promotional_ad

ইবাদত কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন?

সংগ্রহীত
promotional_ad

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||


আরো পড়ুন

মোহামেডান দলটাও ফরচুন বরিশালের মতো করা হয়েছে: ইবাদত

২৩ ফেব্রুয়ারি ২৫
গণমাধ্যমে কথা বলছেন ইবাদত হোসেন, ক্রিকফ্রেঞ্জি

‘তুই কত দূরে চলে গেলি তোকে হারিয়ে ফেলেছি আমি! এই দুঃখটা হয়ে থাক.. এই দুঃখটা বড় দামী।’ ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানের গাওয়া এই গানের সঙ্গে আপনি ইবাদত হোসেনের মিল খুঁজে পেতে পারেন। স্বপ্নের বিশ্বকাপ শুরু হতে মাসখানেক বাকি। সবকিছু ঠিক থাকলে অনায়াসে ভারতের বিমান ধরতেন। বিশ্বকাপ খেলার জন্য কত স্বপ্নই না দেখেছিলেন ইবাদত।


সেই স্বপ্ন যেন ক্ষণিকের মাঝেই ভেঙে গেল। চোটের কারণে কোন গুরুত্বপূর্ণ পেস বোলারকে ওয়ানডে বিশ্বকাপে না পাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটে এবারই প্রথম নয়। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মর্তুজা, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাসকিন আহমেদরাও যে এই পথেরই পথিক ছিলেন। স্বপ্ন ভঙের কষ্ট কতটা সেটা তাসকিন ও মাশরাফি চেয়ে ভালো আর কে জানেন?


সেটা থেকেই হয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তায় ইবাদতকে সাহস দিয়েছেন তাসকিন। এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম এই ফাস্ট বোলার হয়তো জানেন যে এবাদত কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। বিশ্বকাপে ভালো করতে পারে যার অন্যতম কারণ পেস ইউনিট। যার অন্যতম সদস্য ডানহাতি এই পেসার। যে পেস ইউনিট নিয়ে এতদিন গর্ব করেছেন অ্যালেন ডোনাল্ড।


এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে তাঁর কপালে ছিল চিন্তার ভাঁজও। তাই তো বারবার শরিফুল ইসলামকে সাইড লাইনে নিয়ে বোঝাচ্ছিলেন ডোনাল্ড। কিন্তু শরিফুলকেই কেন বুঝাচ্ছিলেন বাংলাদেশের এই পেস বোলিং কোচ? কারণ এবাদত বাংলাদেশ দলে যে ভুমিকা পালন করে থাকেন তা অনেকক্ষেত্রে শরিফুলও করেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁহাতি এই পেসারের থেকে তা পায়নি বাংলাদেশ।


শুরুর দিকে শরিফুল উইকেট এনে দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু ৩ উইকেট পড়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরার যে কাজটা করতে হতো তা তিনি পারেননি! এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে ইবাদত থাকলে কি দৃশ্যপট ভিন্ন হতে পারত? নিশ্চিত করে বলার উপায় না থাকলেও পরিসংখ্যান অনেকটা পক্ষ নিচ্ছে ইবাদতেরই। কারণ মাঝের ওভারগুলোতে বা নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্যতম সফল বোলার ইবাদত।



promotional_ad

দেশের হয়ে ১২ ওয়ানডে খেলা এই পেসারের উইকেট সংখ্যা ২২। কিন্তু এর ১৬ উইকেটই ইবাদত নিয়েছেন ১০ থেকে ৪০ ওভারের মাঝে। অর্থাৎ প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সফল বোলার ছিলেন ইবাদত। মুস্তাফিজুর রহমান-তাসকিনের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে বহু আগে। কিন্তু এবাদতের কাছাকাছি সময় অভিষেক হওয়া শরিফুল (১৮ ওয়ানডে) ও হাসান মাহমুদ (১৩ ওয়ানডে) খেলেছেন।


আরো পড়ুন

কলকাতার নতুন সহকারী কোচ গিবসন

৮ মার্চ ২৫
বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ওটিস গিবসন, ফাইল ছবি

মাঝের দিকে উইকেট তুলে নেয়ার দিক দিয়ে শরিফুল অবশ্য ইবাদতের থেকেও এগিয়ে। কিন্তু রান খরচে শরিফুল বড় ভাবনার কারণ বাংলাদেশের জন্য। অন্যদিকে হাসান ১৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ৫ ম্যাচে মাঝের ওভারে উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন, নিয়েছেন ১০ উইকেট।


শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাসান একাদশে ছিলেন না। চোটের কারণে ইবাদত দলে নেই। যে কাজটা শরিফুল ইসলাম করতে পারতেন তাকেও সাকিব আল হাসান তুলে দিয়েছিলেন নতুন বল। এরপর ২০ মিনিট পর বোলিংয়ে ফিরিয়েও লাভবান হয়নি বাংলাদেশ। ইবাদতের অভাবটা হয়তো তিনি পূরণ করতে পারেননি। দলে ইবাদতের গুরুত্ব ভালো করেই জানেন চান্ডিকা হাথুরুসিংহে।


দেশ ছাড়ার আগে তাই তো এই পেসারকে ইম্প্যাক্টফুল আখ্যা দিয়ে শনিবার (২৬ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেছিলেন, ‘আপনারা জানেন এবাদত আমাদের ইমপ্যাক্টফুল বোলারদের একজন। আমাদের পাঁচজন ফাস্ট বোলারের মধ্যে যারা শেষ কয়েকটি সিরিজে খেলেছে, তাদের মধ্যে সে দ্রুতগতির বোলারও। তাই এটা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি এবং তার বিকল্প বের করা আমাদের জন্য কঠিন কাজ। আশা করছি সে দ্রুত সেরে উঠবে।’


এদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের না থাকাকে বড় একটা কারণ হিসেবে বলেছিলেন সাকিব। কিন্তু এদের ছাড়াও ইবাদত যে দলের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তা দেশ ছাড়ার আগে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ইবাদতের না থাকাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন সাকিব।


তিনি বলেছিন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবাদত আমাদের সঙ্গে যেতে পারছে না। সে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সে জায়গা থেকে এটা আমাদের জন্য একটা ধাক্কা। তারপরও সে ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি এবং যে ধরনের স্কোয়াড আছে আমরা আশা করি অনেকদূর যেতে পারবো।’



২০১৯ বিশ্বকাপের আগে চোটে পড়েছিলেন তাসকিনও। চোট কাটিয়ে দ্রুত খেলায় ফিরলেও নির্বাচকেরা সন্তুষ্ট ছিলেন না তাঁর ফিটনেসে। এতে বিশ্বকাপেও খেলা হয়নি গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের নেতার। খুব কাছে এসেও যখন এভাবে হতাশ হতে হয়, এর অনুভূতি জানেন তাসকিন। তাই তো বন্ধুকে সাহস দিলেন ‘ফাইটার’ বলে।


সামাজিক মাধ্যমে বন্ধু ইবাদতকে তাসকিন বলেছেন, ‘দোস্ত ইনশা আল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে। অবশ্যই তোরে মিস করব। তুই আমাদের অন্যতম সেরা পেস বোলার। সতীর্থ হিসেবেও তুই দারুণ এক ছেলে। আল্লাহ তোরে দ্রুত সুস্থ করুক এবং আমিও কামনা করছি, তুই দ্রুত সুস্থ হয়ে আসবি। তুই একজন যোদ্ধা। আল্লাহ ভরসা। কথা হবে।’


লন্ডনের ক্রমওয়েল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ইবাদতের। ছুরি-কাঁচির নিচে যাওয়ায় এই পেসারের সেড়ে উঠতে লাগবে অন্তত ৬ মাস। সামাজিক মাধ্যমে দোয়া চেয়ে ২৯ বছর বয়সী পেসার লিখেছিলেন, ‘জীবনে প্রথমবার অপারেশন টেবিলে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ ভরসা।’ মাঠে ফিরতে কত দিন সময় লাগবে তা এখনো জানা যায়নি।


বাংলাদেশ দলে মাঝের ওভারে ইবাদতের বোলিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল তেমনই ছিল কার্যকারী। বিশ্বকাপের মতো আসরে ইবাদতের না থাকা সেদিক থেকে বাংলাদেশ দলের জন্য বড় ধাক্কা। মাঝের ওভারে যে বোলিংটা ইবাদত করতেন, তার বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন। এক বিশ্বকাপে না পারার আক্ষেপ থেকে তাসকিন-মাশরাফিরা সময়ের সঙ্গে হয়েছেন পরিণত।


বাংলাদেশের হয়ে কলার করেছেন বিশ্বমঞ্চে আরও উঁচু। বন্ধু তাসকিনকে দেখে অনুপ্রেরণা নিয়ে আশা করাই যায় ইবাদত নিজেকে একটা কথাই বলবেন, ‘হাল ছেঁড়ো না বন্ধু’। আশা করাই যায় সামনের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আরও পরিণত হয়ে দেশকে বড় কিছুই দেয়ার আশায় টেলিভিশন সেটে বাংলাদেশকে সাহসটা পুরোপুরিই দেবেন ইবাদত।



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball