শুভ জন্মদিন মাশরাফি
ছবি: ছবিঃ বিসিবি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাফল্যের রূপকার মাশরাফি বিন মুর্তজার আজ ৩৬তম জন্মদিন। ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইলে জন্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। কাকতালীয়ভাবে ২০১৪ সালের একইদিনে (৫ অক্টোবর) জন্ম নেন মাশরাফির দ্বিতীয় সন্তান সাহিল মুর্তজা। ক্রিকফ্রেঞ্জির পক্ষ থেকে মাশরাফি এবং সাহিল দুইজনকেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল এবং অন্যতম সেরা অধিনায়ক বলা হয় মাশরাফি। এ দেশের ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মাশরাফি। এরপর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। দেশের ক্রিকেটের অনেক প্রথমের সাক্ষী তিনি।
২০১৫ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল এবং ২০১৬ এবং ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলেছিল মাশরাফির দল।

চলতি বছরের শুরুতে প্রথমবারের মতো কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা বাংলাদেশ ঘরে তোলে মাশরাফির অধীনে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলগুলোকে তাঁর অধীনেই হারায় বাংলাদেশ।
মাশরাফির অধীনে ৮৫টি ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ দল, যেখানে জিতেছে ৪৭টিতে। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অধিনায়কদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টিতে ২৮ ম্যাচে ১০ জয় নিয়েও বাংলাদেশের অন্যান্য অধিনায়কের চেয়ে সফল তিনি।
এ ছাড়া ২০০৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর প্রথম অধিনায়কত্বের ম্যাচেও জিতেছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচের পর ইনজুরির কারণে আর সাদা পোশাকে খেলতে পারেননি দেশের ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অধিনায়ক।
নেতৃত্বের পাশাপাশি ক্রিকেটার হিসেবেও বেশ সফল ছিলেন মাশরাফি। এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনি। ২১৭ ম্যাচে ২৬৬ উইকেট রয়েছে তাঁর নামের পাশে। যেখানে ৫ উইকেট নিয়েছেন একবার, ৪ উইকেট সাতবার। এ ছাড়া ব্যাট হাতে করেছেন ১৭৮৬ রান।
প্রায় দশ বছর আগে, ২০০৯ সালে সাদা পোশাকে শেষ টেস্ট খেললেও এখন পর্যন্ত দেশের পেসারদের মধ্যে মাশরাফিই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। লাল বলের ক্রিকেটে ৩৬ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৭৮টি উইকেট। এই ফরম্যাটে তাঁর রান ৭৯৭। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৫৪ ম্যাচে ৪২ উইকেটের মালিক তিনি, রান করেন ৩৭৭।
২০১৯ সালের বিশ্বকাপে মাশরাফির অধীনে ৯ ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হলেও ইতিহাস থেকে মুছে যায়নি গত পাঁচ বছরে তাঁর অধীনে অসাধারণ সব সাফল্যের গল্প।
১৮ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সেবা দিয়ে আসা মাশরাফি চলে এসেছেন ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে। ২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মাশরাফি যে কোনো সময় সবধরনের ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দেবেন। তবে অবসর নিলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতির সিঁড়ি তৈরি করা মাশরাফি হয়ে থাকবেন ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।