পরাধীনতার শেকলটাও দেখিয়ে গেলেন মাশরাফি
ছবি: ছবিঃ- বিসিবি

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
অধিনায়ক হিসেবে সুদীর্ঘ এক যাত্রা মাশরাফি বিন মর্তুজার। সে যাত্রায় তিনি দৃশ্যমান রাজা হলেও অদৃশ্যে অনেক সময়ই তার মাথায় মুকুট শোভা পায়নি। বরং রাজা হয়েও কখনো কখনো আজ্ঞাবহ প্রজার ভূমিকাই পালন করে যেতে হয়েছে তাকে। বৃহষ্পতিবার অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার দিনে তার অনেক কথাতেই পরাধীনতার সেই শেকলটাও কিছুটা প্রকাশ্য করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুক্রবারের শেষ ওয়ানডে দিয়ে অধিনায়কত্বের দীর্ঘ যাত্রার সমাপ্তি টানলেও আরো কিছুদিন খেলোয়াড় হিসেবেই চালিয়ে যেতে চান তিনি। স্বাভাবিক কারণেই নিজের ভেতরে চেপে রাখা অনেক কথা এখনই প্রকাশ করে দেওয়ার অবস্থায় নেই।

তবু বৃহষ্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে এমন অনেক কথাই বলেছেন, যা থেকে অধিনায়ক হিসেবে তার পরাধীনতাও আঁচ করা যায়। করাচীতে ১ এপ্রিলের ওয়ানডে সামনে রেখে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেকে প্রস্তুতি ম্যাচ বানিয়ে ফেলা এবং পাকিস্তানে যাবেন না বলে এই ম্যাচে মুশফিকুর রহিমকে বিশ্রামে রাখার নীতি কতটা যৌক্তিক, সে প্রশ্নেই বেরিয়ে এসেছে অধিনায়ক মাশরাফির অসহায়ত্ব।
বুঝিয়ে দিয়েছেন কোনো কোনো লড়াইয়ে তিনি এক হার মানা সেনাপতিও। এমনিতে সতীর্থদের আগলে রাখায় তার প্রানান্ত চেষ্টার কথাই শোনা গিয়েছে বেশিরভাগ সময়। এবার সেই চেষ্টায় তার ব্যর্থতার গল্পও উঠে এলো খানিকটা।
মুশফিক প্রসঙ্গে বললেন, ‘দেখুন, এগুলো কিন্তু ছোটখাটো টেকনিক্যাল সিদ্ধান্ত। এগুলো আসলে অধিনায়কও দিতে পারে না।’
একাদশ ভাবনায় দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে রাখার সিদ্ধান্ত যখন তিনি দিতে পারেন না, তখন আর কিভাবে স্বাধীন আর সার্বভৌম হন অধিনায়ক? তবে বিদায়বেলায় এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে যে তিনি সন্তুষ্ট নন এবং যে প্রক্রিয়ায় মুশফিককে বিশ্রামে পাঠানো হচ্ছে, তা নিয়ে নাখোশ হওয়ার ব্যাপারটিও চাপা রাখতে পারেননি মাশরাফি, ‘যে পরিমাণ রান সে করেছে এবং বাংলাদেশের জেতার পেছনে যেরকম অবদান রেখে এসেছে, ভাবতে হবে এগুলোও। যে ছেলেটি পারফরম করে আসছে এবং ১২-১৩ বছর বাংলাদেশের হয়ে খেলেছে, সে যাতে মানসিকভাবে চাপের মধ্যে না থাকে, খেয়াল রাখতে হবে সেটিও।’
অধিনায়ক হিসেবে তা নিশ্চিত করতে চেয়েও না পারাটা যেন মাশরাফির পরাধীনতার গল্পও তুলে ধরছে!