লর্ডস ফিরে এলো অকল্যান্ডে

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
গত বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভারের রোমাঞ্চে শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। লর্ডসে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় সেই ফাইনালে সুপার ওভারও টাই হওয়ায় মূলত পুরো খেলায় বাউন্ডারি বেশি থাকায় চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন ঘটালো দুই দল। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে টাই করে ইংল্যান্ড। নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচটি সুপার ওভার পর্যন্ত গড়ায়।
সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক মরগান এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। কিউই অধিনায়ক টিম সাউদির করা সেই ওভারের প্রথম বল থেকে এক রান নেন বেয়ারস্টো।
এরপর দ্বিতীয় বলে বিশাল একটি ছক্কা মারেন মরগান। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে বেয়ারস্টোকে স্ট্রাইক দেন ইংলিশ দলপতি। স্ট্রাইকে এসেই সাউদির করা চতুর্থ বলটি উড়িয়ে মাঠ ছাড়া করেন বেয়ারস্টো। শেষ দুই বলে যথাক্রমে ২ এবং এক রান করে নেন তারা। ফলে সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের রান দাঁড়ায় ১৭।
নতুন লক্ষ্যে ব্যাট হাতে ক্রিজে নামেন মার্টিন গাপটিল এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টিম সেইফার্ট। ক্রিস জর্ডানের করা সুপারের ওভারের প্রথম বলটি থেকে ২ রান নেন সেইফার্ট। এরপরের বলটি ওয়াইড হওয়ায় অতিরিক্ত একটি রান পায় কিউইরা।

জর্ডানের পরের বলটি মি?? অফ অঞ্চল দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু তৃতীয় এবং চতুর্থ বলটিতে বাজিমাত করেন ৩১ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার জর্ডান। তৃতীয় বলটি ডট দেয়ার পর ঠিক পরের বলে সেইফার্টকে মরগানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন তিনি।
পাঁচ নম্বর বলটি থেকে মাত্র এক রান নিতে পারেন ওপেনার গাপটিল। ফলে স্ট্রাইক পান নতুন ক্রিজে আসা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তার আগেই অবশ্য জয় নিশ্চিত করে ফেলে ইংল্যান্ড। কারণ শেষ বলে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। শেষ বলটি থেকেও কোনো রান নিতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। অবশেষে সুপার ওভারের রোমাঞ্চে আবারো নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জিতলো সফরকারী ইংল্যান্ড।
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ২-২ এ সমতা থাকায় আজকের ম্যাচটি সিরিজ নির্ধারণী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে। যদিও শুরু থেকেই বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ায় ম্যাচটিতে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের পরিধি ১১ ওভারে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন আম্পায়াররা।
এরপর টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগান। খেলতে নেমে নির্ধারিত ১১ ওভারে মার্টিন গাপটিল, টিম সেইফার্ট এবং কলিন মুনরোর ব্যাটিং ঝড়ে ৫ উইকেটে ১৪৬ রানের পাহাড় গড়ে নিউজিল্যান্ড।
৫টি ছক্কা এবং ৩টি চারের সাহায্যে ২০ বলে ৫০ রান করেন গাপটিল। ১৬ বলে ৩৯ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস খেলে দলকে বড় পুঁজি এনে দিতে সাহায্য করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান সেইফার্ট। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৫টি ছক্কা এবং একটি চার। অপরদিকে ৪টি ছক্কা এবং ২টি চারের মাধ্যমে ২১ বলে ৪৬ রান আসে মুনরোর ব্যাট থেকে।
ইংল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নেন স্যাম কারান, টম কারান, আদিল রশিদ ও সাকিব মাহমুদ। নিউজিল্যান্ডের দেয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্যাটসম্যানদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে টাই করে ইংল্যান্ড। ১৮ বলে ৫টি ছক্কা এবং ২টি চারের সাহায্যে ৪৭ রান করেন ওপেনার বেয়ারস্টো। এছাড়া ১১ বলে ২৪ রান করেন স্যাম কারান। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল স্যান্টনার এবং জিমি নিশাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
নিউজিল্যান্ডঃ ১৪৬/৫ (১১ ওভার) (গাপটিল ৫০, মুনরো ৪৬; সাকিব ১/২০, টম কারান ১/৩০)
ইংল্যান্ডঃ ১৪৬/৭ (১১ ওভার) (বেয়ারস্টো ৪৭, স্যাম কারান ২৪; স্যান্টনার ২/২০, নিশাম ২/২৫)
ফলাফলঃ সুপার ওভারে বিজয়ী ইংল্যান্ড
ম্যাচ সেরাঃ জনি বেয়ারস্টো