অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপেও স্পিনে বাজি আফগানিস্তানের

ছবি: সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
আম্পায়ার বিসমিল্লাহ জান শিনওয়ারি আর নেই
৮ জুলাই ২৫
গত রবিবার থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বিশ্ব সেরা হওয়ার এই লড়াইয়ে সুপার টুয়েলভে ইতোমধ্যেই জায়গা নিশ্চিত করেছে আট দল। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে এই আট দলের সম্ভবনা নিয়ে ধারবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। পঞ্চম পর্বে থাকন আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে কাটা-ছেঁড়া।
গত কয়েক বছরে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে উন্নতি করা দলগুলোর একটি আফগানিস্তান। যুদ্ধ বিধস্ত এই দেশটিতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে অনেক শঙ্কা আছে, নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ক্রিকেট খেলতে হয় তাদের। তারপরও তাদের পারফরম্যান্সে এর বিন্দু মাত্র প্রভাব নেই। ইতোমধ্যেই বড় দলগুলোর বিপক্ষেও ভালো ক্রিকেট খেলে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছে আফগানিস্তান। বিশেষ করে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে।
সর্বশেষ এশিয়া কাপেও ভালো ক্রিকেট খেলেছে মোহাম্মদ নবির দল। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শুরু করেছিল আফগানরা। পরের ম্যাচেও নিজেদের সেই পারফরম্যান্স ধরে রেখেছিল আফগানরা। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল লঙ্কানরা। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের পেছনে বড় কারণ তাদের স্পিন বোলিং ইউনিট।
তবে আসন্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে স্পিনাররা বাড়তি কোনো সুবিধা পাবেন না। তাই এই বিশ্বকাপে বড় চ্যালেঞ্জ থাকছে রশিদ খান-মুজিবউর রহমানদের সামনে। তবে তাদের ব্যাটিং ইউনিটও যথেষ্ট শক্তিশালী। রহমানউল্লাহ গুরবাজ-নাজিবুল্লাহ জাদরানরা নিজেদের দিনে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তাই সবমিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের চমক দেখানোর সম্ভাবনা আছে। যেকোনো বড় দলকে হারিয়ে আসর জমিয়ে তুলতে পারে আফগানরা।

আফগানিস্তানের ওপেনিংয়ে দেখা যাবে গুরবাজ-হজরতউল্লাহ জাজাইকে। যেখানে বড় ভরসার নাম গুরবাজ। এই ওপেনারের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ আশাজাগানিয়া। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ৮৪ রান করেছিলেন এই ওপেনার। বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে দলকে ভালো শুরু এনে দেয়ার দায়িত্ব থাকবে গুরবাজের ওপর। তাছাড়া জাজাইও বড় শট খেলতে পারেন।
ইতিহাস গড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতালি
১১ জুলাই ২৫
তিন নম্বরে খেলবেন ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করতে পারেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তাছাড়া বড় শট খেলায়ও দক্ষ তিনি। সবমিলিয়ে দলের প্রয়োজনে যেমন ব্যাটিং দরকার, সেটাই করতে পারেন তিনি। হাতে প্রচুর শটও আছে। সবমিলিয়ে ওয়ান ডাউনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তার ওপর আস্থা রাখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
চার নম্বরে খেলবেন নজিবুল্লাহ। পাওয়ায়র হিটিংয়ের জন্য ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বেশ কদর আছে তার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও ইতোমধ্যেই নিজেকে প্রামণ করেছেন এই ব্যাটার। তার সাম্প্রতিক ফর্মও তার পক্ষে কথা বলে। সবমিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আফগানদের ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন নাজিবুল্লাহ।
লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলবেন দারউইস রাসুলি, মোহাম্মদ নবি এবং উসমান ঘনি। এই তিন জনের মধ্যে যেকোনো দুইজন একাদশে সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে আফগানিস্তান অধিনায়কের সঙ্গে একাদশে সুযোগ পেতে পারেন রাসুলি। তবে প্রতিপক্ষ এবং উইকেট বিবেচনায় সুযোগ মিলতে পারে ঘনিরও। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি এই দুই ব্যাটারের কেউই।
আফগানিস্তানের সবেচেয়ে বড় শক্তির জায়গা তাদের স্পিন বোলিং ইউনিট। যেখানে নেতৃত্ব দেবেন রশিদ খান। এই লেগ স্পিনার বর্তমান সময়ে বিশ্বের সেরা স্পিনারদের একজন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার বেশ কদর আছে। রশিদকে সঙ্গ দেবেন মুজিবুর রহমান। এই স্পিনারও সাদা বলে বরাবরই দুর্দান্ত। পাশাপাশি নবিও বল হাতে বেশ কার্যকরী হয়ে উঠতে পারেন।
স্পিনের পাশাপাশি আফগানদের পেস ইউনিটও বেশ শক্তিশালী। ফজল হক ফারুকি নতুন বলে দুর্দান্ত বোলিং করেন। এই বিভাগে আফগানদের নেতাও তিনি। তাই চাপ সামলে বিশ্বমঞ্চে পারফর্ম করার চ্যালেঞ্জ থাকছে তার জন্য। পাশাপাশি নাবিন উল হকও বেশ কার্যকরী হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে।
আফগানিস্তান দল: মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), নাজিবুল্লাহ জাদরান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), আজমতউল্লাহ ওমরজাই, দারউইশ রাসুলি, ফরিদ আহমেদ মালিক, ফজল হক ফারুকি, হজরতউল্লাহ জাজাই, ইব্রাহিম জাদরান, মুজিব উর রহমান, নাভিন উল হক, কাইস আহমেদ, রশিদ খান, সালিম সাফি
এবং উসমান ঘনি।
স্ট্যান্ড বাই: আফসার জাজাই, শরাফউদ্দিন আশরাফ, রহমত শাহ ও গুলবাদিন নাইব।