'পৃথিবী এগিয়ে গেছে কিন্তু বাংলাদেশ পেছনেই রয়ে গেছে'

ছবি: সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন না থাকলে ক্রিকেটটাই খেলব না: সোহান
১ ঘন্টা আগে
চলমান এশিয়া কাপে বাংলাদেশ যে দল নিয়ে খেলেছে, ক্রিকেটারদের ম্যাচ সংখ্যার বিচারে সেই দল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে অভিজ্ঞ। অথচ আইসিসির সহযোগী দেশ হংকংকে বাদ দিয়ে পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে তলানিতে থাকবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরে ইতোমধ্যেই বিদায় নিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। টাইগারদের এমন বাজে পারফরম্যান্সে হতাশ হয়েছেন আকাশ চোপড়া।
বাংলাদেশ দলে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত খেলছেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। কয়েক বছর আগেও এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের তালিকায় ছিলেন পাঁচজন। সাকিব, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এক সঙ্গে বলা হতো বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চপান্ডব।
বড় আসর হিসেব করলে, সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা একসঙ্গে খেলেছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে সেই আসরে বড় লক্ষ্য নিয়ে গেলেও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। অথচ দলে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থাকায় এই আসরকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল ভক্ত-সমর্থকদের।
এরপর ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে বাংলাদেশ। এই আসরে অবশ্য ছিলেন না তামিম এবং মাশরাফি। তবে বাকি তিনজন দলে থাকলেও একমাত্র সাকিব ছাড়া বাকিরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। বরং গ্রুপ পর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও হেরেছিল টাইগাররা। আর মূল পর্বে কোনো ম্যাচেই জয়ের দেখা পায়নি দল।

এই আসরের পর আরও একটি বড় টুর্নামেন্ট চলমান এশিয়া কাপ। এখানেও অনেক প্রত্যাশা নিয়ে পা রেখেছিল সাকিবের দল। অভিজ্ঞতার বিচারে টুর্নামেন্টের বাকি সব দলের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কমপক্ষে ১০০ ম্যাচ খেলেছেন, এবারের এশিয়া কাপে এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা মাত্র ৫ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশেরই ৩ জন।
সাকিব, মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহ ছাড়া এই তালিকায় আছেন ভারতের বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। বাংলাদেশের একমাত্র সাকিব ছাড়া বাকি দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স ছিল দৃষ্টিকটু। তাদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বেশ ভুগেছে দল। অথচ রোহিত এবং কোহলি ঠিকই দলকে সামনে থেকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
সর্বশেষ এই বড় আসরগুলোর পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে দল হিসেবে বাংলাদেশকে সফল বলার সুযোগ নেই। তবে ব্যাক্তিগত পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে সাকিবকে সফলদের কাতারেই রাখতে হবে। আর বাকিরা নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। আর তাদের এমন পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছে দলের উপরও।
অথচ এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা দলে থাকায় বড় আসরগুলোতে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল সবার। তাদের হাত ধরে বাংলাদেশ অনেকটা পথ পাড়ি দেবে এমনটাই ছিল চাওয়া কিন্তু ব্যর্থতাই সঙ্গী হয়েছে টাইগারদের। ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়ার মতে, পৃথিবী অনেকটা এগিয়ে গেলেও, পেছনেই পড়ে আছে বাংলাদেশ।
আকাশ বলেন, 'হায় বাংলাদেশ! কিছু একটাতো জেতো! আমি ব্রডকাস্টারে অনেক কথা বলতে পারি না, কিন্তু নিজের চ্যানেলে বলতে পারি। কিছুতো জিতে দেখাও। এই দলে অনেক বড় বড় খেলোয়াড় আছে। দশ বছর আগে তারা বলতো, এই খেলোয়াড়েরাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে, তারা এখনও বলে তারা (খেলোয়াড়েরা) আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। পৃথিবী এগিয়ে গেছে কিন্তু তারা (বাংলাদেশ দল) পেছনেই রয়ে গেছে।'
চলমান এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল। তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও শেষের ভুলে হেরেছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে প্রয়োজন ছিল ২৫ রান, হাতে ছিল ২ উইকেট। এমনকি উইকেটে স্বীকৃত কোনো ব্যাটারও ছিলেন না। তারপরও হেরেছে বাংলাদেশ।
টাইগারদের এমন হারের পর ক্রিকফ্রেঞ্জির এক ফেইসবুক লাইভে দেখা যায়, কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে এক ক্ষুদে ভক্ত। এ প্রসঙ্গে আকাশ বলেন 'আমি একটা ছোট বাচ্চার চোখে পানি দেখেছি, এরা জন্ম থেকেই দলকে হারতেই দেখেছে, তার আবেগও মারা যাবে। দয়া করে (হাত জোড় করে) কিছুতো জিতো। এই ছোট বাচ্চার জন্য জিতো।'