কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের ক্রিকেট অ্যানালিস্ট হয়ে ওঠার গল্প

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ক্রিকেটারের শক্তি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করাই তাঁর কাজ। সেটা তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে। বাংলাদেশ দলের জন্য এই কাজটাই করে থাকেন শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। কম্পিউটার ইঞ্জিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করলেও ক্রিকেট অ্যানালিস্টের কাজটাই বেছে নিয়েছেন এই ভারতীয়।দক্ষিণ ভারতের এই তরুণ এক সময় চেন্নাইয়ের বিভাগীয় দলের ক্রিকেট খেলেছেন। ব্যাট-বলের প্রতি ভালোবাসা ছাড়তে পারেননি। তাই নিজেকে এই পেশায় পারদর্শী করে তুলেছেন শ্রীনি।
ইঞ্জিনিয়ারিং গুণ ব্যবহার করে ক্রিকেটারদের শক্তি, দুর্বলতা ও সমাধান খুঁজে বের করে কোচ ও অধিনায়ককে সাহায্য করে থাকেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাথে আছেন এক বছরের ওপর। একই সাথে কাজ করেছেন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, রংপুর রাইডার্স, আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ও পিএসএলে মুলতান সুলতানের অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।
নামের পাশে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি থাকায় বিদেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ ছিল শ্রীনির। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার কারণে সব পেছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর তথ্য ও বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে পরিকল্পনা সাজিয়েই যে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ।

এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাশরাফি বিন মর্তুজার অমন উড়ন্ত ক্যাচ নেওয়ার পেছনের নায়ক এই ভারতীয়। এছড়া একই টুর্নামেন্টে ইমরুল কায়েসকে দেশ থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসার পরামর্শটাও তারই দেয়া। পড়াশোনার কারণে ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারেননি।
ঘটনাচক্রে সুযোগ মেলে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে কাজ করার। এরপর আর পেছনে ফেরে তাকাতে হয়নি এই ভারতীয়কে। ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার গল্প শোনাতে গিয়ে শ্রীনি বলেন, 'আমি বিভাগীয় দলের হয়ে খেলছিলাম। আমার এক কোচ এসে বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার পর তোমার পরিকল্পনা কী? আমি বলেছি আমার কোন ধরনের ভবিষ্যৎ ভাবনা নেই।'
'যাই হোক না কেনো, আমি স্পোর্টস সম্পর্কিত কোন জায়গায় কাজ করতে চাই। আমি শুধু ক্রিকেটে নয়, অন্য স্পোর্টসেও নজর ছিল আমার। তখন তিনি আমাকে বলেছেন, 'এখানে এক কোম্পানি (অ্যানালিস্ট কোম্পানি) আছে। তুমি সেখানে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছ না কেনো?' তখন আমি সাক্ষাৎকার দিলাম এবং সবকিছু জায়গামত বসে গেল। এরপরই আমি কাজ শুরু করি।' আরও যোগ করেন এই ভারতীয়।
ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা ছিল শ্রীনির। এই ভারতীয় মনে করেন, কোনো কিছুকে ভালোবাসলে সেটার পিছনে ১০-১২ ঘন্টা সময় দিলেও খারাপ লাগে না। নিজের কাজের ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা আছে তাঁর। সব সময়েই চেষ্টা করেন সাহায্য করতে, যা তাকে আনন্দ দেয়।
শ্রীনি আরও বলেন, 'ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল অনেক, ভালোবাসাটাও এখান থেকে শুরু। একবার কোনো কিছুকে ভালোবেসে ফেললে সেটার পেছনে ১০-১২ ঘন্টা সময় দিতে কিছুই মনে হয় না। আমার কারণে কোনো ক্রিকেটার সাহায্য পেলে তা আমাকে আনন্দ দেয়।'
'কোন দিক দিয়ে আমি কাওকে সাহায্য করতে পারি সেটাও বুঝতে হয় আমাকে। আমি এখনও শিখছি, নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করি। বিপিএল, আইপিএলে কাজ করেছি। চেষ্টা থাকলে অকশন বা প্লেয়ার্স ড্রাফটে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সর্বোচ্চটা দিয়ে সাহায্য করা।'
সূত্রঃ ডেইলি সান