বীথির স্বপ্নের বিনামূল্যের একাডেমি

ছবি: ফাইল ফটো

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
বিনামূল্যের ক্রিকেট একাডেমিও যে বিশ্বমানের খেলোয়াড় বের করে আনতে জানে, এর বিরল প্রমাণ আছে বাংলাদেশেই। কোনো বিনিময় মূল্য ছাড়াই এখনো ক্রিকেট শিক্ষা দিয়ে যাওয়া ওয়াহিদুল গণির 'অঙ্কুর' একাডেমি ফুটিয়েছে মোহাম্মদ আশরাফুল নামের ফুল। গলি থেকে রাজপথে তুলে দিয়েছে শাহরিয়ার নাফীসকেও।
উদাহরণ যখন আছেই, তখন কে বলতে পারে যে অনেক দূরের মফস্বলের আরেকটি বিনামূল্যের একাডেমিও দারুণ ক্রিকেটার তৈরি করার সাফল্যে রঙিন হয়ে উঠবে না?
সেই স্বপ্ন লালন করেই বিনা পয়সায় ক্রিকেটার গড়ার কারিগর হতে চাইছেন আরিফা জাহান বীথি। খুব নামী কেউ নন এই সাবেক নারী ক্রিকেটার। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়েও খেলেননি কখনো। সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা বলতে মেয়েদের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ পর্যন্ত।

ব্যাটিংয়ে দক্ষ এই নারীর ক্যারিয়ার লম্বা হয়নি। দ্রুতই সাবেকের খাতায় নাম লেখানোর পর ট্রেনার হওয়ার ট্রেনিং নিয়েছেন। সঙ্গে শুরু করেছেন কোচিংও। নিজে যা হতে পারেননি, অন্য কারো পূর্ণতা দিয়ে সেই অপূর্ণতা ঢাকতেই হয়তো বীথি হাত দিয়েছেন ক্রিকেটার গড়ার কাজে।
রাজধানী থেকে অনেক দূরে নিজেকে নিবিষ্টও রেখেছেন সেই কাজে। রংপুর জেলার নূরপুরের বাসিন্দা নিজের শহরেই খুলেছেন স্বপ্নের এক ক্রিকেট একাডেমি। যেটি নিয়ে শুরু থেকেই গর্ব করে বলতে পারেন, 'বাংলাদেশে শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য এটিই একমাত্র ক্রিকেট একাডেমি। আর কোথাও এরকম নেই। তাছাড়া কোনো ফি বা টাকাও নেই না আমি। একদম বিনামূল্যের একাডেমি।'
মফস্বলে মেয়েদের ক্রিকেটে আকৃষ্ট করাও কম কঠিন নয়। তারওপর কোনো মেয়ে খেলতে চাইলেও অভিভাবক দেবে, নেই সেই নিশ্চয়তাও।
শুরুর সেই চ্যালেন্জও জিতেছেন বীথি। না হলে তার একাডেমিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এত হয় কী করে, 'করোনায় তো আপাতত সবই বন্ধ। শেষ কার্যক্রম যখন চালিয়েছি, তখনো আমার একাডেমিতে মেয়ে ছিল আড়াইশোর মতো।'
এত মেয়েকে মাঠে আনতে তাকে কত ছোটাছুটিও করতে হয়েছে, 'আ??ি স্কুলে স্কুলে গিয়ে ক্যাম্পেইন করেছি। এটা কাজে দিয়েছে।' এখন খুদে মেয়ে ক্রিকেটারদের নিয়ে ছুটছেন নিজের তো বটেই, ওদেরও স্বপ্নপূরণে। একাডেমির নাম বোধহয় এজন্যই দিয়েছেন, 'উইমেনস ড্রিমার্স'।