টেস্ট ক্রিকেটে এখন যুবক বাংলাদেশ

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
১০ নভেম্বর, বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি ঐতিহাসিক দিন। ২০০০ সালের এই দিনে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। দেখতে দেখতে টেস্ট আঙিনার ছোট্ট বাংলাদেশ আজ পূরণ করেছে ১৯টি বছর। কিশোর বয়স শেষে টেস্ট ক্রিকেটে এখন যুবক বাংলাদেশ।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। অভিষেক ম্যাচে নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের নেতৃত্বে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামে দলটি। সেই ম্যাচে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত খারাপভাবেই হেরেছিল স্বাগতিকদের।
১৯৯৯ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটের গতিপথ বদলে যায়। সে বছরই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। অভিষেক বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের আগমনী বার্তা ঘোষণা করে তারা।
২০০০ সালের ২৬ জুন আইসিসি বাংলাদেশকে টেস্ট মর্যাদা প্রদান করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এরপর এখন পর্যন্ত স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ১০ অধিনায়কের অধীনে ১১৫ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ দল।

টেস্ট ক্রিকেটে ১৯ বছর পূর্ণ করা দল হিসেবে যে উন্নতি বা সাফল্যের প্রয়োজন ছিলো, তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ টেস্ট দল। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ কয়েকবছর ধরেই উদীয়মান শক্তিতে পরিণত হয়েছে দলটি। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট এখনও শিক্ষানবিশ বাংলাদেশ।
দীর্ঘ এই পথচলায় ১১৫টি টেস্ট খেলা বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ১৩টি ম্যাচে, হেরেছে ৮৬টিতে, আর ড্র-তে শেষ হয়েছে ১৬ ম্যাচ। জয় পাওয়া ১৩ টেস্টের মধ্যে ৯টিই দেশের মাটিতে। অভিষেক টেস্টের পাঁচ বছর পর চট্টগ্রামের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেয়েছিল দলটি।
দ্বিতীয় জয়ের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় আরও চার বছর। সবশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে জয় পায় বাংলাদেশ। দলটির ১৩ জয়ের ছয়টি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, চারটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আর একটি করে জয় ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৬৩৮, ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ওই ইনিংসেই দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। সাদা পোশাকে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। গেল বছর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ৪৩ রানে।
বাংলাদেশের টেস্ট পথচলাকে দুই ভাগে ভাগ করলে দুই চিত্র ভেসে ওঠে। প্রথম ১২ বছর অর্থাৎ এক যুগে ৭৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ, ড্র হয়েছিল ৭টি ম্যাচ। অন্যদিকে পরের ৭ বছরে খেলা ৪২ ম্যাচে জয় এসেছে ১০টিতে এবং ড্র হয় ৯টি ম্যাচ।
আশা-নিরাশার এই পথচলায় বাংলাদেশের হয়ে অন্তত একটি হলেও টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এমন ক্রিকেটার আছেন ৯৫জন। মাত্র একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৯ জন ক্রিকেটার।
বাংলাদশের টেস্ট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম ইকবাল। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে চার হাজারি ক্লাবে নাম লেখান তিনি। ৫৮ ম্যাচ খেলা এই বাঁহাতি ওপেনারের নামের পাশে রয়েছে ৪৩২৭ রান, যেখানে ৯টি সেঞ্চুরি আছে তাঁর।
বাংলাদশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সাকিব আল হাসানের। তিনি বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে নিয়েছেন দুই শতাধিক উইকেট। ৫৬ টেস্ট খেলা বাঁহাতি স্পিনারের নামের পাশে রয়েছে ২১০টি উইকেট।