ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন আফগানিস্তানের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দীর্ঘ সময় পর ইংল্যান্ডের ওয়ানডে একাদশে রুট
৬ ফেব্রুয়ারি ২৫
দিল্লির রানপ্রসবা উইকেটে ২৮৫ রান তাড়ায় করতে খুব বেশি বেগ পাওয়ার কথা ছিল না ইংল্যান্ডের। অথচ সেই ইংল্যান্ড যেতে পারলেন না ধারেকাছে। আফগানিস্তানের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইংলিশ ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। মাঝে হ্যারি ব্রুকের ৬৬ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। জস বাটলারের দল অল আউট হয়েছেন ২১৫ রানে। তাতে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন ঘটালো আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়। এর আগে ২০১৫ সালে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল আফগানরা।
জয়ের জন্য ২৮৫ রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ফজলহক ফারুকির লেগ স্টাম্পের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন জনি বেয়ারস্টো। তবে বলের লাইন মিস করায় তা আঘাত হানে তার প্যাডে। লেগ স্টাম্প দিয়ে প্রায় বেরিয়েই যাচ্ছিল, তবুও বেয়ারস্টোকে আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি বেয়ারস্টোর।
ডেভিড মালানকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন জো রুট। তবে তাদের জুটি বড় করতে দেননি মুজিব উর রহমান। ডানহাতি এই স্পিনারের নিচু হওয়া বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ১১ রান করা রুট। দেখেশুনে খেললেও ইনিংস বড় করতে পারেননি মালান। মোহাম্মদ নবির অফ স্টাম্পের বাইরের টসড আপ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট এক্সট্রা কভারে থাকা ইব্রাহীম জাদরানকে ক্যাচ দিয়েছেন। দারুণ ছন্দে থাকা মালান আউট হয়েছেন ৩২ রানে।

জস বাটলারকে ইনিংস বড় করতে দেননি নাভিন উল হক। ডানহাতি পেসারের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। ব্যাট হাতে এখনও সাফল্য না পাওয়া লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফিরতে হয়ে ১০ রানে। স্যাম কারানকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন নবি। বাঁহাতি এই ব্যাটার করেছেন ১০ রান। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ব্রুক।
আফগানিস্তানকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরিকল্পনা বিসিবির
১৪ মার্চ ২৫
তরুণ এই ব্যাটার থাকায় খানিকটা স্বপ্ন বেঁচে ছিল ইংল্যান্ডের। তবে ৬৬ রান করা ব্রুককে ফিরিয়ে ইংলিশদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন মুজিব। ডানহাতি এই স্পিনারের ক্যারম বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা ইকরাম আলীখিলকে ক্যাচ দিয়েছেন। শেষদিকে আদিল রশিদের ২০ এবং মার্ক উডের ১৮ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের হয়ে মুজিব ও রশিদ তিনটি করেউইকেট নিয়েছেন।
এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইংল্যান্ড। শুরুতে মনে হচ্ছিলে আফগানিস্তানকে দ্রুত আটকে দিয়ে ম্যাচ জিতে নিজেদের রান রেট বাড়িয়ে নিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইংল্যান্ড। যদিও ব্যাটিংয়ের নেমে ইংল্যান্ডের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেননি আফগানিস্তানের দুই ওপেনার।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ইংলিশ বোলারদের চাপে রেখেছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ইব্রাহীম জাদরানকে নিয়ে ওপেনিং জুটিতে তিনি তুলেছেন ১১৪ রান। জাদরান ৪৮ বলে ২৮ রান করে ফিরে গেলে গুরবাজকে সঙ্গ দিতে আসেন রহমত শাহ।
তিনিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। আউট হয়েছেন ৩ রান করে। দুজনকেই ফিরিয়েছেন আদিল রশিদ। এরপর গুরবাজ ৫৭ বলে ৮০ রান করে আউট হলে আফগানিস্তানের বড় রান নিয়ে শঙ্কা জাগে। আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি আউট হয়েছেন ১৯ রান করে।
আর আজমতউল্লাহ ওমরজাই ১৯ ও মোহাম্মদ নবি ৯ রান করে ফিরলে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। সেখান থেকেই দলকে টেনে তুলেছেন রশিদ খান ও ইকরাম আলী খিল। এই দুজনে সপ্তম উইকেটে যোগ করেছেন ৪৩ রান। রশিদ ২২ বলে ২২ করে আউট হলেও ইকরাম খেলেন ৬৬ বলে ৫৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস।
এ ছাড়া মুজিব উর রহমানের ১৬ বলে ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে আফগানরা। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ। ২টি উইকেট পেয়েছেন মার্ক উড। একটি করে উইকেট নিয়েছেন রিস টপলি, জো রুট ও লিয়াম লিভিংস্টোন।