রোহিতের রেকর্ডময় দিনে ৮ উইকেটে জিতল ভারত

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আফগানিস্তানকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরিকল্পনা বিসিবির
১৪ মার্চ ২৫
পৌনে তিনশ রান করার পর আফগানিস্তান ভারতকে একেবারে ছেড়ে কথা বলবে না এমনটা ভাবলেও দোষের কিছু ছিল না। জিততে না পারলেও ভালো একটা লড়াই করবেন রশিদ খান-ফজলহক ফারুকিরা। তবে সবকিছু বিলীন হয়ে গেল এক রোহিত শর্মার কাছে। চার-ছক্কার ফুলঝরিতে আফগান বোলারদের নাভিশ্বাস তুলেছেন ভারতের অধিনায়ক। ছক্কায় ক্রিস গেইল আর সেঞ্চুরিতে ছাড়িয়ে গেছেন শচীন টেন্ডুলকার, কপিল দেবদের। সব মিলিয়ে পুরো ম্যাচ জুড়ে আলো ছড়িয়েছেন কেবল রোহিত। বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙে খেলেছেন ১৩১ রানের ইনিংস, ভারত জয় পেয়েছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। অস্ট্রেলিয়ার পর আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মিশনে সঠিক পথেই এগোচ্ছে ভারত।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৭৩ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম তিন ওভারে ফারুকিদের বিপক্ষে খানিকটা দেখেশুনেই খেলেছেন রোহিত ও ইশান কিশান। পরের ওভার থেকে হাত খুলে খেলতে থাকেন তারা দুজন। ফারুকির লেংথ বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মেরে বিশ্বকাপে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন রোহিত। যেখানে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে যৌথভাবে দ্রুততম অর্থাৎ ১৯ ইনিংসে ১ হাজার রান করেছেন তিনি।
পেছনে ফেলেছেন বিশ্বকাপে ১ হাজার ৬ রান করা সৌরভ গাঙ্গুলিকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাণ্ডব চালানোর ম্যাচে ক্রিস গেইলকেও স্বস্তিতে থাকতে দেননি রোহিত। নাভিন উল হক শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন ভারতের অধিনায়ক। তাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৫৩ ছক্কা মারা গেইলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড দখলে নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা রোহিত তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন ৬৩ বলে। বিশ্বকাপে এটি তার সপ্তম সেঞ্চুরি। যা করতে সময় নিয়েছেন মাত্র ১৯ ইনিংস। বিশ্বকাপে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে পেছনে ফেলেছেন শচীন টেন্ডুলকারকে। ভারতের সাবেক এই ব্যাটার ৪৪ ইনিংস থেকে ৬টি সেঞ্চুরি করেছিলেন। এদিন ছাড়িয়ে গেছেন কপিল দেবকেও। বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল তার। ৭২ বলে সেঞ্চুরি করা কপিল???ে পেছনে ফেলেছেন ৬৩ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে।
ভারতের ৪ নম্বরের জায়গাটা নিজের করে নিতে চান আইয়ার
৩ ঘন্টা আগে
ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করার কীর্তিতে রোহিত পেছনে ফেলেছেন ৩০ সেঞ্চুরি করা রিকি পন্টিংকে। ৩১ সেঞ্চুরি করা রোহিতের সামনে আছেন কেবল বিরাট কোহলি ও টেন্ডুলকার। এদিকে ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরি করার তালিকায় রোহিতের সামনে কেবলই টেন্ডুকার, তার সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪৫টি। রোহিতের এমন ব্যাটিং অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন ইশান। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলে খেলতে থাকেন তিনিও। যদিও তাকে হাফ সেঞ্চুরি পেতে দেননি রশিদ খান। ডানহাতি এই স্পিনারের গুগলিতে এজ হয়ে ইব্রাহীম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ৪৭ রানের ইনিংস খেলে।
ইশান ফিরলেও অবিচল ছিলেন রোহিত। দেড়শ ছোঁয়ার সুযোগও ছিল তার সামনে। তবে ভারতের অধিনায়ককে সেটি করতে দেননি সেই রশিদই। আফগান স্পিনারের ফ্লিপারে হাঁটু গেড়ে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙে রোহিত ফিরেছেন ১৩১ রানের ইনিংস খেলে। শেষ দিকে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন কোহলি। ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া ভারতের সাবেক অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানে। তাকে সঙ্গ দেয়া শ্রেয়াস আইয়ার অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে। আফগানিস্তানের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন রশিদ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহীম জাদরান। তবে তাদের জুটি বেশি বড় করতে দেননি জসপ্রিত বুমরাহ। ডানহাতি এই পেসারের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে থাকা লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ২২ রান করা ইব্রাহীম। তার বিদায়ে ভাঙে গুরবাজের সঙ্গে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার গুরবাজ আউট হয়েছেন পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর। হার্দিক পান্ডিয়ার শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করেছিলেন গুরবাজ।
ডিপ ফাইন লেগে থাকা শার্দুল ঠাকুর দারুণ দক্ষতায় ক্যাচ লুফে নেয়ায় সাজঘরে ফিরে যেতে হয় ২৮ বলে ২১ রান করে। ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি রহমত শাহও। শার্দুলের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েছেন ১৬ রান করা এই ব্যাটার। এরপর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন হাশমতউল্লাহ ও আজমতউল্লাহ। দারুণ ব্যাটিংয়ে তারা দুজন আফগানিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ভারতীয় বোলারদের সামাল দিয়ে ৬২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আজমতউল্লাহ। তাকে সঙ্গ দেয়া হাশমতউল্লাহ পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৫৮ বলে।
তাদের দুজনের ১২১ রানের জুটি ভাঙেন হার্দিক। ডানহাতি এই পেসারের বলে আউট সাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ৬২ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটার। এদিকে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৮৮ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন হাশমতউল্লাহ। শেষ দিকে আর কেউ সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি। মোহাম্মদ নবি ১৯ এবং রশিদ খান ১৬ রান করলে ২৭২ রানে থামে আফগানিস্তানের ইনিংস। ভারতের হয়ে একাই চার উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। এ ছাড়া হার্দিক দুটি, শার্দুল ও কুলদীপ যাদব নিয়েছেন একটি করে উইকেট।