মুশফিকের প্রতি বিসিবির দ্বৈত নীতি

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টে খেলতে রাজি হননি মুশফিকুর রহিম। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান পাকিস্তান সফরে না গেলেও তাঁর সতীর্থরা ঠিকই নির্বিঘ্নে খেলে এসেছে। তাই মুশফিকের এই সিদ্ধান্ত নিতান্তই অমূলক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ক্রিকেট প্রেমিদের কাছে।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও মুশফিকের সিদ্ধান্তে নাখোশ ছিল। তাঁর মতো অভিজ্ঞ একজন ব্যাটসম্যানের গুরুত্ব পাকিস্তানের বিপক্ষে যে কতটা তার চাক্ষুস প্রমাণ পাওয়া গেছে রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টেই। আজহার আলীদের কাছে মাত্র চার দিনেই ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট হেরে দেশে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
মুশফিক থাকলে ফলাফলের তারতম্য হতো কিনা সেটি ক্রিকেট বিধাতাই হয়তো বলতে পারবেন, কিন্তু অন্তত মানসিক দিক থেকে এগিয়ে থাকতে পারতেন মুমিনুলরা এতে সন্দেহ নেই। মুশফিকের অনুপস্থিতি যে বিসিবি ভালোভাবে নেয়নি এরই প্রমাণ মেলে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথায়।

মুশফিক এখন আর অটোম্যাটিক চয়েজ নন বলে ইঙ্গিত দেন তিনি কিছুদিন আগে। আসন্ন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে ফিরতে হলে মুশফিককে ফিটনেস পরীক্ষা দিয়ে ফিরতে হবে বলে জানিয়েছিলেন নান্নু। তিনি বলেন, 'মুশফিক ইনজুরিতে। ফিটনেস দিয়েই তাকে আসতে হবে। শুধু সেটাই নয়, মুশফিক পাকিস্তানে না যাওয়াতে কম্বিনেশনে ধারাবাহিকতা থাকে না। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুশফিককে রাখা নাও হতে পারে।'
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো পাকিস্তান সফর থেকে সরে দাঁড়ানো মুশফিকের প্রতি যতোই নাখোশ হোক বিসিবি, অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে ছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নামতে আদতে রাজি নয় বিসিবি। ক্রিকফ্রেঞ্জিকে এরই মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তা।
বাংলা ভাষায় একটি প্রবাদ বাক্য আছে- যত গর্জে তত বর্ষে না। মুশফিকের ক্ষেত্রে বিসিবি যেরূপ আচরণ করছে তাতে এই প্রবাদ বাক্যটি একেবারে খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। অর্থাৎ সংবাদ মাধ্যমে মুশফিকের প্রতি কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত সেটি বজায় রাখতে পারছে না বিসিবি।
বোর্ডের সেই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যেভাবে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছি তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে চাই না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাই আমরা সেরা স্কোয়াডই নির্বাচন করবো।'
ইনজুরির কারণে এরই মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন পেসার আল-আমিন হোসেন। সম্প্রতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারও থাকছেন না এই ম্যাচে। তাই দেশের মাটিতে টেস্ট জিততে হলে মুশফিককে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করবেন নির্বাচকেরা এটা সহজেই অনুমেয়। ফলে মুশফিকের ক্ষেত্রে ক্রিকেট বোর্ডের দ্বৈত নীতিই বজায় থাকছে বলা চলে।