সেলিমও ছিলেন ক্রিকেট পাগল। সবমিলিয়ে পোয়াবারো বলা চলে রুমানার।
রুমানা বলেন, 'আমি শুরু থেকেই ক্রিকেটকে ভালোবাসি। এটি আমার প্রিয় খেলা। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন টিভিতে দেখতাম ছেলেরা ক্রিকেট খেলেছে। আমার ভাইদেরকেও দেখতাম বাসায় খেলতে। এটাই আমাকে আকর্ষণ করেছে এবং এরপরে আমি খেলাটিকে ভালোবেসে ফেলি। আমি সবসময় একটি স্বপ্ন দেখতাম যে কখনো যদি নারীদের ক্রিকেট আমাদের দেশে শুরু হয় তাহলে আমি সেখানে খেলবো। আমি আমার ভাইদের সঙ্গে খেলতাম এবং উপভোগ করতাম। ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমি জানতাম না যে বাংলাদেশের নারী জাতীয় দল রয়েছে।'
বড় ভাই সেলিমের মাধ্যমেই মূলত ক্রিকেটে আসা রুমানার। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে সর্বপ্রথম রুমানাকে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর ভাই। পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন কোচ এবং পরামর্শক ইমতিয়াজ হোসেন পিলুর সঙ্গে। ভাইয়ের কাছেই প্রথম তিনি জানতে পারেন খুলনার আঞ্চলিক দলের ব্যাপারে। সবমিলিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপেই বড় ভাইয়ের সাহায্য পেয়েছেন রুমানা।
জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার বলেন, 'আমাদের গ্রামের বাড়ি খুলনাতে একটি স্থানীয় পত্রিকা ছাপানো হয় যার নাম পূর্বাঞ্চল। একদিন আমার ভাই জানতে পারলো যে নারীরা দেশে ক্রিকেট খেলে এবং খুলনারও একটি দল আঞ্চলিক দল রয়েছে। তাই আমি তখন বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। বোর্ড পরীক্ষার পরে আমার ভাই খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নিয়ে যায় আমাকে যেখানে খেলোয়াড়রা অনুশীলন করে। আমরা অনুশীলন সেশনের কিছু তথ্য পাই, একটা পর্যায়ে জানতে পারি যে জেলা দল এরই মধ্যে ঢাকায় গিয়েছে জেলা প্রতিযোগিতায়। কোনো কোচ কিংবা কেউ ছিল না সেখানে, এটি আসলে বেশ খারাপ লাগার ব্যাপার। যখন কোচেরা আসলো আমি সেখানে আবার গেলাম এবং আমার কোচ ও পরামর্শক ইমতিয়াজ হোসেন পিলুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। এরপর আমি সালমা খাতুন, আয়েশা রহমান এবং জাহানারাদের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করি।'
২০১১ সালে ওয়ানডে অভিষেকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন রুমানা আহমেদ। ডান হাতি ব্যাটসম্যান এবং ডান হাতি লেগ ব্রেক বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ওয়ানডে হ্যাট্রিক করার বিরল কীর্তি গড়েছেন রুমানা। ৩৮টি ওয়ানডেতে ৪২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া ব্যাট হাতে ২৪.৩২ গড়ে ৮২৭ রান সংগ্রহ করেছেন এই অলরাউন্ডার। যেখানে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর।