প্রস্তুতি নিলেও যা, না নিলেও তাই!

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
এ যেন এক গভীর সংকট! বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি নেওয়া আর না নেওয়ার মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্যই চোখে পড়ছে না। অন্তত গত কিছুদিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের পারফরম্যান্স বলছে সে কথাই।
গত নভেম্বরে ভারতে টেস্ট সফরের কথাই ধরুন। বিশেষ কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়ে ঢুকেছিল তারা। ইন্দোর ও কলকাতায় খেলা দুই টেস্টেই ভরাডুবি হয়েছিল। ভারতের ফাস্ট বোলারদের সামনে ব্যাটসম্যানদের অসহায় আÍসমর্পণের পর দেশে ফিরে ক্রিকেটাররা ডুবে গিয়েছিলেন বিপিএলে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আসরের পরপরই ছিল পাকিস্তানে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বিপিএল দিয়ে দারুণ প্রস্তুতি সারার পর মনে হয়েছিল এই সিরিজটি ভালোই যাবে। সবারই খেলার মধ্যে থাকার সুফল মিলবে। কিন্তু মিলেছে কোথায়?

বরং উল্টোটিই ঘটেছে। প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়ার পরও প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে এমন পারফরম্যান্স ছিল যে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেই ফেলেছিলেন, ‘খেলা দেখে বাংলাদেশ দল মনে হয়নি।’ এবার ৭ ফেব্র“য়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া রাওয়ালপিন্ডি টেস্টেও তাদের খেলা দেখে বাংলাদেশ দল মনে হবে, সে নিশ্চয়তাও তো নেই।
কারণ এবার প্রস্তুতি বলতে বিসিএলের প্রথম ম্যাচটি শুধু খেলে যাওয়া। দলের কর্তা হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও প্রস্তুতি নিয়ে খুব ভরসা পাচ্ছেন না। তিনিও আদর্শ প্রস্তুতি ছাড়াই টেস্ট খেলতে যেতে হচ্ছে বলে আগাম ‘ঢাল’ তৈরি করে যেতে চেয়েছেন যেন!
ভারত সফরে গিয়ে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই সোজা টেস্ট খেলতে নেমে পড়তে হয়েছিল ডমিঙ্গোর দলকে। ভারতের কন্ডিশন অনেকটা বাংলাদেশের কাছাকাছি হলেও সেখানে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা জরুরী ছিল বলে ব্যর্থতার পরে মন্তব্য করেছিলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান।
তখন প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই দলকে নামিয়ে দেওয়ার ভুলের দায় বিসিবিরও। কিন্তু এবার পাকিস্তানে যাওয়ার সময়ও সেই একই ভুল করল দেশীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। ভারতের মতো পাকিস্তানেও নেই কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ। যদিও এক্ষেত্রে এই যুক্তি দেখানো হতে পারে যে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পাকিস্তানে সংক্ষিপ্ত সফর নিশ্চিত করতে গিয়েই প্রস্তুতি ম্যাচ রাখা হয়নি।
কিন্তু সেটি না রাখায় যে আবার হেড কোচ আগে থেকেই বলে রাখলেন এমন কথা, ‘প্রস্তুতি মোটেও ভালো হয়নি। একটি টেস্টের অন্তত ৭-৮ দিন আগে আমাদের সেখানে (ম্যাচের ভেন্যু) থাকা দরকার। দরকার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা, দিন-দুয়েক অনুশীলন করা। কিন্তু সেই প্রস্তুতি আমাদের হচ্ছে না।
কিছু করারও নেই। ছেলেরা এখানেই খেলেছে, অনুশীলন করেছে। আমরা রাওয়ালপিন্ডিই পৌঁছাবো বুধবার সকালে। অনুশীলন বৃহষ্পতিবার। আর শুক্রবার তো খেলাই শুরু। কাজেই প্রস্তুতি ভালো হয়েছে বলার সুযোগ নেই।’
অর্থাৎ আরেকটি ব্যর্থতার অজুহাত তৈরি। অবশ্য প্রস্তুতি নিয়েও তো কাজের কাজ খুব কিছু হয়নি। বিপিএলের পর পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি সফর এর সবচেয়ে জ্বলন্ত উদাহরণ। এবার প্রস্তুতি ছাড়া তবে কি ভারত সফরের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তিই হতে চলেছে?