বাংলাদেশের কোচ হতে আগ্রহী সালাহউদ্দিন

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দ্বিতীয় মেয়াদে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ফেরানোর সময় থেকেই প্রধান কোচের সহকারী হিসেবে একজন স্থানীয় কোচকে নিয়োগ দিতে আগ্রহী ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যদিও পরবর্তীতে সেটা খুব বেশি ফলপ্রসূ হয়নি। হাথুরুসিংহে চাকরি ছাড়ার আগ পর্যন্ত তার সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন নিক পোথাস। সাউথ আফ্রিকান কোচও ছিলেন হাথুরুসিংহের পছন্দেই। সহকারী কোচ হিসেবে স্থানীয়দের রাখতে চাইলেও সেটাতে নিজে দায়িত্ব নিতে খুব বেশি আগ্রহী ছিলেন না মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ক্রিকেট বোর্ডে রদবদল হওয়ায় প্রধান কোচ হিসেবে সবার পছন্দ ছিলেন তিনি। বোর্ড থেকেও এমন আভাস মিলেছে কয়েকবার। যদিও হাথুরুসিংহে বিদায় করার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ফিল সিমন্সকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচকে নিয়োগ দেয়ার পর তার সহকারী হিসেবে সালাহউদ্দিনকে বিবেচনা করছে বিসিবি। গুঞ্জন আছে, দেশসেরা এই কোচও সেই দায়িত্ব নিতে ইতিবাচকই আছেন।
১৯ অক্টোবর (শনিবার) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবির কোচিং প্রোগ্রামে ‘গেস্ট লেকচারার’ হিসেবে এসেছিলেন সালাহউদ্দিন। সেখান থেকে বের হয়ে কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে চারটি বিপিএলে শিরোপা জেতা কোচ নিশ্চিত করলেন বিসিবির সঙ্গে তার চলমান আলোচনার কথা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সহকারী কোচ হওয়ার ইচ্ছের কথাও প্রকাশ করে রাখলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘(কাজ করা) কেন হয়নি এই কারণগুলো আমি আগেও একবার বলেছি। আমার সঙ্গে কথা হচ্ছে (এখন)। দেখি কী হয়। একেবারে যে ইচ্ছে নাই, তা না। ইচ্ছে আছে। কিন্তু সবকিছুই তো...একটা জিনিস আপনাদের বুঝতে হবে আমি বোর্ডের কর্মী না। আমি শেষ দশ বছর বা ১৫ বছর বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না।’
২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন সালাহউদ্দিন। পরবর্তীতে ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ছিলেন ফিল্ডিং কোচ। তবে বিসিবির চুক্তিবদ্ধ কোচ না হওয়ায় পরের প্রায় দেড় দশকে বোর্ডের সঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি তাকে। বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পর বিপিএল, ডিপিএলের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ও ক্লাবের কোচিং করিয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমানে মাসকো ক্রিকেট একাডেমিতেও কাজ করছেন তিনি। চাইলেই সবগুলো হুট করে ছেড়ে দেয়া যায় না বলে জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর আমার পেট চালাতে হয়েছে বাইরের অর্গানাইজেশনের সঙ্গে। কোনো কিছু আমার হুট করে ফেলা আসাও সম্ভব না। আমি যদি বোর্ডের কোচ হতাম, যখন বলতো তখনই আমি ঢুকে যেতে পারতাম। কিন্তু এখানে তো আমার অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। কারণ তারা আমাকে এত বছর খাইয়েছে, পরিয়েছে। তাদেরকে তো আমি হুট করে ফেলে আসতে পারবো না। সবকিছু একটা সময়ের ব্যাপার এবং চিন্তা-ভাবনার ব্যাপার। সবকিছু যেন সুন্দর হয়, এটা হলে সবার জন্যই ভালো হবে।’
বাংলাদেশের কোচ হতে হলে বাকি সব প্রতিষ্ঠান, ক্লাব ও ফ্র্যাঞ্চাইজির চাকরি ছাড়তে হবে সালাহউদ্দিন। এমনটা হলে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেয়ার পর হুট করে চাকরি গেলে বিপাকে পড়তে হবে তাকে। সবশেষ যখন বাংলাদেশের হয়ে কাজ করেছেন তখন কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই চাকরি হারিয়েছিলেন। এমন অভিজ্ঞতার কারণেই সিদ্ধান্ত নিতে ভাবতে হচ্ছে দেশসেরা এই কোচ। তবে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কারণেই এমনটা হচ্ছে তা নয়। সালাহউদ্দিন মনে করেন, সবকিছুর একটা প্রসেস থাকা উচিত।
তিনি বলেন, ‘দেখুন, সবকিছু যে অর্থনৈতিক ব্যাপার তা না। আমার একটা বাজে অভিজ্ঞতা কিন্তু আগে হয়েছে। আমি যখন সহকারী কোচ ছিলাম, তখন আমার একটা বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেটা হয়তো আমার মনের ভেতর এখনও আছে। যেহেতু আমি তখন সহকারী কোচ ছিলাম, হঠাৎ করে আমাকে কেউ জানে না, আমি বাসায় বসে টিভিতে দেখবো বাচ্চা কোলে নিয়ে; সেটা তো আমাকে হিট করতেই পারে।’
‘যে না আসলে একটা প্রসেস থাকা উচিত। যখন আপনি আমাকে রাখবেন না, যেকোনো অফিসে একটা অফিশিয়াল প্রসিডিউর থাকে। যেমন আপনারা হাথুরুসিংহেকে বাদ দিয়েছেন, তাকে তো জানিয়ে নিয়েছেন যে তুমি থাকবা না। আমাদের সময় কেন এমন হবে। আমি দেশি দেখেই হয়তো এরকম হয়েছে। অনেক সময় সম্মানটা একটা বড় ফ্যাক্টর। আপনাকে সেভাবে যদি গুরুত্ব না দেওয়া হয়, ট্রিট করা না হয়; তখন অনেক সময় অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়।’