খোলা আকাশ চান জাহানারা

ছবি: ফাইল ফটো

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
'থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগৎটাকে' - ছোটবেলার পাঠ্য বই থেকে তুলে আনা লাইনটি এখন বড়বেলায়ও অনেকে সারাক্ষণ আওড়ে যাচ্ছেন। ছোটবেলায় অভিভাবকদের কঠোর অনুশাসনে থাকা অনেকের ঘর থেকে বেরিয়ে জগৎ দেখা হত না। তবে বড়বেলায়ও জগত দেখতে না পারার বেদনায় অনেককে পোড়াচ্ছে করোনা।
ঘরে থাকার একঘেয়ে জীবন আর ভালো লাগছে না অনেকের, ভালো লাগছে না চার দেয়ালে বন্দী হয়ে থাকতেও। বদ্ধ ঘর থেকে বেরিয়ে যারা এখন জগতের খোলা হাওয়া গায়ে মাখতে চাইছেন, তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের সুদর্শনা নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমও। এই পেস বোলার ঘরে থাকতে থাকতে এতটাই 'বোরড' হয়ে গেছেন যে বাইরে বের হওয়ার জন্য তরও সইছে না আর।
বাসায় থেকে ফিটনেস নিয়ে কাজ করার একঘেয়েমি কাটাতে এখন খোলা আকাশের নীচে অনুশীলন করতে চান অস্ট্রেলিয়ায় সবশেষ নারী টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপে গিয়ে 'ক্রাশ' বনে যাওয়া তরুণী।

গত ১৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সকল ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ। পুরুষদের মতো নারী ক্রিকেটাররাও করোনার সংক্রমণ এড়াতে যে যার ঠিকানায় বন্দী তখন থেকেই। তবে পরিবারের সান্নিধ্যে থাকার সৌভাগ্য ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গেছেন জাহানারা।
তার গ্রামের বাড়ী খুলনায়। সেখানেই থাকেন পরিবারের অন্যরা। চাইলে হয়ত চলে যেতেই পারতেন। কিন্তু যাত্রাপথে তিনি না আবার করোনা বয়ে নিয়ে গিয়ে অন্যদেরও আক্রান্ত করেন, এই সতর্কতা থেকে ঢাকার বাসাতেই নিজেকে আটকে রাখেন জাহানারা।
শরীর আটকে রাখা গেলেও মন বের হতে চাইত। সেই মনকেও বশ মানানো জাহানারা সেই মার্চ থেকেই তার ঢাকার বাসায় একা। একাকীত্বের সময়টায় নিজেকে তবু ব্যস্ততায় ডুবিয়ে রেখে সব ভুলে থাকার চেষ্টা করেছেন।
রান্না-বান্না থেকে শুরু করে ঘরের কাজ তো করেছেনই, দামি ট্রেডমিল কিনে নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টাও কম করেননি। ওয়েট বার কিনে করেছেন অন্য অনেক এক্সারসাইজও। কিন্তু শেষপর্যন্ত সবকিছু ওই বদ্ধ ঘরেই।
জাহানারার তাই আর ভালো লাগছে না। ঠিক করেছেন দীর্ঘদিন পর এই ঈদে খুলনায় যাবেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে ঢাকায় ফিরে মাঠেও যেতে শুরু করবেন।
তার এখন খোলা আকাশ চাই, 'আশা করি, ঈদের পর থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। তখন হয়ত আমরা মাঠেও যেতে পারবো। ট্রেডমিলে দৌড়ানো আর মাঠে দৌড়ানোর মধ্যে অনেক ফারাক। আমি খোলা আকাশের নীচে দৌড়াতে চাই।
ফিটনেসে যত কাজ আছে, আকাশ দেখেই করতে চাই। আর স্কিল নিয়ে কাজও তো খোলা আকাশের নীচেই করতে হবে।'