promotional_ad

মুমিনুল কি ঘরের মাঠের ‘বাঘ’ হয়েই থাকবেন?

ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি
promotional_ad

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||


মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৭১ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল হক।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর অন্তর্জাল দুনিয়ায় ক্ষণিকের আলাপে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ককে বড় ইনিংস খেলার জন্য শুভকামনা জানাই।
অপরপ্রান্ত থেকে দ্রুতই উত্তর আসে, ‘এইগুলো বাদ দেন। দলকে ভালো করতে হবে। দল হিসেবে বড় স্কোর করতে হবে। টেস্ট দলটা গড়ে তুলতে হবে।’
এটুকুতেই স্পষ্ট ব্যক্তিগত মাইলফলকের চিন্তায় নিমগ্ন নন মুমিনুল। তার ছোট কাঁধে এখন বড় ভার। দেশের দায়িত্ব, দলের দায়িত্ব। অধিনায়ক হিসেবে তাই ব্যক্তিগত অর্জন ভাবাচ্ছে না মুমিনুলকে। তার চোখ এখন সুদূরে, দলীয় সাফল্যের দুয়ারে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের তৃতীয় দিনের প্রথম ঘন্টায় টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুমিনুল। মুশফিকের সঙ্গে যুগলবন্দিতে এগিয়ে নিয়ে গেছেন দলের রানের চাকা। লাঞ্চের পর এসে ১৩২ রানে থামেন তিনি। এনলোভুর বলে কট এন্ড বোল্ড হয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। যদিও অনায়সেই ইনিংসটা আরও বড় হতে পারতো। অন্তত উইকেটে তার জমাট ব্যাটিং সেই আভাসই দিয়েছিল।
ভারত সফর থেকেই টেস্টের নেতৃত্ব পেয়েছেন মুমিনুল। অধিনায়ক হওয়ার পরপরই রানের খরায় পড়ে যায় তার ব্যাট। অথচ অভিষেকের পর থেকে সাদা পোশাকে তার ব্যাটেই আস্থা খুঁজে বেড়ায় বাংলাদেশ। তামিম, মুশফিক, সাকিবরা থাকলেও অনেকের বিচারে টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। ইন্দোরে দুই ইনিংসে ৪৪ রান করার পর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে গোলাপী বলে ‘পেয়ার’ হজম করতে হয় তাকে।
এদিকে টানা ইনিংস হারে বিপর্যস্ত ছিল বাংলাদেশ দলও। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুই ইনিংসে ৭১ রান করেন। যা দলের ইনিংস হার এড়াতে যথেষ্ট ছিল না।
দল ও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের বিষম চাপ নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন মুমিনুল। ১৪ ইনিংস ও ৭ টেস্ট পর সোমবার সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মাসের হিসেবে তা ১৫ মাস পর। এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে চল্লিশের নিচে নেমে যাওয়া ২৮ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড়টা আবার চল্লিশের ঘরে ফিরেছে।

সাদা পোশাকে সেঞ্চুরির দিক থেকে তামিমের পাশে নাম লেখালেন মুমিনুল। ৯টি করে সেঞ্চুরি আছে তাদের। বাংলাদেশের হয়ে যেটি সর্বোচ্চ। অবশ্য ম্যাচের সংখ্যায় মুমিনুলই এগিয়ে। তামিম ৬০ ও মুমিনুল ৪০ ম্যাচ খেলেছেন।
মুমিনুলের ৯টি সেঞ্চুরিই দেশের মাটিতে। হোম কন্ডিশনেই ক্যারিয়ারের শুরুর ৯টি সেঞ্চুরি করার নজির কমই আছে। ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান অ্যালান লাম্বের এই রেকর্ড রয়েছে। ক্যারিয়ারের ১৪ সেঞ্চুরির প্রথম ৯টিই তিনি ইংল্যান্ডের মাটিতে করেছিলেন। ৮০-৯০’র দশকে খেলেছিলেন তিনি।  
দেশের মাটিতে একের পর এক সেঞ্চুরি মুমিনুলকে টেস্টে ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে তার ব্যাট যেন নিজের ছায়া হয়েই থাকে। যেখানে নেই কোনো সেঞ্চুরি। ৬টি হাফ সেঞ্চুরি আছে, সর্বোচ্চ ইনিংস ৭৭। ১৭ ম্যাচের ৩৩ ইনিংসে ব্যাট করে ৫ বার ‘ডাক’ মেরেছেন, রান করেছেন ৭৩৬। ব্যাটিং গড় ২২.৩০।
ঘরের মাঠে ২৩ ম্যাচের ৪১ ইনিংসে ব্যাট করেছেন, তিনবার ডাক মেরেছেন। ৯টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ৭টি হাফ সেঞ্চুরি। রান করেছে ২ হাজার ১২৪। ব্যাটিং গড় বেশ ঈর্ষন্বীয়, ৫৭.৪০। সর্বোচ্চ ইনিংস ১৮১ রান।
দেশ ও বিদেশে পারফরম্যান্সের এই ব্যবধান ঘুচাতে পারছেন না মুমিনুল। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, মুমিনুল কি ঘরের বাঘ হয়েই থাকবেন?
বিদেশে সেঞ্চুরিটা এই বাঁহাতির জন্যও আরাধ্য। গত দুই বছরে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে বলেছেন, সেই খরা ঘুচানোর চিন্তা তার মাথায়ও আছে। শুধু উপযুক্ত মঞ্চে জ্বলে উঠার সময়ের অপেক্ষায় তার ব্যাট।
তবে টেস্টে এক দারুণ কীর্তি রয়েছে মুমিনুলের। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচের চার ইনিংসেই সেঞ্চুরি রয়েছে তার। যেখানে মুশফিক, আশরাফুল তার সঙ্গী। ম্যাচের তিন ইনিংসে সেঞ্চুরি আছে তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, ইমরুল কায়েস ও হাবিবুল বাশার সুমনের।
টেস্ট ম্যাচে কখনো প্রথম, কখনো দ্বিতীয়, কখনো তৃতীয় বা চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সেটি দলের প্রথম বা দ্বিতীয় বিবেচিত হয়েছে।
মুমিনুল ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৩টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ২টি, তৃতীয় ইনিংসে ৩টি, চতুর্থ ইনিংসে ১টি সেঞ্চুরি করেছেন। মুশফিক প্রথম ইনিংসে ২টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৩টি, তৃতীয় ইনিংসে ১টি, চতুর্থ ইনিংসে ১টি সেঞ্চুরি করেছেন। আশরাফুল প্রথম ইনিংসে ১টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ২টি, তৃতীয় ইনিংসে ২টি, চতুর্থ ইনিংসে ১টি সেঞ্চুরি করেছেন।
অবশ্য মুমিনুলকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে মানেন মুশফিক। এখন বিদেশের মাটিতে একটি সেঞ্চুরি তাকে আরও বড় মঞ্চে নিয়ে যেতে পারে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের মাটিতেই আক্ষেপ ঘুচাতে পারবেন মুমিনুল। করাচিতে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় খেলতে যাবে বাংলাদেশ তার নেতৃত্বেই।


promotional_ad

 



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball