মিরপুরের কান্নাভেজা বিকেলের কথা মনে পড়ছিল তাসকিনের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
২০১৯ বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের চেয়ে এক উইকেট নিয়ে সবার উপরে ছিলেন সাকিব আল হাসান। যদিও এক ম্যাচ বেশি খেলেছিলেন তারকা এই অলরাউন্ডার। দুইয়ে থেকে বিপিএল শেষ করার ফল হিসেবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টেস্ট ডাক পেয়েছিলেন তাসকিন। যদিও গোঁড়ালির চোটে কিউইদের বিপক্ষে খেলতে পারেননি তিনি।
শুধু নিউজিল্যান্ড নয় গোঁড়ালিতে পাওয়া সেই চোট ডানহাতি এই পেসারকে ছিটকে দিয়েছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকেও। ফিট হয়ে উঠলেও ম্যাচ ফিটনেস নেই তাসকিনের, এমনটা জানিয়েছিলেন নির্বাচকরা। ডিপিএলে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলে পরীক্ষা দিলেও পাশ করতে পারেননি তিনি। অর্থাৎ নির্বাচকদের মন জয় করতে পারেননি তাসকিন। যার ফলে তাকে ছাড়াই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সুযোগ না পেয়ে সেদিন মিরপুর থেকে কান্নাভেজা চোখে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাসকিন। কেঁদেছিলেন বিসিবির একাডেমি ভবনের ভেতরে বসেও। নিশ্চিতভাবেই তাসিকনের জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম মুহূর্তের একটি এটি। আরও একবার এমন মুহর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছিলেন তাসকিন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টির আগে সাইড স্ট্রেইনের চোটে পড়েন ২৯ বছর বয়সী এই পেসার। যার ফলে শেষ ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি।

বিশ্বকাপে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সহ-অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানে উঠেছেন তাসকিন। তবে কবে নাগাদ তাসকিন পুরোপুরি ফিট হবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদিও প্রথম ম্যাচ থেকেই তাকে পাওয়ার আশার কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। এদিকে তাসকিনের এমআরআই রিপোর্টের অপেক্ষা দুদিন পিছিয়ে দল ঘোষণা করে বিসিবি। দুদিন পিছিয়ে যাওয়ায় তাসকিনের চোখে ভাসছিল ২০১৯ সালের কান্নাভেজা ছবি।
বিসিবির প্রকাশিত এক ভিডিওতে এ প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, ‘দলটা যখন পিছিয়েছে, একটা জিনিসই মনে পড়েছে যে, ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে মন খারাপ করে মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে চলে গেছিলাম। আরেকটা বিশ্বকাপে আমার (অপেক্ষায়) দল দিতে দুই দিন পিছিয়েছে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে এটা অনেক সম্মানের। চেষ্টা করব এই সম্মানের মূল্য দেওয়ার।’
ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ সময়ই চোটের সঙ্গে লড়াই করেছেন তাসকিন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পর থেকে চোটের কারণে অনেক ম্যাচ মিস করেছেন ডানহাতি এই পেসার। জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন প্রায় তিন বছরের মতো। চোট কাটিয়ে ফেরার পর থেকে জাতীয় দলের জায়গাটাকে আলাদাভাবে মূল্য দেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে জানান, বাংলাদেশের হয়ে খেলার মতো শান্তি অন্য কিছুতে নেই।
এ প্রসঙ্গে তাসকিনের বক্তব্য, ‘যখন আমি আবার ফিরে এসেছি, এরপর থেকে অনেক মূল্য দিই এই জায়গাকে। আমি যখন আড়াই থেকে তিন বছর বাইরে ছিলাম, তখন বুঝতে পেরেছি, বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার শান্তি অন্য কিছুতে নেই। এটা আসলে মূল্যহীন।’
চোট থেকে সেরে উঠতে এখনও প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে তাসকিনের। ডানহাতি এই পেসার অবশ্য জানিয়েছেন তিনি আগের থেকে ভালো অনুভব করছেন। এদিকে বিশ্বকাপে শান্তর সহ-অধিনায়ক হিসেবে রয়েছেন তিনি। এমন দায়িত্ব পেয়ে শোকরিয়া আদায় করে তাসকিন বলেন, ‘আমি অনেক ভালো অনূভব করছি। আমি দলেও আছি। সহ-অধিনায়কও হয়েছি। শুকরিয়া আল্লাহ্র কাছে।’