বোল্টে শুরু, বোল্টেই শেষ

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটু আশার আলো দেখিয়েছিলেন। উইকেটে টিকে থাকার সঙ্গে ধীরগতিতে রান তুললেও ধৈর্যের পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত তিনিও সতীর্থদের দেখানো পথেই হেঁটেছেন। তবে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে স্কোরবোর্ডে লেখে গিয়েছেন দলের সর্বোচ্চ দলের সর্বোচ্চ রান (২৭) সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের নাম।

মাহমুদউল্লাহ ছাড়া মুশফিকুর রহিম করেছেন ২৩ রান। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে মাত্র ১৩১ রানে। ট্রেন্ট বোল্ট একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। জেমস নিশাম এবং মিচেল স্যান্টনারের শিকার দুটি। আর একটি উইকেট নিয়েছেন ম্যাট হেনরি। 

ট্রেন্ট বোল্টের গতি, সুইং এবং বাউন্স শুরু থেকেই চাপে রেখেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ৪ ওভারে খানিকটা সামাল দিলেও পঞ্চম ওভারে এই পেসারের সুইং এবং বাউন্স সামলাতে পারেননি তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লে'তে ২ উইকেট হারালেও অপরপ্রান্তে লড়তে থাকা লিটন দাসকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান নিশাম।

ইনিংসের প্রথম বলেই বোল্টের সুইং সামলে উঠতে পারেননি তামিম। অল্পের জন্য অফ স্টাম্পের একটু বাইরে ইয়র্কার লেন্থে পরা বল চলে যায় উইকেট রক্ষক টম ল্যাথামের হাতে। তৃতীয় বলে এই পেসারের বাউন্সারে আপার কাটে ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন ওয়ানডে দলপতি। 

দ্বিতীয় ওভারে ম্যাট হেনরিকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছিলেন তামিম। অন্যপ্রান্তে লিটন দাসও বোল্ট-হেনরিদের সামাল দিচ্ছিলেন। কিন্তু পঞ্চম ওভারে সেই বোল্টের আরেকটি ভেতরে আসা বল বুঝতেই পারলেন না তামিম।

শট খেলার আগেই বল গিয়ে আঘাত করে প্যাডে। আম্পায়ার সময় না নিয়েই জানিয়ে দিলেন সিদ্ধান্ত। ১৩ রানেই সাজঘরে তামিম। দুই বল পর আবারও এই পেসারের বাউন্সারে বিপদে বাংলাদেশের আরেক ব্যাটসম্যান। আপার কাটের মতো শট খেলতে গিয়ে কভারে ডেভন কনওয়ের হাতে ০ রানে তালুবন্দি সৌম্য সরকার।

দুই উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশ আরও বিপদে পরতে পারত! কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে স্লিপে লিটনের ক্যাচ নিতে পারেননি ড্যারেল মিচেল। পাওয়ার প্লে শেষে নিশামের ক্রস সিমে ফেলা বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। ৩৬ বলে ১৯ রানে ফেরেন এই ওপেনারও।

শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে ধুকছিলেন মুশফিকুর রহিম। বেশ কয়েকবার ব্যাটের কাছ দিয়ে বল উইকেটের পেছনেও গিয়েছে। তারপরও ধৈর্য ধরে লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। ৩৯তম বলে ফ্রি হিটে নিশামকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক কিছুর আশ্বাসও দিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।

এরপর আরেকটি বাউন্ডারি পেলেও এই নিশামের ওভারেই কাট করতে গিয়ে গাপটিলকে ক্যাচ দিয়ে বসেন মুশফিক। ৬৯ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ আরও বিপদে পরে মোহাম্মদ মিঠুনের রান আউটে। নিশামের ওভারে মাহমুদউল্লাহর সোজা খেলা শট এই বোলারের আঙ্গুল ছুঁয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে।

২৭ বলে ৯ রান করে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন মিঠুন। সে সময় দলীয় স্কোর মাত্র ৭২। তাঁর বিদায়ে মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। মিচেল স্যান্টনারের বল সরে খেলতে গিয়ে লেগ স্টাম্পে বোল্ড হন তিনি।

ক্রিজে নেমে দ্বিতীয় বলে স্যান্টনারকে ছক্কা হাঁকালেও শেখ মেহেদী ফেরেন ১৪ রানে এই স্পিনারকে উইকেট বিলিয়েই। একপ্রান্তে তাসকিন আহমেদকে রেখে মাহমুদউল্লাহ লড়াই চালিয়ে গেলেই ম্যাট হেনরিকে পুল করতে গিয়ে ৫৪ বল ২৭ রানে স্যান্টারের হাতে ধরা পরেন তিনি।

শেষ দুই ব্যাটসম্যান হিসেবে হাসান মাহমুদ এবং তাসকিনকে আউট করে বাংলাদেশকে ১৩১ রানেই গুটিয়ে দেন বোল্ট। ১ রানে অপরাজিত থাকেন মুস্তাফিজ। ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন বাঁহাতি এই পেসার। বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুর দুই উইকেট এবং শেষের দুটি উইকেট নিয়েছেন তিনি।   

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪১.৫ ওভারে ১৩১ অল আউট (মাহমুদউল্লাহ ২৭ মুশফিক ২৩) (নিশাম ২/২৭, বোল্ট ২/২৭)

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: টম ল্যাথাম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), মার্টিন গাপটিল, ডেভন কনওয়ে, হেনরি নিকলস, উইল ইয়ং, জিমি নিশাম, ড্যারিল মিচেল, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, কাইল জেমিসন ও ট্রেন্ট বোল্ট।