বিসিবি ‘জোড়াতালি’ দিয়ে চলছে, স্বীকার করলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
‘বর্তমানে এখন যে বোর্ড আছে সেটা কোন রকমে চলছে।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের এমন অভিযোগ স্বীকার করেছেন আসিফ মাহমুদ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বিসিবি জোড়াতালি দিয়ে চলছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পরিবর্তনের ফলে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠজনরা গা ঢাকা দেন। বিসিবির সবশেষ কমিটিতে সভাপতি হিসেবে ছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। তিনি আবার বিগত সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। পরিচালক হিসেবে যারা ছিলেন তাদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে সরকারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এমন অবস্থায় সরকার পরিবর্তনের পর তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বোর্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক ফারুক আহমেদকে। পরিচালক হিসেবে যুক্ত করা হয় নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে। তারা দায়িত্ব নেয়ার পর খালেদ মাহমুদ সুজনসহ বেশ কয়েকজন পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। বিসিবিতে নিয়মিত না হওয়ায় পাপনসহ ১১ জনের পরিচালক পদ বাতিল করা হয়।

পর্যাপ্ত পরিচালক না থাকায় ফারুক, নাজমুল, ফাহিম সিনহা, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, আকরাম খান ও মাহবুব আনামদের নিয়ে চলছে বিসিবি। আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও বেশ কয়েকজন বেশ কয়েকটি বিভাগের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন আসিফ। সেখানে আমিনুলের অভিযোগ তুলে ধরার পর ক্রীড়া উপদেষ্টা তা স্বীকার করেছেন।
আসিফ বলেন, ‘যখন দায়িত্ব নিই, তখন বিসিবির লোকজনকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। নতুন পরিচালক নিয়োগের মাধ্যমে স্থবিরতা কাটানোর চেষ্টা চলছে। এছাড়া প্রতিটি ফেডারেশনের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে প্রতিবছর কার্যক্রমের রিপোর্ট ও অডিট রিপোর্ট দেওয়া হবে। কেউ যদি দুর্নীতি করে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে ফুটবলসহ বেশ কিছু ফেডারেশন স্বায়ত্তশাসিত। তাই সেখানে সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। এটা বাস্তব যে বিসিবি জোড়াতালি দিয়ে চলছে। বিসিবিতে নতুন পরিচালক নিতে হবে।’
বিসিবির এমন সংকটের পেছনে রাজনীতির বড় ভূমিকা দেখছেন আসিফ। ক্রীড়া উপদেষ্টা মনে করেন, বিসিবিতে রাজনীতিকরণ না করা হলে তারা ধারাবাহিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতো। তিনি বলেন, ‘বিসিবিতে তো ধারাবাহিকতা ভাঙার কোনো কথা ছিলো না। যদি বিসিবিতে রাজনীতিকরণ না করা হতো, তাহলে দেশে পরিবর্তন আসলেও বিসিবি তার মতোই থাকতে পারতো, ধারাবাহিকভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতো।’
আগামী৩০ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসর। টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়াম ও সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সংস্কার করছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। স্টেডিয়ামগুলো সরকারের হওয়ায় নিজেদের দায়িত্ব থেকেই এমন কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিসিবির সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দেনা-পাওয়ার বিষয় থাকলে সেটা আলাদাভাবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আসিফ বলেন, ‘স্টেডিয়ামগুলো সরকারে অধীনে। তাই এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দেনাপাওনার বিষয় থাকলে সেটি আমরা আলাদাভাবে দেখব।’