আক্ষেপের সুরে কোহলি বললেন, তবুও ব্যর্থ অধিনায়ক

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতের ৯৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ডাবল সেঞ্চুরিতে গিলই প্রথম
৩ জুলাই ২৫
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ভারতকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছেন বিরাট কোহলি। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটারের অধীনে দেশে ও বাইরে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে ভারত। সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও একের পর এক সাফল্য এনে দিয়েছেন কোহলি। তবে ভারতকে শিরোপা জেতাতে পারেননি তিনি। ট্রফি জেতাতে না পারায় অনেকে কোহলিকে বিবেচনা করে থাকেন ব্যর্থ অধিনায়ক হিসেবে। এসব নিয়ে নিজের আক্ষেপের কথা শুনিয়েছেন কোহলি নিজেই।
মহেন্দ্র সিং ধোনির বিদায়ের পর ২০১৪ সালে ভারতের টেস্ট দলের নেতৃত্ব পান কোহলি। সাদা পোশাকে ৬৮ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যেখানে ৪০ ম্যাচে জয় পেয়েছে ভারত। শতাংশের হিসেবে কোহলির চেয়ে এগিয়ে কেবল অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ওয়াহ, ডন ব্র্যাডম্যান ও রিকি পন্টিং। এদিকে কোহলির নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয়, আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা এবং ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য দল হয়ে উঠে ভারত।
প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট জিতেছে ভারত। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে ২০ ওভারের ক্রিকেটের নেতৃত্ব ছেড়েছেন কোহলি। ভারতকে ৪৯ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়ে ২৯ জয় এনে দেয়া— ব্যর্থ হয়েছেন প্রথম বিশ্বকাপে। সেবার গ্রুপে তৃতীয় হয়েছিল কোহলির দল। ওয়ানডেতে— তার অধীনে ২০১৪ এশিয়া কাপ, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলে ভারত।

২০১৪ এশিয়া কাপে তৃতীয় হলেও ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফাইনাল খেলেছিল তারা। যদিও পাকিস্তানের কাছে হেরে শিরোপা ছোঁয়া হয়নি তাদের। ২০১৯ বিশ্বকাপে সুযোগ থাকলেও সেমিফাইনাল থেকে হেরে বিদায় নেয় ভারত। সবমিলিয়ে ৯৫ ওয়ানডেতে ৬৫ জয় পায় কোহলির দল। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের পারফরম্যান্সে অন্যান্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকলেও শিরোপা জিততে না পারায় কোহলিকে ব্যর্থ অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
‘গিলকে থামাতে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারেন আর্চার’
৯ ঘন্টা আগে
এ প্রসঙ্গে আক্ষেপ করে কোহলি বলেন, ‘দেখুন, আপনি টুর্নামেন্ট জেতার জন্য খেলছেন। আমি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অধিনায়কত্ব করেছি, ২০১৯ বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করেছি, ২০২১ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নেতৃত্ব দিয়েছি এবং ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করেছি। আমরা ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পৌঁছেছি, ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেছি, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছেছি এবং তাও আমাকে একজন ব্যর্থ অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।’
‘আমি কখনই নিজেকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করিনি। দল হিসেবে এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হিসেবে আমরা যা অর্জন করেছি তা আমার জন্য সবসময় গর্বের বিষয় হয়ে থাকবে। একটি টুর্নামেন্ট একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিন্তু একটি সংস্কৃতি দীর্ঘ সময়ের জন্য এবং এর জন্য আপনার ধারাবাহিকতা প্রয়োজন যার জন্য আপনার টুর্নামেন্ট জেতার চেয়ে বেশি চরিত্রের প্রয়োজন।’
অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জিততে না পারলেও ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির ট্রফি রয়েছে কোহলির। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলে ছিলেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। নিজের ষষ্ঠ বিশ্বকাপে এসে প্রথম ট্রফি জেতা শচীন টেন্ডুলকারের উদাহরণও টেনেছেন কোহলি। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ দলের অংশ হিসেবে থাকায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি।
কোহলি বলেন, ‘আমি খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছি। আমি খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছি। আমি সেই দলের অংশ ছিলাম যেটি পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। আপনি যদি সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন তবে এমন লোক রয়েছে যারা কখনও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। সত্যি কথা বলতে, ২০১১ সালে আমি ভাগ্যবান ছিলাম যে আমি ২০১১ দলের অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম।’
‘এবং যে কারণে আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম তা ছিল আশ্চর্যজনক। আমার একটি ভালো স্কোর ছিল এবং আমি শেষ পর্যন্ত থেকে ছিলাম ও ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। শচীন টেন্ডুলকার তার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলছিলেন এবং এটিই তিনি জিতেছিলেন। আমি প্রথমবারের মতো দলের অংশ হতে পেরেছিলাম এবং আমি বিজয়ী দলের অংশ হয়েছিলাম।’