নতুন শঙ্কায় তাসকিন

ছবি:

পিঠের ইনজুরির কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের শেষ দুই রাউন্ডে খেলতে পারেননি টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজের জন্য ঘোষিত ৩১ সদস্যের প্রাথমিক দলে ছিলেন তিনি।
তবে পুরোপুরি ফিট না হয়ে ওঠায় আফগানিস্তান সিরিজের চূড়ান্ত দল থেকে বাদ পড়েছেন এই পেসার। অনিশ্চয়তা আছে তাঁর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নিয়েও। দৈনিক প্রথম আলোর সাথে আলাপকালে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। তাসকিনের পিঠের ব্যাথাটা জটিল আকার ধারণ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
‘তাসকিনের পিঠের চোটটা ডিস্ক সম্পর্কিত। বড় সমস্যা হচ্ছে এটা নিয়ে কিছু অনুমান করা যায় না। আজ ভালো তো কাল বা পরশু কী হবে আমরা অনুমান করতে পারি না। দেখা যাচ্ছে দু-তিন দিন ভালো অনুশীলন করেছে, তৃতীয়-চতুর্থ দিনে ব্যথা বেড়ে গেছে। ওর যেটা হয়েছে, দু-তিন দিন খুব ভালো অনুশীলন করেছে, বোলিং করেছে। বাসায় গিয়ে আবার ব্যথা বেড়ে গেছে। ডিস্কের সমস্যা এমনই। ভালো-খারাপের মধ্য দিয়ে যায়। এ ধরনের চোটে পড়া খেলোয়াড়কে নিয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিকল্পনা করতে অসুবিধা হয়ে যায়। সব ভালো, রিহ্যাব করছে। হঠাৎ দেখা গেল ম্যাচের আগে ওর ব্যথা বেড়ে গেছে। সব চেষ্টাই বৃথা! তাঁকে নিয়ে কোচের দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা করা কঠিন।’

তাসকিনকে সারিয়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই বিসিবির কাছে। ফলে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বিবেচনার বাইরে চলে যেতে পারেন তিনি। তাসকিনের পিঠের ইনজুরির সাথে কোমরেও একটা ইনজুরি আছে। তবে এটা নিয়ে বিচলিত নন বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ।
‘ওর এমআরআই করে দেখেছি কোমরের সমস্যাটা এত বেশি নয় যে অস্ত্রোপচারে যেতে হবে। ওই পর্যায়ে এটা যায়নি। কিন্তু কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টেও হচ্ছে না। শুধু ফিজিওথেরাপি বা রিহ্যাবেও এটা ভালো হচ্ছে না। আমাদের এ দুটির মাঝামাঝি কিছু করতে হবে। সেটা হতে পারে ইনজেকশন। দু-এক দিনের মধ্যে একটি ইনজেকশন দেব। এটা মেরুদণ্ডের মধ্যে দিতে হবে। এটা আন্দাজে দেওয়া যায় না। দিতে হলে আলাদা ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
দু-এক দিনের মধ্যে গ্রিন রোডে ঢাকা পেইন ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে তাসকিনের ইনজেকশন দেওয়ার কথা ভাবছে বিসিবি। এর ফলে তাসকিনের ইনজুরির দীর্ঘ মেয়াদে সমাধান হবে কিতা তা নিয়ে সন্দিহান বিসিবিও। সবকিছু না বুঝে অস্ত্রোপচারেও যেতে পারছেন না চিকিৎসকরা। এমনকি তাকে দেশের বাইরেও চিকিৎসার জন্য পাঠানো যাচ্ছে না।এমনটাই জানিয়েছেন দেবাশীষ চৌধুরী।
‘এটা সাময়িক ব্যথামুক্ত করলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য হয়তো নয়। সাময়িক ব্যথামুক্ত হলে সে অবশ্য খেলতে পারবে। এটার স্থায়ী সমাধান অস্ত্রোপচার। আগেই বলেছি, তাসকিনের চোটটা অস্ত্রোপচারের পর্যায়ে যাইনি। মাঝামাঝি অবস্থায় ঝুলছি আমরা। অনেক পেস বোলারের এই চোট থাকে। ব্যথা কমে, আবার বাড়ে। খুবই কম খেলোয়াড়ের অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার করেও যে শতভাগ সমাধান হয়, সেটির নিশ্চয়তাও নেই। যেমন রাজুর (আবুল হাসান) অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। ইনজেকশনেও ব্যথা কমেনি। তাসকিনের ক্ষেত্রে সরাসরি অস্ত্রোপচারে যেতে পারব না। আগে ইনজেকশন দিতে হবে। এভাবে এগোবে। মাঠে ফিরলেও আপাতত তাঁকে টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডের মধ্যে রাখতে হবে। বড় পরিসরের ক্রিকেটে তাঁকে খেলানো যাবে না, এতে ব্যথা আরও বেড়ে যেতে পারে।’