গাজী আশরাফ প্রধান নির্বাচক হওয়ায় অবাক সুজন, বললেন নান্নু ভাই দুর্ভাগা
ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম থেকে ||
অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নান্নুর জায়গা প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের ক্রিকেট মেধা নিয়ে প্রশংসা করলেও গাজী আশরাফ প্রধান নির্বাচক হওয়ায় অবাক হয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
২০১১ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচক কমিটিতে দায়িত্ব পেয়েছিলেন নান্নু। ২০১৬ সালে প্রধান নির্বাক ফারুক আহমেদ পদত্যাগ করলে তার স্থলাভিষিক্ত হোন নান্নু। এরপর থেকেই প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন তিনি। তার অধীনে বাংলাদেশ সাফল্য পেলেও সবশেষ কয়েক বছরে ধরে তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকারও হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটার। গত ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দায়িত্বে বহাল ছিলেন তিনি। অবশেষে বিসিবির নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে নান্নুকে সরিয়ে দিয়েছে বিসিবি। নান্নুকে বাদ দেয়ার পর অনেকেই তার পক্ষে কথা বলছেন। দুদিন আগে নান্নুকে বিব্রত করা এবং খারাপ হিসেবে দেখা ব্যক্তিরা এখন ভালো বলায় খানিকটা চটেছেন সুজন। সেই সঙ্গে নান্নুকে দুর্ভাগাও ভাবছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘নান্নু ভাইকে আপনারা এমনভাবে… নান্নু ভাই খুবই দুর্ভাগা। একজন সাবেক অধিনায়ককে যেভাবে মানুষ বিব্রত করেছে, আমি এটা মেনে নিতেই পারি না। ভুল মানুষের থাকতেই পারে। নান্নু ভাই, সুমন সততার সাথে কাজ করেছেন। শুধু উনাদের দোষ দিয়েও লাভ হবে না। আমরা নির্বাচক খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিসিবি কেন উনাদের এতদিন ক্যারি করেছে? যেটা বাস্ত???তা সেটা ভাবতে হবে। নান্নু ভাই দুদিন আগেও খুব খারাপ ছিলেন, আজ তাকে ভালো বলার কারণ আছে বলে মনে করি না। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া দেখে যদি সিলেক্টর তৈরি করি, সিলেক্টর-প্লেয়ারদের গালি দেই!’
একই সময়ে বিসিবির নির্বাচক প্যানেলে এসেছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। মাঝে নারী দলের নির্বাচক থাকলেও লম্বা সময় ধরে আছেন নান্নুর প্যানেলে। বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটারের সঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বাশারও। এটাও খানিকটা অবাক করেছে সুজন। নান্নু না থাকায় বাশারকেই প্রধান নির্বাচক হিসেবে চেয়েছিলেন দুর্দান্ত ঢাকার প্রধান কোচ। তবে বোর্ডের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে চান সুজন।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আশা করেছিলাম সুমনই হবে। কেন হয়েছে, যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা সিদ্ধান্তের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তারাই বলতে পারবেন। আমি অবশ্যই মনে করি সুমন যোগ্য ছিল। ও বাংলাদেশের সফল ক্যাপ্টেন ছিল, সফল ক্রিকেটার ছিল। এত বছর দলের সাথে কাজ করেছে। আমি আশা করেছিলাম নান্নু ভাইকে না রাখা হলে ও-ই প্রধান নির্বাচক হবে। যে সিদ্ধান্ত বোর্ড দিয়েছে, আমাদের সম্মান জানাতে হবে।’
আগের প্যানেল থেকে অবশ্য টিকে গেছেন আব্দুর রাজ্জাক। তার সঙ্গেই নতুন করে যুক্ত হয়েছেন গাজী আশরাফ এবং হান্নান সরকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন গাজী আশরাফ। ছিলেন জাতীয় দলের ম্যানেজার, বিসিবি পরিচালক, গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান এবং বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তার ক্রিকেট মেধা ও বিচক্ষণতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই বলে জানান সুজন।
সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘উনার ক্রিকেট মেধা, বিচক্ষণতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না, দ্বিমত থাকতে পারে না। তবে আমার জন্য খুবই সারপ্রাইজিং ছিল। আমি নামটা শুনিনি। বাতাসে অনেক নামই ভাসছিল, গুঞ্জন ছিল। আমার জন্য অবাক করা কারণ আমি ক্রিকেট অপারেশন্সের ভাইস চেয়ারম্যান অথচ আমি জানিই না। এটা আমার খুব অবাক লাগলো।’