লভ্যাংশ শেয়ারের আগে প্রাপ্য সম্মান চায় কুমিল্লা

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টিকিট, মাঠ ও সম্প্রচার স্বত্ব থেকে আসা রাজস্ব আয়ের ভাগ দিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের! বিপিএলের সবশেষ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এমন দাবি তুলেছিলেন নাফিসা কামাল। নতুন মৌসুম শুরুর আগে আরও একবার এমন দাবির কথা জানিয়েছেন তিনি। সেসবের আগে বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল থেকে প্রাপ্য সম্মান চান নাফিসা।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) কিংবা পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) রাজস্ব বণ্টনের কাঠামো থাকায় টিকিট, মাঠ ও সম্প্রচার স্বত্ব থেকে একটা ভাগ পান ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। যার ফলে বেশি টাকা খরচ করলেও খুব বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হয় না তাদের। বিপিএলে অবশ্য এমন কাঠামো ছিল না কখনই। গত কয়েক বছর ধরে নাফিসা এমন দাবি তুললেও তাতে সায় দেয়নি বিসিবি।
২০২২ সালে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি সুজন বিভিন্ন বাস্তবতার কথা তুলে জানিয়েছিলেন, বিপিএলে লভ্যাংশ শেয়ার করা সম্ভব নয়। এদিকে লভ্যাংশ থেকে ভাগ না পাওয়ায় শুধু মাত্র স্পন্সরদের ওপর নির্ভর করে থাকতে হয় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। যার ফলে এক কিংবা দুই মৌসুম পরই দলগুলো চলে যায়। কারণ এক মৌসুমে লস হলে পরের মৌসুমে তাদের স্পন্সর করতে চায় না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।

তাতে করে বিপিএলে দল চালানো কঠিন হয়ে যায় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। বিপিএল যেন আরও সুন্দর ও স্থায়ী হয় সে কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে লভ্যাংশ ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন নাফিসা। কুমিল্লার মালিকের চাওয়ায় খুব বেশি না দিলেও অল্প কিছু যাতে দেয় বিসিবি। কত শতাংশ দেবে কিংবা কিভাবে দেবে সেই সিদ্ধান্তের ভার বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাঁধেই রাখছেন তিনি। সেই সঙ্গে এমন সিদ্ধান্ত নিলে বিপিএলের সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি উপকৃত হবে বলে জানান কুমিল্লার চেয়ারপার্সন।
এ প্রসঙ্গে নাফিসা বলেন, ‘আমার মনে হয় ২০১৯ সালে আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছিলাম তখন আমাদেরকে বলেছিল এটা নিয়ে কাজ হবে। এত বছর হয়ে গেছে এখনও হয়নি। ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে আমরা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তি করেছি। এই চুক্তিটা যদি আমরা চালিয়ে যেতে চাই তাহলে আমরা চাই যে কিছু শর্তে আমাদের মাঝে ভাগাভাগিতে আসুক। আমরা বলছি না যে আমাদের খুব বড় একটা অঙ্কের ভাগ দিতে হবে। মডেল বা প্রক্রিয়াটা সেভাবে শুরু করে দিলে শুধু আমাদের জন্য না, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য না সব দলই উপকৃত হবে।
‘আমার মনে হয় বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের জন্যও ভালো হবে যদি আমরা সবাই একই টেবিলে বসে কথা বলতে পারি, মতামত আদান-প্রদান করে ভালো একটা সমাধানে আসতে পারি বিপিএলটাকে সুন্দরভাবে বা স্থায়ী করা যায়। শুধু এক-দুই বছরের জন্য যে একেকটা দল আসে আর যায়। দেখুন আমরা লম্বা সময় ধরে আছি। অন্যান্য দল এক-দুই বছর থাকছে চলে যাচ্ছে। রংপুর ব্যাক করেছে, ওরাও ছিল না। সবগুলো দল যেন লম্বা সময় থাকতে পারে এজন্য আমাদের সবাইকে একই টেবিলে বসা উচিত এবং ভাগাভাগিতে আসা উচিত। কিভাবে ভাগাভাগিতে আসবে সেটা গভর্নিং কাউন্সিলই সিদ্ধান্ত নেবে কিন্তু আসা উচিত কোনো একটা ভাগাভাগি।’
একই সময়ে বেশ কয়েকটি লিগ হওয়ায় বিদেশি ক্রিকেটারদের আনতে বড় অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। পুরো মৌসুমে কুমিল্লা কিংবা রংপুুর রাইডার্সের মতো দলগুলোর খরচ হয়ে থাকে প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকা। লভ্যাংশ চাইলেও সেটির আগে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে বসতে চান নাফিসা। চারবারের চ্যাম্পিয়নদের আশা পিএসএল কিংবা আইপিএলে যেমন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা তেমন কিছু যেন এখানেও হয়। এমন সম্মান কাজ করার আগ্রহ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
নাফিসা বলেন, ‘মিডিয়া রাইটস, গ্রাউন্ড রাইটস তারপর হচ্ছে টিকিট প্রাইস এগুলো কিন্তু অনেক পরের কথা। ফোকাস ওইখানে চলে যায় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা দেখে। সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে যেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বসে, একটা মিটিং বা কনভারসেশন হয় ওইটাই আমি চেয়েছিলাম। গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও আমি একই কথা বলেছি।’
‘এই ধারণাটা কিন্তু বাকি টুর্নামেন্টগুলোতেও আছে। আইপিএলেও আছে, পিএসএলেও আছে। পিএসএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে কথা না বলে তারিখ ঘোষণা করতে পারে না, তাদের মতামত না নেয়া পর্যন্ত। আমি মনে করি এটা জাস্ট সম্মান দেখানো। এই সম্মানটা আমরা পেলে কাজ করতে আরও মোটিভেটেড ফিল করবো।’