বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে

ইমরুল-সাইফুদ্দিনে বড় স্কোরে বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 18:23 রবিবার, 21 অক্টোবর, 2018

|| ডেস্ক রিপোর্ট || 

বাংলাদেশঃ ২৭১/৮ (৫০ ওভার)

ইমরুল ১৪৪, সাইফুদ্দিন ৫০ 

কাইল জারভিস ৪/৩৭

শেষের ঝড়ঃ উইকেটে জমে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যান জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিপক্ষে চড়াও হন। হরিজন্টাল ব্যাটে বেশ কয়েকবার জিম্বাবুয়ের পেসারদের বাউন্ডারি ছাড়া করেন ইমরুল। ফাইন লেগ দিয়েও রান আদায় করে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস আরও লম্বা করতে থাকেন ইমরুল। ৪৯তম ওভারে এসে জারভিসের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ আউট হয়ে ইমরুলের ম্যারাথন ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। ১৪০ বলে ১৪৪ রানে থামেন ইমরুল কায়েস।

থেমে ছিলেন না সাইফুদ্দিনও। কাভার বাউন্ডারি ও লং অনে বাউন্ডারি খুঁজে নিয়ে বাংলাদেশের স্কোর সমৃদ্ধ করতে থাকেন তিনি। শেষ ওভারে আউট হলেও দলকে ৫০ ওভার শেষে ২৭১/৮ স্কোরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। 

যোগ্য সঙ্গী সাইফুদ্দিনঃ ইমরুল কায়েসকে সঙ্গ দিয়েছেন তরুন সাইফুদ্দিন। এক প্রান্ত আগলে রেখে ইমরুলকে স্ট্রাইকে রেখে খেলে গেছেন তিনি। ইমরুলের সাথে গড়েছেন সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ। মূলত এই জুটিতে ভর করেই বাংলাদেশের স্কোর আড়াইশ ছাড়িয়ে যায়। ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচেই অর্ধশত পূর্ণ করেন তিনি। 

জারভিসের ম্যাচ ঘুরানো স্পেলঃ মুশফিকের বিদায়ে মিথুনকে নিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন ইমরুল কায়েস। জুটি গড়ে বাজে বলকে শাসন করে বাংলাদেশকে সঠিক পথে ফেরান ইমরুল। উইকেটে কিছু সময় কাটিয়ে স্পিনাদের ওপর চড়াও হন মিথুন। কিন্তু বোলিং বদলে উইকেট আদায় করে নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। জারভিসের ক্রস সিম ডেলিভারিকে থার্ড ম্যানে খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন ৩৭ রান করা মিথুন।

উইকেটে জমে যাওয়া মিথুনের বিদায়ের পর অভিজ্ঞ রিয়াদের ব্যাটেই চেয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২৮ ওভারে মিথুনকে ফিরিয়ে নিখুঁত লাইন লেন্থে রিয়াদকেও শুন্য রানে আউট করেন জিম্বাবুয়ের এই ফ্রন্ট লাইন পেসার। 

একই স্পেলের পরের ওভারে এসে ফিফথ স্ট্যাম্পে বল করে ফাঁদে ফেলেন সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজকে। অন্য প্রান্তে ৭৩ রানে অপরাজিত ইমরুল সতীর্থদের আসা যাওয়া দেখছিলেন।

উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় উইকেটে জমে যাওয়া এক মাত্র ব্যাটসম্যান ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের ব্যাটে চেয়ে ছিল বাংলাদেশ। তরুন অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিনকে নিয়ে জুটি গড়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখেন তিনি। একই সাথে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকেন তিনি। 

ইনিংসের ৪৩তম ওভারে এসে ত্রিপানোর বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমরুল। ১১৮ বল খেলে ৮টি চার ও ৩টি ছয়ে দলের প্রয়োজনে অসাধারণ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এর আগে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। 

ইমরুলের ফিফটিঃ মুশফিক ফিরলেও ইনিংসের ২০তম ওভারে ব্যক্তিগত অর্ধশত পূর্ণ করেন ইমরুল কায়েস। ৫টি চার ১টি ছয়ে অর্ধশত পূর্ণ করেন তিনি।   

অসময়ে উইকেটের পতনঃ ইমরুল ও মুশফিকের জুটি ফুলে ফেঁপে উঠছিল, ঠিক তখনই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সময়ে ইনফর্ম মুশফিককের উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। তরুণ লেগি ব্র্যান্ডন মাভুটার লেগ সাইডের নিরীহ বলে ব্যাট ছুঁইয়ে আউট হন নিয়ন্ত্রিত ইনিংস খেলতে থাকা মুশফিক। ২০ বলে ১৫ রান করে ইনিংসের ১৫তম ওভারে দলীয় ৬৬ রানে আউট হন তিনি।

 

রাব্বির তিক্ত অভিষেকঃ লিটনের বিদায়ে তিন নম্বরে কঠিন পরীক্ষা দিতে নামে অভিষিক্ত ফজলে রাব্বি। পরীক্ষাটা আরও কঠিন করে তুলেন লাইন লেন্থ খুঁজে পাওয়া চাতারা। লিটনকে ষষ্ঠ ওভারে বিদায় করে একই ওভারে ব্যাক অব অ্যা লেন্থ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে কিপার টেইলরের হাতে শুন্য রানে ধরা পড়েন তিনি। এক ওভারে ডাবল স্ট্রাইকে বাংলাদেশকে ১৭ রানে দুই উইকেটের দলে পরিনত করে ছাড়েন চাতারা।

হিট অ্যান্ড মিসঃ নয় মাস পর ঘরের মাঠে ফিরে লিটন দাস ও ইমরুল কায়েসের নতুন ওপেনিং জুটিকে শুরুতে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনারের জন্যই দারুন সুযোগ ছিল, বড় কিছু করার। কিন্তু ইনিংসের শুরুতে দুই ব্যাটসম্যানই বড় শটের সন্ধানে ছিলেন।

সন্তোষজনক সূচনা করতে ব্যর্থ হন ইমরুল ও লিটন। প্রথম পাঁচ ওভারেই রান আউটের সুযোগ দিয়েছিলেন সফরকারীদের। ক্যাচ তুলেছিলেন লিটন, রক্ষা পেয়েছেন অল্পের জন্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। 

ষষ্ঠ ওভারে টেন্ডাই চাতারাকে মিড অফের ওপর দিয়ে ৩০ গজ ছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন লিটন। লেন্থ বলকে স্টেপ আউট করে বাউন্ডারি আদায় করে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। টাইমিংয়ের গড়বড় বিপদ ডেকে আনে লিটনের। 

বাংলাদেশ একাদশ- 

লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস, ফজলে মাহমুদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), নাজমুল ইসলাম অপু, মুস্তাফিজুর রহমান।

জিম্বাবুয়ে একাদশ-

হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), চিপাস ঝুয়াও, ক্রেইগ আরভিন, ব্র্যান্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), শন উইলিয়ামস, পিটার মুর, সিকান্দার রাজা, ডোনাল্ড তিরিপানো, ব্র্যান্ডন মাভুটা, কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা।