ঘরের মাঠে ট্রফি ধরে রাখার মিশন অস্ট্রেলিয়ার

ছবি: সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
ফাইনালে হারের ক্ষত ভুলে সামনে এগোতে চান হেড
১৬ ঘন্টা আগে
দিন কয়েক পরই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বিশ্ব সেরা হওয়ার এই লড়াইয়ে সুপার টুয়েলভে ইতোমধ্যেই জায়গা নিশ্চিত করেছে আট দল। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে এই আট দলের সম্ভবনা নিয়ে ধারবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। শুরুর দিনে থাকছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে কাটা-ছেঁড়া।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এশিয়ার দলগুলোর জন্য বাড়তি পাওয়া ছিল আরব আমিরাতের কন্ডিশন আর উইকেট। তাই শিরোপা জয়ের দৌঁড়ে উপমহাদেশের দলগুলো কিছুটা হলেও এগিয়ে ছিল। তবে ভারত-পাকিস্তানের মতো দলগুলোকে টেক্কা দিয়ে মরুর বুকে বিশ্ব সেরার মুকুট পড়েছিল অজিরা। এবার ঘরের মাঠে তাদের বিশ্বকাপ ট্রফি ধরে রাখার মিশন।
সামর্থ্য আর সাম্প্রতিক ফর্ম মিলিয়ে এবারও ট্রফির বড় দাবিদার অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ঘরের মাঠের সুবিধাও পাবে অজিরা। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে তাদের স্কোয়াডও বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়ার্নার-অ্যারন ফিঞ্চদের সঙ্গে আছেন টিম ডেভিড কিংবা জশ ইংলিসের মতো তরুণ ক্রিকেটাররা। তবে এবারের বিশ্বকাপে অজিদের ভুগাতে পারে তাদের মিডল অর্ডার। স্টিভেন স্মিথ-গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সাম্প্রতিক ফর্ম দলের জন্য চিন্তার কারণ হতে পারে।
অবশ্য বোলিং ইউনিট নিয়ে বেশ ফুরফুরে থাকবে অজি টিম ম্যানেজমেন্ট। তাদের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন পেসাররা। কন্ডিশন বিবেচনায় তাদের বড় শক্তির জায়গাও পেস বোলিং ইউনিট। যেখানে মিচেল স্টার্কের নেতৃত্বে অভিজ্ঞ প্যাট কামিন্সের সঙ্গে থাকবেন জশ হ্যাজেলউড। তাছাড়া মিচেল মার্শ এবং মার্কাস স্টইনিনের মিডিয়াম পেস ফিঞ্চকে বাড়তি সুযোগ দেবে।

গত কয়েক বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার বেশ শক্তিশালী। বিশেষ করে ওপেনিং। আসন্ন এই বিশ্বকাপেও ওপেনিংয়ে দেখা যাবে ডেভিড ওয়ার্নার এবং অ্যারন ফিঞ্চকে। সর্বশেষ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন ওয়ার্নার। ওপেনিংয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দেয়ার দায়িত্বটা এবারও থাকবে ওয়ার্নারের কাঁধেই। তার সাম্প্রতিক ফর্ম আর অভিজ্ঞতা, সব মিলিয়ে প্রতিপক্ষের জন্য বড় হুমকি হতে পারেন এই ওপেনার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট হাতে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
এক বছর ঝুলিয়ে রাখার পর ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপের প্রাইজমানি দিচ্ছে ওমান
১৫ ঘন্টা আগে
তবে ফিঞ্চের সাম্প্রতিক ফর্ম তার পক্ষে কথা বলছে না। ক্যারিয়ারের গোধূলী লগ্নে এসে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন এই ওপেনার। মূলত তার অভিজ্ঞতার ওপরই ভরসা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। বড় মঞ্চে নিশ্চয়ই সেই ভরসার প্রতিদান দিতে চাইবেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। এই ওপেনিং জুটির জন্য সম্ভবত এটাই হতে যাচ্ছে শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আসর শেষে এই ফরম্যাটের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারেন ওয়ার্নার-ফিঞ্চ জুটি।
তিন নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পজিশন সামলাবেন মিচেল মার্শ। গত বিশ্বকাপে দলে অন্যতম সেরা রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। তার সাম্প্রতিক ফর্মও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক এক মার্শকেই দেখা যেতে পারে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের এই বিশ্বমঞ্চে। ব্যাটের পাশাপাশি মিডিয়াম পেসেও কার্যকরী হয়ে ওঠতে পারেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
চার এবং পাঁচ নম্বর পজিশনে খেলবেন যথাক্রমে স্মিথ এবং ম্যাক্সওয়েল। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পারফরম্যান্স প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলেও তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। ছয় নম্বরে দেখা যাবে ম্যাথু ওয়েডকে। গত আসরে তার পারফরম্যান্স ছিল মনে রাখার মতো। বিশেষ করে সেমি-ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ফাইনালের টিকিট কেটেছিল অস্ট্রেলিয়া।
লোয়ার মিডল অর্ডারে টিম ডেভিড এবং স্টইনিসের মধ্যে যেকোনো একজন একাদশে সুযোগ পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে অলরাউন্ডার হওয়ায় অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন স্টইনিস। তাছাড়া তার অভিজ্ঞতাও তাকে এগিয়ে রাখবে। তবে কন্ডিশন এবং প্রতিপক্ষ বিবেচনায় একাদশে সুযোগ পেতে পারেন ডেভিড। কারণ তার পাওয়ার হিটিং দক্ষতা যেকোনো দলের জন্যই বাড়তি পাওয়া।
পেস বান্ধব কন্ডিশন বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে স্পিনাররা প্রধান্য পাননি। তবে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন অ্যাস্টন অ্যাগার এবং অ্যাডাম জাম্পা। এই দুই জনের মধ্যে উইকেট টেকিং দক্ষতার জন্য এগিয়ে থাকবেন জাম্পা। একাদশে একজন স্পিনার খেলার সুযোগ পেলে এই লেগ স্পিনারই খেলবেন।
অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে বেশ কয়েক জন বিশ্বমানের পেসার থাকলেও অভিজ্ঞতার দিকে থেকে সবেচেয়ে এগিয়ে আছেন স্টার্ক। দলের বোলিং ইউনিটের নেতৃত্বও থাকবে তার কাঁধেই। তাছাড়া কামিন্স এবং হ্যাজেলউডও বেশ কার্যকরী হতে পারেন। বিশেষ করে হ্যাজেলউড। আসরের সেরা উইকেট শিকারীরদের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেন তিনি।
ঘরের মাঠ,শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ পাশাপাশি স্কোয়াডে আছে বেশ কয়েক জন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সবমিলিয়ে এবারের আসরে দারুণ সম্ভাবনা আছে অস্ট্রেলিয়ার।
অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াড: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, টিম ডেভিড, জশ হ্যাজেলউড, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভ স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টইনিস, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার এবং অ্যাডাম জাম্পা।