বিশাল লক্ষ্য হেসে-খেলে তাড়া করল সিলেট

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আইপিএল-পিএসএলের সময় হতে পারে বিপিএল, বাড়তে পারে ভেন্যু
১০ জুলাই ২৫
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়ের শতরানের জুটিতে ম্যাচে ফেরা। শেষ দিকে জাকির হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ক্যামিও ইনিংস। সব মিলিয়ে ১৯৫ রানের লক্ষ্য যেন সহজেই ছুঁয়ে ফেলল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ফরচুন বরিশালকে ৬ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
বড় লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই রান আউটের ফাঁদে পড়েন কলিন অ্যাকারম্যান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই এক রানে ফিরে যান তিনি। শুরুতে উইকেট হারালেও শান্ত-হৃদয়ের ব্যাটে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়ায় সিলেট। পাওয়ার প্লে'তে বাজে ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে ক্যাচ মিস বরিশালকে চিন্তায় ফেলে দেয়।
প্রথম ৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫৪ রান নেয়ার পর আরও দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকে এই জুটি। বরিশালের বোলারদের কোন প্রকার পাত্তা না দিয়ে ১১ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১০০ রা তুলে ফেলেন দুজন। নিজেদের মধ্যে শতরানের জুটি গড়ার সঙ্গে দুজনই হাঁটেন হাফ সেঞ্চুরির পথে।
কিন্তু সাকিবের ওভারে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হৃদয়ের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে ৪৮ রানে রান আউট হন শান্ত। তবে সঙ্গী হারালেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। কিন্তু করিম জানাতকে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন হৃদয়।
১৩৬ রানে হৃদয় ৫৫ রানে ফিরলেও নতুন করে ঝড় তোলেন জাকির। তাকে সঙ্গ দেন মুশফিকও। তাদের ব্যাটে দলীয় ১৫০ পার করে সিলেট। সঙ্গে রান ও বলের ব্যবধানও কমিয়ে আনেন দুজন। তবে ১৮তম ওভারে চতুরাঙ্গা ডি সিলভাকে মারতে গিয়ে ১৭ বলে ৪৩ রানে তাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাকির।
সে সময় মুশফিকের রান ১০ বলে ২২। থিসারা পেরেরা ক্রিজে আসাকালীন সিলেটের প্রয়োজন ছিল ১৬ বলে ২১ রান। তবে সেই ওভারে এক ওয়াইড দিলেও টানা তিনটি ডট দেন চতুরাঙ্গা। শেষ বলে থিসারা এক রান নিলে ১২ বলে সিলেটের প্রয়োজন হয় ১৯ রান।

১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে খালেদ আহমেদ প্রথম বলে দেন ২ রান। দ্বিতীয় বলে তার লেন্থ ডিলেভারিতে ৪ মেরে বসেন থিসারা। তৃতীয় বলে এক নিয়ে মুশফিককে স্ট্রাইক দিলে তিনিও এক রান নিয়ে ফের থিসারাকে স্ট্রাইক দেন।
বিপিএলের জন্য ৬ বিদেশিকে দলে নিয়েছে বরিশাল
২৯ জুন ২৫
পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সিলেটের জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন থিসারা। এরপরের বলে আরেকটি হক্কা মেরে এক ওভার হাতে রেখে ম্যাচ শেষ করে সিলেট। থিসারা ৯ বলে ২০ ও মুশফিক ১১ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন এই ম্যাচে বরিশালকে নেতৃত্ব দেয়া মেহেদি হাসান মিরাজ। তার সিদ্ধান্তে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেন বরিশালের দুই ওপেনার চতুরঙ্গা ডি সিলভা ও এনামুল হক বিজয়। সিলেটের বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করে দ্রুত রান তুলতে থাকেন দুজন।
এই জুটিতে পাওয়ার'তে ৫৪ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে বরিশাল। সপ্তম ওভারে স্কোরবোর্ডে আরও ১৩ রান যোগ করলেও অষ্টম ওভারে এই জুটি ভাঙেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২১ বলে ২৯ রান করে মাশরাফির বলে কলিন অ্যাকারম্যানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
সঙ্গী হারানোর পর চতুরঙ্গাও উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ইমাদ ওয়াসিমের ওভারে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তবে দুই উইকেট হারালেও ক্রিজে নেমে রানের চাকা সচল রাখেন সাকিব আল হাসান ও ইফতিখার আহমেদ।
তাদের ব্যাটে দলীয় ১০০ পার হলেও ১০৮ রানে ইফতিখার বিদায় নেন মাশরাফিকে উইকেট দিয়ে। তবে এরপর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে সিলেটের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন সাকিব। দলীয় ১৩৮ রানে মাহমুদউল্লাহ ১৯ রানে ফিরলেও সাকিব দলকে ১৫০'র ওপর নিয়ে যান।
সঙ্গে তুলে নেন ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি। মাইলফলকে পৌঁছে আরও হাত খুলে খেলতে শুরু করেন সাকিব। মাঝে হায়দার আলি ৬ বলে ৩ করে বিদায় নিলেও করিম জানাতকে নিয়ে রান বাড়াতে থাকেন এই ব্যাটার। তবে দলকে ১৮০'র ঘরে নিয়ে গেলেও শেষ ওভারে মাশরাফির তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন সাকিব।
৩২ বলে ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সাকিব। শেষের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ ক্রিজে রান আউট হন পঞ্চম বলে। মাশরাফির সরাসরি থ্রো-তে স্টাম্প ভাঙে তার। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বরিশালকে ১৯০'র ঘরে নিয়ে যান করিম। ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে ৪৮ রান খরচ করেন মাশরাফি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ১৯৪/৭ (২০ ওভার) (সাকিব ৬৭, চতুরঙ্গা ৩৬) (মাশরাফি ৩/৪৮)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৯৬/৪ (২০ ওভার) (হৃদয় ৫৫, শান্ত ৪৮, জাকির ৪৩, মুশফিক ২৩*, থিসারা ২০*) (চতুরাঙ্গা ১/১৪)