রুপান্তরের গল্প...

ছবি:

শেষ চার বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। থেমে ছিলেন না টেস্টেও। ক্যারিয়ারের শুরুতে যেমন শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতেন সেখান থেকে সরে এসেছেন।
ম্যাচের পরিস্থিতি রপ্ত করে নিজেকে সেভাবেই পরিচালিত করছেন। তবে এতে সমস্যাও হয়েছে বেশ কিছু। কেননা সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল তার।
যদিও এসময়ে বিপিএলে প্রানবন্ত ছিলেন তামিম। কিন্তু জাতীয় দলের ম্যাচে তো আরও অনেক চাপ! টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের অবস্থাও ভালো ছিল না টি-টুয়েন্টির জন্মলগ্ন থেকেই।
তাই তামিমকে অনেক বেশী বুঝে শুনেই খেলতে হত। আর কেন যেন সেভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারছিলেন না তামিম। ২০০৭ সালে অভিষেকের পর থেকে এই ফরম্যাটে নিষ্প্রাণ ছিলেন তিনি। অতীত ইতিহাস টেনে আনা অর্থহীন।
তবে ২০১৪ সালের পর ওয়ানডেতে নিজের পুনর্জাগরন ঘটালেও টি-টুয়েন্টিতে তামিম ছিলেন প্রাণহীন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত খেলেছেন মোট ৩৩ টি টি-টুয়েন্টি।
এর মধ্যে ছয়টি ইনিংসে ত্রিশ ছুঁতে পেরেছিলেন তিনি। অবশ্য এর মধ্যে ওমানের বিপক্ষে একটি সেঞ্চুরিও (২০১৬ সালে) আছে তার। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে আছে ৮৩* রানের ইনিংস।

তবে টি-টুয়েন্টিতে এই বছরটি তামিম শুরু করেছেন ভিন্ন আঙ্গিকে। দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি টি-টুয়েন্টি খেলে করেছিলেন ২৯ রান (২৩ বলে, সিলেট)।
এর দুইদিন পরেই দুবাইতে উড়ে গেলেন পিএসএলে অংশ নিতে। সেখানে পাঁচটি ম্যাচের দুটিতে ১১ করে আউট হলেও বাকি তিনটি ম্যাচে পরিণত তামিমকেই দেখা গিয়েছে।
এর একটিতে তিনি করেন ২৯ বলে ৩৯ রান; আরেকটিতে করেন ৩৮ বল খেলে ৩৬ রান; আর বাকিটিতে করেন ১৭ বল খেলে ৩০ রান। এরপরেই জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করতে শ্রীলংকায় উড়াল দেন তামিম।
নিদাহাস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে অবশ্য ব্যর্থ ছিলেন (১৫ রান)। তবে জয়ের সুর বেঁধে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পরের ম্যাচেই। মুশফিকীয় দিনে ২৯ বল খেলে করেছেন ৪৭ রান।
এরপরে আবারো ভারতের বিপক্ষে ভালো করার প্রচেষ্টায় ছিলেন তামিম (১৯ বলে ২৭)। তারপরে আসরের অঘোষিত সেমিফাইনালে দলকে জেতাতে করেন ৪২ বল খেলে ৫০ রান।
অর্থাৎ, ২০১৮ সালে তামিম যে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটেও নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করছেন, সেটা বোঝা যায় নিমেষেই। আর ঠাণ্ডা মাথার তামিম যেন আরও ক্ষুরধার।
সোহান-সাকিবদের প্রতিবাদী মুখরতায় কলোম্বোর প্রেমাদাসা যখন আরও হিংস্র, যখন কুশল মেন্ডিসও তাদের স্বাধীনতার কাপে ফাইনালের মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে ব্যস্ত ঠিক তখনই হিমশীতল মস্তিষ্কে কুশলকে বাহুতে জড়িয়ে সাম্যের গান শোনান তামিম।
মাঠে পুরো বাংলাদেশ দল মেজাজ হারালেও তামিম ছিলেন তামিমীয় ভঙ্গিতে। তবে এই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে অন্যায় কিছু হলে চুপ থাকতেন না তিনি।
ম্যাচ শেষে ক্যামেরার সামনে তামিমের বক্তব্য, "যেহেতু এই ম্যাচে আমরা জিতেছি, তাই এই ম্যাচ নিয়ে আমরা কিছুই বলবো না আর!"